আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম। আমি প্রশ্ন বলার আগে আমার পরিবার নিয়ে বিস্তারিত বলে নিচ্ছি, যাতে করে বুঝতে সুবিধা হয়।

আমার পরিবারে আমি,আমার স্বামী, শশুর,শাশুড়ী এবং ননদ(বিবাহিত)।শশুর ও শাশুড়ী দুজনই চাকুরীজীবি। বর্তমানে আমি স্বামি নিয়ে আলাদা থাকি তার কাজের সূত্রে।আমার শশুর শাশুড়ী অনেক কৃপণ,সব খরচ বাদে ৩০ হাজারের মতো এক্সট্রা টাকা থাকে মাসে,এর পর ও সব কিছুতে হিসেব নেন। ননদের খরচ ও ননদ বহন করে।একসাথে থাকাকালীন আমার স্বামী ২২ হাজার টাকা দিত তারপর ও খাবার ছাড়া আমাদের যাবতীয় জিনিস আলাদা কিনতে হতো।আর খাবারেও অনেক হিসেব করে তারা।শুধু টাকার হিসেব নেয়।এমনকি অসুস্থ থাকাকালীন  একটা ডিম পর্যন্ত আলাদা এনে খেতে হয়েছে এজন্য ও বিচার বসছে।যেহেতু শাশুড়ি ভালো ইনকাম করেন এজন্য পরিবারে শাশুড়ীর কথাই সব।শশুর ও তালে তাল দেন।তারা সব কিছু নিয়ে অশান্তি করেন।অসুস্থ হলে টাকা ভাঙার ভয়ে বলেন ডাক্তার দেখানো লাগে না,তাহলে আরো রোগ বাড়ে।আমার স্বামীর বেতন ৩৫ হাজার টাকা ছিলো।সেখানে তার যাতায়াত খরচ সহ ৫/৬ হাজার যেত।আমার টিউশন ফি +ডাক্তার খরচ+তাদের ২২ হাজার টাকা। তাদের ২২ হাজার টাকা দেয়ার পর ও আমাদের বাকি সব কিছু আলাদা খরচ করতে হয়,  এজন্য আমার স্বামী পরিবারকে বলেছেন তার বেতন ৩৪ হাজার আর খাবারের জন্য কাটে ১০ হাজার(কিন্তু মুল বেতন ৪৪হাজার খাবারের জন্য কাটে ১০ হাজার=৩৪),কিন্তু তারা যানেন কেটে কুটে পায় ২৪ হাজার।এজন্য কি তিনি গুনাহ গার হবেন?তারা যদি যানেন ৩৪ হাজার বেতন পান তবে এটা নিয়ে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ হবে।তাই ইচ্ছা থাকা সত্বেও এটা বলার সাহস নেই।

২.আমরা দুজনেই প্রাকটিসিং মুসলিম, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু শশুর বাড়িতে অশান্তির ভয়ে অনেক কিছুই ঘুড়িয়ে ফিরেয়ে বলতে হয় এজন্য কি গুনাহ হবে?এছাড়া সময় বিশেষ মিথ্যার আশ্রয় নেয়া লাগে(উপরে উল্লেখিত)

৩.আমার উপর কুরবানি ওয়াজিব হয়েছে।এর আগে আমার স্বামীর ঈদের বোনাস দিয়ে শাশুড়ি কুরবানি দিতেন(তার উপর ও ওয়াজিব),যদিও তার জমানো অনেক টাকা রয়েছে।কিন্তু যেহেতু আমার ইনকাম সোর্স নেই সেহেতু স্বামি এবার চাচ্ছেন ওনার টাকা দিয়ে আমার টা দিবেন।কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে ঈদের সময় একটা ঝামেলা হবে আর শাশুড়ি আবার তার ছেলেকে অভিশাপ ও দেন কষ্ট পেয়ে এই ভয়ে আমরা চাইছি কুরবানির বোনাসের টাকা তাদের না জানাতে, আর যদি ঝামেলা করে রাজিও হন কিন্তু মাংস বন্টনে তারা কৃপণতা করেন,আর আমার কুরবানিতে আমার ইখতিয়ার থাকবে না বললেই চলে তাই জানাতে চাইছি না।এক্ষেত্রে কি গুনাহ হবে? মিথ্যা বলে কুরবানী দিলে কুরবানি হবে?

৩. মাঝে আমার স্বামীর চাকুরী চলে যায় তখন তারা ইনকাম করা সত্ত্বেও আমাদের আর্থিক সহয়তা করেন নি।বরং টাকার জন্য আরো হায় হুতাশ করতেন।আল্লাহর রহমতে চাকুরী সাথে সাথে হয়ে যায় তবে আমরা ৩/৪ মাস তাদের চাকুরীর কথা বলি নি।আমাদের বাবু হচ্ছে না এজন্য চিকিৎসার খরচ ও আছে,  যেহেতু শশুর শাশুড়ী উভয় ই চাকুরী করেন তাদের ইনকাম সোর্স রয়েছে। সাথে জমানো ভালোই টাকা  রয়েছে।তাই আমরা তাদের একথা জানাই নি।এই ৩/৪ মাস কোনো খরচ ও পাঠাই নি।আলাদা হবার পর আমরা ১০ হাজার টাকা দিতাম এবং আমাদের রুম সাবলেট ভাড়া দিয়ে এসেছি।সেখানের টাকাও তারাই নেন।

আমার প্রশ্ন এতে কি তাদের হক নষ্ট হয়েছে?

আমি খুবই ক্ষমা প্রার্থী,আমি তাদের খারাপ দিক কখনোই কাউকে প্রকাশ করতে চাই নি,এখানে শুধুমাত্র মাসআলা জানার জন্যই বলা,তবুও তারা যা করেন তার সামান্যই বলেছি।আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন,এবং আমাদের উভয়পক্ষকেই হিদায়াত দান করুন।

1 Answer

0 votes
by (647,880 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আবুল ফরয ইবনুল জাওযী রাহ বলেনঃ
ﻭﺿﺎﺑﻄﻪ ﺃﻥ ﻛﻞ ﻣﻘﺼﻮﺩ ﻣﺤﻤﻮﺩ ﻻ ﻳﻤﻜﻦ ﺍﻟﺘﻮﺻﻞ ﺇﻟﻴﻪ ﺇﻻ ﺑﺎﻟﻜﺬﺏ، ﻓﻬﻮ ﻣﺒﺎﺡ ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻤﻘﺼﻮﺩ ﻣﺒﺎﺣﺎ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻭﺍﺟﺒﺎ، ﻓﻬﻮ ﻭﺍﺟﺐ 
প্রত্যেক ঐ ভালো উদ্দেশ্য যে পর্যন্ত মিথ্যার আশ্রয় ব্যতীত পৌছা  প্রায় অসম্ভব, সেখানে মিথ্যা বলা বৈধ।মাকসাদ(উদ্দেশ্য) মুবাহ হলে,মিথ্যা বলা মুবাহ।মাকসাদ ওয়াজিব হলে মিথ্যা বলা ওয়াজিব
(ফাতাওয়া দারাল ইফতা আল-মিচরিয়্যাহ)

আল্লামা ইবনূল কাইয়ূম রাহ বলেনঃ
ﻳﺠﻮﺯ ﻛﺬﺏ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻋﻠﻰ ﻧﻔﺴﻪ، ﻭﻋﻠﻰ ﻏﻴﺮﻩ ﺇﺫﺍ ﻟﻢ ﻳﺘﻀﻤﻦ ﺿﺮﺭ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﻐﻴﺮ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻳﺘﻮﺻﻞ ﺑﺎﻟﻜﺬﺏ ﺇﻟﻰ ﺣﻘﻪ،
একমাত্র মিথ্যার মাধ্যমে হক্ব(অধিকার রক্ষা)পর্যন্ত পৌছা নির্দিষ্ট হলে নিজের উপর বা অন্যর উপর মিথ্যা বলা জায়েয যখন এতে অন্যর কোনোপ্রকার ক্ষতি হয় হবে না।(যাদুল মা'আদ-২/১৪৫)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/644



সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) যেহেতু এছাড়া বিশ্বযুদ্ধ আটকানোর আর কোনো রাস্তা নেই, তাই এজন্য ছেলের গোনাহ হবে না। 
(২) যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে, যাতে মিথ্যা বলতে না হয়।
(৩) প্রশ্নের বিবরণমতে কুরবানি হবে। 
(৪) সর্বদা তাওরিয়াহ করার চেষ্টা করবেন।আপনি এক উদ্দেশ্যে এক কথা বলবেন, তারা বুঝবেন অন্যটা। তাহলে আর ঝগড়া বাধবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (1 point)
৪ নং প্রশ্নে উল্লেখ্য যে কারণে ৩/৪ মাস টাকা দেয়া হয় নি এতে তাদের হক নষ্ট হবে কিনা?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...