যারা জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান যারা চর্চা করে, তাদেরও যদি নিয়ত সহীহ থাকে এবং পদ্ধতি সঠিক হয় তাহলে তাদের এ চর্চাও আমলে সালেহ তথা নেক আমল।
জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্বেষণ এবং এ নিয়ে চর্চা করা, মেহনত করা এটাও নেক আমল- আমলে সালেহ। শর্ত কী? নিয়ত হতে হবে সহীহ এবং পদ্ধতি হতে হবে সঠিক। সহীহ নিয়ত এবং সঠিক পদ্ধতি যদি হয় তাহলে ওটাও নেক আমল। আর যদি নিয়ত সহীহ না হয়, তাহলে যে নিয়তে জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান আপনি অর্জন করেছেন তাই পাবেন।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে।
(সহীহ : বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী ৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭, আহমাদ ১৬৯, ৩০২।)
,
সুতরাং ইঞ্জিনিয়ার বা আর্কিটেক্ট মসজিদ মাদ্রাসার প্লান তৈরী করে দেওয়া,আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মাখলুকের সেবা করার নিয়ত করবে।
মসজিদ নির্মাণ করার ফজিলতও আছে-
مَنْ بَنَى لِلهِ مَسْجِدًا بَنَى اللهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنّةِ.
যে আল্লাহ্র জন্য একটি মসজিদ বানাল আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে বাড়ি নির্মাণ করবেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২৯১
মসজিদ নির্মাণের ফযিলতের কথাও আছে, সওয়াবের কথাও আছে। উদ্বুদ্ধও করা হয়েছে। কিন্তু এই শিল্প নিষেধ! এই বিজ্ঞান নিষেধ! এটা হয়?! কখনো হয় না।
,
বিজ্ঞানের শিক্ষক ইসলামের সত্যতা তুলে ধরবেন,ইসলাম বিদ্বেষীদের জবাব দিবেন।
,
সুতরাং এটাও অনেক বড় কাজ।
,
শায়েখ মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব দাঃবাঃ বলেছেন যে,
জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানকে শরীয়ত কখনো নিষেধ করে না। চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে। হাদীস শরীফে আছে, আল্লাহ তাআলা রোগ দেন আবার রোগ দূর করেনও। তো আল্লাহ কোন্ জিনিসে শিফা রেখেছেন- এটার নিশ্চিত বাস্তবিক ইলম আল্লাহ ছাড়া কারোরই নেই। শুধু সাধারণ একটা জ্ঞান ডাক্তারদেরকে আল্লাহ তাআলা দান করেছেন। সে হয়ত ঠিক ঠিক ঔষধ প্রয়োগ করতে পারে। শেফা হয় আল্লাহর হুকুমে । এই যে ডাক্তারী বিষয়টা- রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীসেও রয়েছে। হাদীসের কিতাবে একটা অধ্যায়ের শিরোনাম ‘আততিব’। শিরোনাম কী? আততিব। তিব মানে চিকিৎসা বিজ্ঞান। একজন তালিবে ইলম, একজন ছাত্র যখন জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের লাইনে যাবে এবং সেই বিষয়ে পণ্ডিত্য অর্জন করবে তার নিয়ত কী হবে? নিয়ত হবে, আমি এর মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মাখলুকের সেবা করব।