আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
12 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আসালামালাইকুম,, আমার প্রশ্নটা হল-আমি আমার বাড়ির পাশে বাজারে একটা ঔষধ দোকানে কাজ করছি দীর্ঘ ছয় মাস যাবত। আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম যে, দোকান থেকে আমরা যে সমস্ত ক্লিনিক্যাল প্রোডাক্ট গুলো কাস্টমারের কাছে বাহিরে বিক্রি করে থাকি তা পুরোটাই কাঁচামাল দ্বারা তৈরি। যেটা আমরা খুবই আদবের সহিত কাস্টমারদের কাছে বিক্রি করে থাকি। যার ক্ষতিকারক দিক অথবা ভালো দিক আমার জানা নাই। তবে কাস্টমারদের বলে থাকি যে আমরা এখানে কোন ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মেশানো নাই, অথচ আমরা কেমিক্যাল মেশাই, আমি একজন সামান্য কর্মচারী হয়ে এই ধরনের কথা বলতে বাধ্য হই, এখন আমার করণীয় কি??

বি:দ্র:-মেডিসিনগুলো হল যৌন উত্তেজনা নাশক ঔষধ।

আল্লাহ তাআলা আমাকে মাফ করুক, আপনার আমার প্রশ্নটি বিবেচনা করে ভালো একটি সমাধান দিবেন ,,,

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ব্যবসায়ে সততা ও ন্যয়পরায়ণতা বজায় রাখা জরুরী। 
পণ্যে কোন দোষ-ত্রুটি থাকলে তা গোপন না করে ক্রেতার কাছে তা ব্যক্ত করা জরুরী। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ بَاعَ مِنْ أَخِيهِ بَيْعًا فِيهِ عَيْبٌ إِلاَّ بَيَّنَهُ لَهُ. 

‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। অতএব কোন মুসলমানের পক্ষে তার ভাইয়ের কাছে পণ্যের ত্রুটি বর্ণনা না করে তা বিক্রয় করা বৈধ নয়’।
(ইবনু মাজাহ হা/২২৪৬; ইরওয়া হা/১৩২১; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৭০৫।)

আব্দুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল,

ما سبب كثرة مالك؟ قال ما كتمت عيبا، ولا رددت ربحا-

 ‘আপনার সম্পদের প্রবৃদ্ধির কারণ কি? তিনি বললেন, আমি মালের দোষ-ত্রুটি গোপন করি না এবং অতিরিক্ত মুনাফা করি না’।
(আন-নাজমুল ওয়াহাজ, ৪/১৭৭ পৃঃ।)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

https://ifatwa.info/1448/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى صُبْرَةِ طَعَامٍ فَأَدْخَلَ يَدَهُ فِيهَا، فَنَالَتْ أَصَابِعُهُ بَلَلًا فَقَالَ: «مَا هَذَا يَا صَاحِبَ الطَّعَامِ؟» قَالَ أَصَابَتْهُ السَّمَاءُ يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: «أَفَلَا جَعَلْتَهُ فَوْقَ الطَّعَامِ كَيْ يَرَاهُ النَّاسُ، مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّي»
রাসূলুল্লাহ সাঃ একবার  খাদ্যর একটি স্তুপের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন।তখন তিনি স্তুপের ভিতরে হাত ঢোকালেন। উনার হাত পানি দ্বারা ভিজে গেল।তখন তিনি খাদ্যর মালিককে জিজ্ঞেস করলেন কারণ কি? ঐ ব্যক্তি বলল,ইয়া রাসূলুল্লাহ! তাতে বৃষ্টির পানি পড়ে গেছে।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ তাকে বললেন,তুমি কেন এই ভিজে যাওয়া খাদ্যকে উপরে রাখলেনা, যাতেকরে লোকজন সেটাকে দেখতে পারে।তোমরা সবাই জেনে রাখো! যে ব্যক্তি অন্যকে ধোকা দিবে সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১০২)

আল্লামা আলাউদ্দিন হাসক্বাফী রাহ লিখেন,
لَا يَحِلُّ كِتْمَانُ الْعَيْبِ فِي مَبِيعٍ أَوْ ثَمَنٍ؛ لِأَنَّ الْغِشَّ حَرَامٌ
পণ্যে অথবা মূল্যে দোষ গোপন করে ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয হবে না।কেননা ইসলামে ধোকা হারাম।(আদ্দুর্রুল মুখতার-৫/৪৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি কাস্টমারদের হয় সত্য কথা বলবেন অন্যথায় চাকরি ছেড়ে দিবেন।

ধোকা দিয়ে কাস্টমারদের সেই প্রডাক্ট গুলি বিক্রয় করা জায়েজ নেই।

উল্লেখ্য, মেডিসিন গুলো যদি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়,সরকার কর্তৃক বৈধ না হয়,সেক্ষেত্রে কোনোক্রমেই প্রডাক্ট গুলি বিক্রয় করা জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 382 views
...