আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ

এমন যদি হয় কারো একজনের মরণব্যাধি রোগ ধরা পড়লো, হতে পারে ক্যান্সার কিংবা অন্য কিছু।  যখন রোগ ধরা পড়লো তখন ঐ ব্যক্তি বুঝতেছে যে তিনি আর বেশিদিন বাঁচবে না। এমতাবস্থায় সে যদি তাওবা করে এবং তার ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে তাহলে কি সে সফল হতে পারবে? আমার কনসার্নের জায়গাটি হলো সুস্থ অবস্থায় আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে নি, যখন বুঝলো যে বেশিদিন বাঁচবে না তখন আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা শুরু করলো বা দ্বীনের খেদমতের জন্য কাজ করলো।  তাহলে কি তার অর্থ সম্পদ আখিরাতে কাজে আসবে?

1 Answer

0 votes
by (618,420 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ عُمَارَةَ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُوْلَ اللهِ أَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ قَالَ أَنْ تَصَدَّقَ وَأَنْتَ صَحِيْحٌ حَرِيْصٌ تَأْمُلُ الْغِنَى وَتَخْشَى الْفَقْرَ وَلَا تُمْهِلْ حَتَّى إِذَا بَلَغَتْ الْحُلْقُومَ قُلْتَ لِفُلَانٍ كَذَا وَلِفُلَانٍ كَذَا وَقَدْ كَانَ لِفُلَانٍ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! উত্তম সদাকাহ কোনটি? তিনি বলেন, সুস্থ এবং সম্পদের প্রতি অনুরাগ থাকা অবস্থায় দান খয়রাত করা, যখন তোমার ধনী হবার আকাঙ্ক্ষা থাকে এবং তুমি দারিদ্রের আশংকা কর, আর তুমি এভাবে অপেক্ষায় থাকবে না যে, যখন তোমার প্রাণ কন্ঠাগত হবে, তখন তুমি বলবে, অমুকের জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য এতটুকু অথচ তা অমুকের জন্য হয়েই গেছে। (বুখারী ২৪৪৮,১৪১৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৫৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৫৮)

রোগের আসলে দুটি রূপ রয়েছে:

একটি হলো ব্যক্তিটি শয্যাশায়ী, অন্যটি হলো ব্যক্তির শরীরে মৃত্যুর চিহ্ন দৃশ্যমান।

প্রথম ক্ষেত্রে, দান-সদকা এবং অসিয়ত জায়েজ, যদিও সুস্থ থাকাকালীন এটি করা উত্তম।

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, যখন আত্মা গলায় পৌঁছে যায় এবং মৃত্যুর কাছাকাছি অবস্থা শুরু হয়, তখন কোন অসিয়ত বা দান অনুমোদিত নয়, এবং সেই ব্যক্তির আর কিছু নিষ্পত্তি করার ক্ষমতাও নেই।

https://ifatwa.info/116515/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মৃত্যুর অল্প সময় পূর্বে এবং মওতের আলামত প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে যদি তাওবা করে তখন তার তাওবা কবুল হবে। 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ

(إِنَّ اللَّهَ يَقْبَلُ تَوْبَةَ الْعَبْدِ مَا لَمْ يُغَرْغِرْ)

‘‘আল্লাহ্ তাআলা বান্দার তাওবা ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করেন, যতক্ষণ না তার মৃত্যুর গড়গড়ানী শুরু হয়’’।
(তিরমিযী, অধ্যায়ঃ কিতাবুত্ তাওবা।)

বান্দা যখন মালাকুল মাওতের ভয়াবহ চেহারা দেখবে, তার রূহ বক্ষদেশ থেকে বের হয়ে কন্ঠণালীতে পৌঁছে যাবে এবং মরণের গড়গড়ানী শুরু হবে ও প্রাণ বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে, তখন কোন প্রকার তাওবা কবুল হবে না এবং মৃত্যু হতে পলায়নের কোন সুযোগও থাকবে না।

আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

(وَلاَتَ حِينَ مَنَاصٍ)

‘‘কিন্তু তখন পরিত্রাণের কোন উপায় ছিল না’’। (সূরা সোয়াদঃ ৩) আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

(وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّى إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الآنَ)

‘‘আর তাদের জন্য ক্ষমা নেই, যারা ঐ পর্যন্ত পাপ করতে থাকে যখন তাদের কারো নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলেঃ নিশ্চয়ই আমি এখন তাওবা করছি’’। (সূরা নিসাঃ ১৮)

বনী আদমের যখন মওতের টান এসে যায় এবং মালাকুল মাওতকে চোখের সামনে উপস্থিত দেখতে পায় তখন তার জন্যে তাওবার সুযোগ শেষ হয়ে যায়। এ সময় তাওবা করলেও কোন কাজ হবে না। যেমন আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُوْلَئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল করবেন যারা ভুল বশতঃ মন্দকাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে, এরাই হলো সে সব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন’’। (সূরা নিসাঃ ১৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যদি তাওবা করে এবং তার ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে তাহলে সে সফল হতে পারবে।

তার জন্য তওবা ও দান সদকার দরজা খোলা আছে। তওবা ও দান সদকার দরজা তার জন্য এখনো বন্ধ হয়ে যায়নি।

তিনি নিশ্চিন্ত মনে তওবা ও দান সদকাহ করতে পারেন।

তার তওবা এবং দান সদকাহ কবুল হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 228 views
...