আসসালামু আলাইকুম। আমি প্রশ্ন বলার আগে আমার পরিবার নিয়ে বিস্তারিত বলে নিচ্ছি, যাতে করে বুঝতে সুবিধা হয়।
আমার পরিবারে আমি,আমার স্বামী, শশুর,শাশুড়ী এবং ননদ(বিবাহিত)।শশুর ও শাশুড়ী দুজনই চাকুরীজীবি। বর্তমানে আমি স্বামি নিয়ে আলাদা থাকি তার কাজের সূত্রে।আমার শশুর শাশুড়ী অনেক কৃপণ,সব খরচ বাদে ৩০ হাজারের মতো এক্সট্রা টাকা থাকে মাসে,এর পর ও সব কিছুতে হিসেব নেন। ননদের খরচ ও ননদ বহন করে।একসাথে থাকাকালীন আমার স্বামী ২২ হাজার টাকা দিত তারপর ও খাবার ছাড়া আমাদের যাবতীয় জিনিস আলাদা কিনতে হতো।আর খাবারেও অনেক হিসেব করে তারা।শুধু টাকার হিসেব নেয়।এমনকি অসুস্থ থাকাকালীন একটা ডিম পর্যন্ত আলাদা এনে খেতে হয়েছে এজন্য ও বিচার বসছে।যেহেতু শাশুড়ি ভালো ইনকাম করেন এজন্য পরিবারে শাশুড়ীর কথাই সব।শশুর ও তালে তাল দেন।তারা সব কিছু নিয়ে অশান্তি করেন।অসুস্থ হলে টাকা ভাঙার ভয়ে বলেন ডাক্তার দেখানো লাগে না,তাহলে আরো রোগ বাড়ে।আমার স্বামীর বেতন ৩৫ হাজার টাকা ছিলো।সেখানে তার যাতায়াত খরচ সহ ৫/৬ হাজার যেত।আমার টিউশন ফি +ডাক্তার খরচ+তাদের ২২ হাজার টাকা। তাদের ২২ হাজার টাকা দেয়ার পর ও আমাদের বাকি সব কিছু আলাদা খরচ করতে হয়, এজন্য আমার স্বামী পরিবারকে বলেছেন তার বেতন ৩৪ হাজার আর খাবারের জন্য কাটে ১০ হাজার(কিন্তু মুল বেতন ৪৪হাজার খাবারের জন্য কাটে ১০ হাজার=৩৪),কিন্তু তারা যানেন কেটে কুটে পায় ২৪ হাজার।এজন্য কি তিনি গুনাহ গার হবেন?তারা যদি যানেন ৩৪ হাজার বেতন পান তবে এটা নিয়ে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ হবে।তাই ইচ্ছা থাকা সত্বেও এটা বলার সাহস নেই।
২.আমরা দুজনেই প্রাকটিসিং মুসলিম, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু শশুর বাড়িতে অশান্তির ভয়ে অনেক কিছুই ঘুড়িয়ে ফিরেয়ে বলতে হয় এজন্য কি গুনাহ হবে?এছাড়া সময় বিশেষ মিথ্যার আশ্রয় নেয়া লাগে(উপরে উল্লেখিত)
৩.আমার উপর কুরবানি ওয়াজিব হয়েছে।এর আগে আমার স্বামীর ঈদের বোনাস দিয়ে শাশুড়ি কুরবানি দিতেন(তার উপর ও ওয়াজিব),যদিও তার জমানো অনেক টাকা রয়েছে।কিন্তু যেহেতু আমার ইনকাম সোর্স নেই সেহেতু স্বামি এবার চাচ্ছেন ওনার টাকা দিয়ে আমার টা দিবেন।কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে ঈদের সময় একটা ঝামেলা হবে আর শাশুড়ি আবার তার ছেলেকে অভিশাপ ও দেন কষ্ট পেয়ে এই ভয়ে আমরা চাইছি কুরবানির বোনাসের টাকা তাদের না জানাতে, আর যদি ঝামেলা করে রাজিও হন কিন্তু মাংস বন্টনে তারা কৃপণতা করেন,আর আমার কুরবানিতে আমার ইখতিয়ার থাকবে না বললেই চলে তাই জানাতে চাইছি না।এক্ষেত্রে কি গুনাহ হবে? মিথ্যা বলে কুরবানী দিলে কুরবানি হবে?
৩. মাঝে আমার স্বামীর চাকুরী চলে যায় তখন তারা ইনকাম করা সত্ত্বেও আমাদের আর্থিক সহয়তা করেন নি।বরং টাকার জন্য আরো হায় হুতাশ করতেন।আল্লাহর রহমতে চাকুরী সাথে সাথে হয়ে যায় তবে আমরা ৩/৪ মাস তাদের চাকুরীর কথা বলি নি।আমাদের বাবু হচ্ছে না এজন্য চিকিৎসার খরচ ও আছে, যেহেতু শশুর শাশুড়ী উভয় ই চাকুরী করেন তাদের ইনকাম সোর্স রয়েছে। সাথে জমানো ভালোই টাকা রয়েছে।তাই আমরা তাদের একথা জানাই নি।এই ৩/৪ মাস কোনো খরচ ও পাঠাই নি।আলাদা হবার পর আমরা ১০ হাজার টাকা দিতাম এবং আমাদের রুম সাবলেট ভাড়া দিয়ে এসেছি।সেখানের টাকাও তারাই নেন।
আমার প্রশ্ন এতে কি তাদের হক নষ্ট হয়েছে?
আমি খুবই ক্ষমা প্রার্থী,আমি তাদের খারাপ দিক কখনোই কাউকে প্রকাশ করতে চাই নি,এখানে শুধুমাত্র মাসআলা জানার জন্যই বলা,তবুও তারা যা করেন তার সামান্যই বলেছি।আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন,এবং আমাদের উভয়পক্ষকেই হিদায়াত দান করুন।