আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
উস্তায ডিভোর্সের পর পূর্বের শশুড় শাশুড়ী তখনও মাহরাম থাকলে তাদের সাথে কি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত। বজায় রাখলে আত্মীয়তার সম্পর্কটা কেমন হওয়া উচিত আর কিভাবে রাখা উচিত। কারণ এর দ্বারা তো অনেকের ক্ষেত্রে অনেক সময় ফিতনার আশঙ্কা হতে পারে পূর্বের ওয়াইফ অথবা স্বামীর নতুন সংসারের ক্ষেত্রে। অনেক ক্ষেত্রে না রাখাই তো উত্তম মনে হয় উভয়ের ভালোর জন্য। কিন্তু যদি আল্লাহর নির্দেশ হয়ে থাকে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা সেটা কি সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে? নাকি সম্পর্ক রাখা উচিত না মাহরাম হলেও। আসলে এখানে মাহরাম বলতে কী বুঝিয়েছে? বিবাহ হারাম সেক্ষেত্রে নাকি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে? নাকি এটা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য আলাদা হবে যার যার  সম্পর্কের প্রেক্ষাপট, পারিবারিক পরিবেশ, পরিস্থিতি ও অবস্থা সাপেক্ষে? আর সব মাহরাম তো সমান হয়না। এক্ষেত্রে এই বিষয়টা আত্মীয়তার ক্ষেত্রে তাহলে কোন পর্যায়ে কেমন হবে উস্তায। পারস্পরিক হক, দায়িত্ববোধ ইত্যাদির ক্ষেত্রে। আল্লাহ যে বলেছেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে এটা কি এইক্ষেত্রে হবে, হলে কেমন। এইক্ষেত্রে ব্যক্তিভেদে বিষয়টা কেমন হওয়া উচিত আর উত্তম হবে উস্তায ?

1 Answer

0 votes
by (70,410 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

স্বামীর পিতা (শ্বশুর) চিরকালের জন্য মাহরাম। এমনকি তালাক সংঘটিত হওয়ার পরও কিংবা মৃত্যুবরণ করার পরও। স্বামীর পিতা (শ্বশুর) চিরকালের জন্য মাহরাম পুরুষদের অন্তর্ভুক্ত যদিও তার স্বামীর সাথে তালাক সংঘটিত হয়ে গিয়ে থাকে অথবা স্বামী মৃত্যুবরণ করে থাকেন। কেননা আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন-

وَحَلَائِلُ أَبْنَائِكُمُ الَّذِينَ مِنْ أَصْلَابِكُمْ

‘(এবং তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে) তোমাদের ঔরসজাত সন্তানদের স্ত্রীগণকে।’ (সুরা নিসা: আয়াত ২৩)

এ প্রসঙ্গ শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন-

: لا حرج عليك في الكشف لوالد زوجك السابق؛ لأنه محرم لك ولو طلقك ابنه، وزيارته في الأوقات المناسبة مع زوجك أو محرمك مناسبة، إذا كان من أهل الصلاح والخير، وهكذا لو زرته لوحدك إذا كان منزله قريبًا لا يحتاج إلى سفر ولا كلفة، بشرط أن يرضى زوجك بذلك وفق الله الجميع لما يرض

আপনার প্রাক্তন স্বামীর পিতার (শ্বশুরের) সামনে মুখমণ্ডল খোলা বা বেপর্দা হওয়ায় কোনও অসুবিধা নেই। কারণ তিনি আপনার মাহরাম (তার সাথে চিরকালের জন্য বিয়ে হারাম) যদিও তার ছেলে আপনাকে তালাক দিয়েছে। অতএব আপনার জন্য আপনার (নতুন) স্বামীর সাথে বা কোনও মাহরামের সাথে গিয়ে উপযুক্ত সময়ে তার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা বৈধ-যদি সে নেককার ও সৎ হয়।

একাকিও তার বাড়িতে দেখা-সাক্ষাত করতে পারেন-যদি তার বাড়ি কাছাকাছি হয় এবং সেখানে যেতে সফর বা কষ্ট করতে না হয়। তবে শর্ত হল, এতে আপনার স্বামীর সম্মতি থাকতে হবে। আল্লাহ সকলকে ঐ কাজ করার তওফিক দান করুন; যাতে তিনি সন্তুষ্ট হোন।’ (মাজমু ফাতাওয়া ও মাকালাত শাইখ বিন বায ২১/২২, ফতোয়া প্রদানের তারিখ ২৩/২/১৪১৮ হিজরি)

উল্লেখ্য যে, স্বামীর সঙ্গে কেবল আকদ সংঘটিত হলেই তার পিতা (নারীর শ্বশুর) চিরকালের জন্য হারাম হয়ে যাবে। চাই দাম্পত্য জীবন শুরু হোক অথবা না হোক। অর্থাৎ যদি কোনও কারণে বিয়ের ইজাব-কবুল হওয়ার পরপরই এবং দাম্পত্য জীবন শুরু করার আগেই তাদের মাঝে তালাক সংঘটিত হয়ে যায় তারপরও উক্ত নারীর জন্য তার স্বামীর পিতা (তার শ্বশুর) চিরতরে হারাম বলে গণ্য হবে। সুতরাং তাদের মাঝে স্থায়ীভাবে বিয়ে বন্ধন হারাম।

অনুরূপভাবে স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে হয়ে গেলে বা স্ত্রী মৃত্যুবরণ করলেও তার মা (শাশুড়ি) এবং তার দাদি-নানিগণ (দাদি শাশুড়ি ও নানি শাশুড়িগণ) উক্ত পুরুষ ব্যক্তির জন্য মাহরাম বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ তাদের সাথে বিয়ে নিষিদ্ধ এবং তাদের সামনে কোনও পর্দা নেই। কারণ আল্লাহ তাআলা যে সকল নারীকে পুরুষদের জন্য বিয়ে করা হারাম করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হল, স্ত্রীর মা এবং দাদি-নানিগণ। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَأُمَّهَاتُ نِسَائِكُمْ

‘(আরও হারাম করা হয়েছে), তোমাদের স্ত্রীদের মাগণ (তথা জন্মদাত্রী মা এবং দাদি-নানিগণ) কে।’ (সুরা নিসা: আয়াত ২৩)

মাহরাম দুই প্রকার যথাঃ- (১) মাহরামে আবদি যাদের সাথে সর্বদাই বিয়ে হারাম, যেমন নিজ খালা, বোন, খালা ফুফু শাশুড়ী,চায় স্ত্রীর সাথে বাসর রাত তথা সহবাস হোক বা না হোক, এবং ঐ স্ত্রীর অন্য স্বামীর মেয়ে যে স্ত্রীর সাথে সহবাস হয়ে গেছে। স্ত্রীর সাথে তালাক হওয়ার পরও তারা হারাম থাকবে। (২) মাহরামে গায়রে আবদি অর্থাৎ সাময়িক মাহরাম, তথা স্ত্রীর সাথে তালাক হয়ে গেলে যাদেরকে বিয়ে করা যাবে ।যেমন স্ত্রীর বোন, ফুফু,খালা ইত্যাদি।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

হুরমতের বিষয়টি উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। ডিভোর্সের পরও পূর্বের শশুর শাশুড়ীর সাথে ভালো ব্যবহার করা ও তাদের খোঁজ খবর রাখা উচিৎ। তবে যদি কোন ফেতনার আশংকা হয় তাহলে ফেতনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য সাময়িক ভাবে এড়িয়ে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু অকারণে তাদের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...