আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ
আমার শ্বশুর বাড়ি মোটামুটি বলতে গেলে সমাজের নামে চলা মাওলানা পরিবারের মতো। বিয়ের পর থেকে আমার উপর নিষেধাজ্ঞা শ্বশুর বাড়ি যাওয়া যাবে না ; কারণ বড় ভাই, ছোট বোনের বিয়ে না হওয়া। আমি সেইটাও মেনে নিয়েছি। বিয়ের পরের প্রথম ঈদ আমাকে আমার বাপের বাড়ি (বগুড়া) এবং আমার হাজবেন্ডকে তার বাড়ি (সিরাজগঞ্জ)  করতে বাধ্য করা হয়। এবং সফরের রাস্তাটুকুও সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া আমাকে একা পাঠানো হয়। এরপর আমার হাজবেন্ড আমার বাপের বাড়ি এলে প্রত্যেকবার এইটা নিয়ে আমার শাশুড়ী কাহিনি করে। আমাদের সাথে কথা বলে না, ফোন দিলে রিসিভ করে না।
একবার আমার ভাসুরের সাথে দেখা হয় আমি কোনো কথা বলিনি। এইটা নিয়ে ক্রমাগত আমার শাশুড়ী  আমার স্বামীকে কথা শোনায় : তোমার বউ আমার ছেলেকে সম্মান দেয় নি, এই সেই। এবং তাকে এইটা বুঝানো হয় যে পর্দার জন্য আমি বলিনি, তখন তিনি বলেন আমি কি রিকশাওয়ালা, দোকানদার এদের সাথে কথা বলি না! লাস্ট বার আবার একই কথা আমার স্বামীকে বললে উনি রেগে গিয়ে বলে ফেলেন এইবার ওকে (আমার নাম ধরে বলেন) বলব ভাইয়ের সামনে মুখ খুলে বসে খোশগল্প করার জন্য। এইটাতে আমার শাশুড়ী অনেক রেগে যায়, কান্নাকাটি করে, ছোট থেকে বড় করছি এখন এইসব বলে এইরকম নানানকথা বলে।এবং তখন থেকে আমার স্বামীর সাথে ভালো করে কথা বলে না এবং এখন আরও উনার কল আর রিসিভও করে না।
বি.দ্র: আমরা ঢাকায় থাকি। শুরুতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকলেও এখন আলাদাভাবে যে যার হল এ থাকি। এখন শ্বশুরবাড়ি যাওয়া নিষেধ, আবার আমার বাপের বাড়ি গেলেও আমার শাশুড়ীর সমস্যা।

 এ হেন অবস্থায় আমাদের করণীয় কি? আমার স্বামীর এমন পরিস্থিতিতে কি করা উচিত? আমরা না চাইলেও এসব বিষয়ে কথা উঠলে তা গীবতের পর্যায়ে চলে যায়।

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

قَوْلُهُ خَالٍ عَنْ أَهْلِهِ إلَخْ) ؛ لِأَنَّهَا تَتَضَرَّرُ بِمُشَارَكَةِ غَيْرِهَا فِيهِ؛؛ لِأَنَّهَا لَا تَأْمَنُ عَلَى مَتَاعِهَا وَيَمْنَعُهَاذَلِكَ مِنْ الْمُعَاشَرَةِ مَعَ زَوْجِهَا وَمِنْ الِاسْتِمْتَاعِ إلَّا أَنْ تَخْتَارَ ذَلِكَ؛ لِأَنَّهَا رَضِيَتْ بِانْتِقَاصِ حَقِّهَا هِدَايَةٌ )

স্ত্রীকে এমন একটি বাসস্থান দান করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব,যা স্বামীর পরিবার থেকে খালি থাকবে,কেননা সে অন্যর উপস্থিতির ধরুণ কষ্ট উপভোগ করবে,এবং তার মাল সামানা পুরোপুরি সংরক্ষিত থাকবে না।তৃতীয় কারো উপস্থিতি স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক জীবন ও একান্ত সময় অতিবাহিত করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। এ জন্য একটি পৃথক বাসস্থান স্ত্রীর মৌলিক অধিকার।তবে যদি সে তার নিজ অধিকার বিসর্জন দিতে রাজি হয় যায় তাহলে তার জন্য অনুমিত রয়েছে (যদি এক্ষেত্রে গোনাহের কোনো সম্ভাবনা না থাকে)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/430

ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
বিবাহ করা মাত্র আপনার ভরণপোষণ, অন্ন বস্ত্র বাসস্থান সবকিছুর ব্যবস্থা করা আপনার স্বামীর উপর আবশ্যক হয়ে গিয়েছে।

সুতরাং আপনার স্বামী আপনার জন্য আলাদা বাসায় থাকার ব্যবস্থা করবে।
এটি তার উপর আবশ্যক।  

শরীয়ত আপনার ভরণপোষণ ও বাসস্থানের দায়িত্ব আপনার স্বামীর উপর দিয়েছে। আপনার ভরণপোষণ ও বাসস্থানের দায়িত্ব   
কোনোটিই আপনার ও আপনার বাবার উপর নয়।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এমন পরিস্থিতিতে আপনার স্বামীর আপনাকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকা উচিত।
এটি আপনার ন্যায্য অধিকার।  যাহা শরীয়ত আপনাকে দিয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...