আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমার পরিচিত এক বিবাহিত বোনের ২ বাচ্চা হওয়ার পর, উনার স্বামী ও উনার আপন ছোট বোনের সাথে ব্যাভিচারে লিপ্ত পেয়েছেন। এরপর উনার বোনকে বিয়ে দিয়ে দেন। পরবর্তীতে উনার স্বামীর সাথে সম্পর্কে র উন্নতি ঘটে। উনারা আরেক সন্তান লাভ করেন। এখন আমার প্রশ্ন হলো, উনার আপন বোনের সাথে অবৈধ সম্পর্ক হওয়ার ফলে উনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক কি বহাল ছিলো? পরবর্তীতে যে সন্তান লাভ করেছেন সেটা কি জারজ হিসাবে বিবেচিত হবে?

ঘটনাটা হওয়ার পর উনারা ১৭/১৮ বছর ধরে সংসার করছেন। বাচ্চারাও বড় হয়ে গেছে। এখন তালাকের কোনো সুযোগ নেই। উনাদের ক্ষেত্রে ফতোয়া ঠিক কি হতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (611,730 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামী শরিয়তে ব্যভিচারী বিবাহিত হলে তার শাস্তি রজম বা পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদণ্ড।

আর অবিবাহিত ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীকে ১০০ বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

ইরশাদ হয়েছে, ‘ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী—তাদের প্রত্যেককে ১০০ কশাঘাত করবে...।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ২)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

 وَلاَ تَقْرَبُوا الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلاً- 

‘তোমরা যেনার নিকটবর্তীও হয়ো না, এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট পথ’ (বনী ইসরাঈল ৩২)। 

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,
وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا، يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا-

‘তারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন মা‘বূদকে ডাকে না শরী‘আত সম্মত কারণ ব্যতীত কাউকে হত্যা করে না এবং যেনা করে না। আর যে ব্যক্তি এই সকল কাজ করে সে শাস্তি ভোগ করবে। ক্বিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং এ শাস্তি লাঞ্ছিত অবস্থায় সে অনন্তকাল ভোগ করতে থাকবে’ (ফুরক্বান ৬৮)।

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,

الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ وَلاَ تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللهِ إِنْ كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ-

‘যেনাকার নারী পুরুষ প্রত্যেককে একশ’ বেত্রাঘাত কর, আল্লাহর বিধান পালনে তাদের উভয়ের প্রতি তোমাদের মনে অনুগ্রহ আসা উচিত নয়। যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাসী হও’ (নূর ২)।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عُبَادَةَ الصَّامِتِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ خُذُوْا عَنِّي خُذُوْا عَنِّي قَدْ جَعَلَ الله لَهُنَّ سَبِيْلاً البِكْرُ بِالْبِكْرِ جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيْبُ عَامٍ وَالثَّيِّبُ بِالثَّيِّبِ جَلْدُ مِائَةٍ وَالرَّجْمُ.

উবাদাহ ইবনু ছামেত (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা আমার নিকট হতে আল্লাহর বিধান গ্রহণ কর, কথাটি রাসূল (ছাঃ) দু’বার বললেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন, অবিবাহিত নারী-পুরুষকে একশ’ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য নির্বাসন করতে হবে। আর বিবাহিত নারী-পুরুষকে রজম করতে হবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫৫৮; বঙ্গানুবাদ ৭ম খন্ড, হা/৩৪০২)।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمْ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ قَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ شَيْخٌ زَانٍ وَمَلِكٌ كَذَّابٌ وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোকের সঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন কথা বলবেন না। তাদের তিনি পবিত্রও করবেন না। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তারা হচ্ছে- (১) বৃদ্ধ যেনাকার (২) মিথ্যাবাদী শাসক এবং (৩) অহঙ্কারী দরিদ্র ব্যক্তি’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৯; বঙ্গানুবাদ ৯ম খন্ড, হা/৪৮৮২)।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্ন উল্লেখিত বোনের স্বামীর শাস্তি হলো প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদণ্ড এবং তার ছোট বোন এর শাস্তি হলো ১০০ টি বেত্রাঘাত।

তবে দেশে যেহেতু ইসলামী আইন বাস্তবায়ন নেই, সুতরাং এক্ষেত্রে সে শাস্তি প্রয়োগ হবে না, তবে তাদের জন্য খালেস দিলে তওবা করা আবশ্যক।

 প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের স্বামী তার স্ত্রীর বোনের সাথে যেনা করার দরুন তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের কোন বিচ্ছেদ ঘটেনি।

তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক আপন অবস্থায় বহাল রয়েছে।

এজন্য তাদের সন্তানেরা জারজ সন্তান হবে না, বরং তারা বৈধ সন্তান হিসেবেই বিবেচিত হবে, এবং তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক আগের মতোই বহাল রয়েছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 160 views
...