আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
55 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওস্তাদ।
একটি বিষয়ে আমি খুবই কনফিউজড। নিজেকে যদি প্রশ্ন করি যে, আমি কি কোনো হারাম সম্পর্কে ছিলাম?  সঠিকভাবে উত্তর পাইনা,হ্যা নাকি না?

২০১৯ এ আমার একজনকে পছন্দ ছিল।প্রথমত সেই বলেছিল পছন্দ করে। আমি তখন অটল ছিলাম রাজি হবো না। কিন্তু কয়েক  মাসের মাথায় আমিও বলে দেই। এর মাঝে অন্যসব হারাম সম্পর্কের মতো কিছুই হয়নি।  পরিচিত ছিল বিধায়,ফোনে মেসেজে কথা হতো। এরপর যখন আমিও রাজি হই, ২মাসের মতো কথা হয় এবং আমি জানাই যে,কথা বলা অফ থাক,এবং সে যেন চাকরি পেলে পরিবার নিয়ে আসে। সে রাজি হলেও,কথা বলা অফ করতে চায়নি,করেওনি। এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর,আমার আম্মু দেখতে পায় মেসেজ এবং এ নিয়ে আমাকে শাসন করেন। আমি যে ভুলে আছি, আমি বুঝতে পারলেও ভুলা কঠিন ছিল। তাকেও জানাইনি যে কী হয়েছে,শুধু হঠাৎ করে না করে দিয়েছি। কারণ,আমার আম্মুর  শিক্ষা এমন ছিলনা যা আমি করছিলাম।আমি অনুতপ্ত ছিলাম। এরপর কয়েক মাস পর আবার কথা হয়,তবে খুবই কম। এরপর ২০২০ এর করোনা এবং এরপর সব বন্ধ।  কারণ ছিল, আমি তার সাথে কথা বলতাম না,সময় দিতাম না, যোগাযোগ রাখতাম না,তাকে ইসলামের দিকে আরও ফিরে আসতে বলতাম, বিয়ের জন্য কথা অফ রাখতে চাওয়াকেও তার বাহানা মনে হলো। বরং,আমি চাচ্ছিলাম,হারাম বাদ দিয়ে তাকেই হালাল করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। কিন্ত আমি ভুলে গেছিলাম যে,হারাম ও হালাল একসাথে অসম্ভব।  বলা বাহুল্য, শুধু যা কথা তখন হতো,ফোনেই হতো। আর পরিচিত বিধায় দুজন সামনাসামনি হলেও পরিবার থাকতো আশেপাশে। এছাড়া কখনই কোনো ছবি আদান প্রদান বা একসাথ কোথাও বের হওয়া বা কলের পর কলে কথা বলা বা বর্তমান হারাম সম্পর্কে যা হয়,তার কোনো কিছুই হয়নি।মূলত,এসব কারণেই আমাকে আর পছন্দ হচ্ছিল না তার।

কিন্তু,আলহামদুলিল্লাহ তখন যা যা থেকে বিরত ছিলাম। তবে, ঐ কথা বলাটাও গুনাহ ই ছিল।

প্রশ্ন হচ্ছে, আমি কি তাহলে আসলেই হারাম সম্পর্কে ছিলাম?  নাকি একে শুধু মোহ বলবো? কারণ,কথা ছাড়া আর কিছুই করিনি,আল্লাহ ভালো জানেন। তবে,দুয়া করতাম অনবরত হালাল করার জন্য, যা ভুল ছিল। তবে,অনেক আগেকার কথা হলেও গুনাহ টা যেন এখনো জীবিত আমার মধ্যে,যার অনুতাপ আছে।

১.আমি কি তাহলে সম্পর্কে ছিলাম? (নাউজুবিল্লাহ)
২.কাউকে পছন্দ হওয়াটা এবং তাকে এটা জানানো মানেই কি সম্পর্কে যাওয়া?

৩.মূলত,যখন কোনো ম্যাট্রিমনি বায়োডাটা তে দেখি যে,তিক্ত অতীত নেই বা হারাম সম্পর্কে ছিল  এমন কেউ নক করবেননা লিখা থাকে। তখন প্রশ্ন আসে যে,আমি কি ছিলাম?
যা ছিল,তা তাহলে কী ছিল?
৪. আমার  পরিবারকে কী ঐসব বায়োডাটা তে নক করতে বলা ঠিক হবে? যদিও আমি পড়েছিলাম যে,গুনাহের কারণে অনুতপ্ত হলে,সে যদি চায় কেউ না জানুক, তাহলে সে যেন নিজেও কাউকে বলা থেকে বিরত থাকে!

৫.কিন্তু,এটা কি ধোকা হবে? যদি না জানিয়ে নক দেওয়াই?

৬.সবকিছু অনেক আগেই পেছনে ফেলে এসেছি আলহামদুলিল্লাহ। এখন আমি শুধু প্রকৃত ইসলাম পালনে মনোযোগ দিয়ে যাচ্ছি এবং পর্দা সহ সকল নীতি পালনে চেষ্টায় আছি যা৷ আল্লাহ পছন্দ করেন। এখন কী করা উচিত?

আল্লাহ মাফ করুন!

1 Answer

0 votes
by (612,210 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

বিবাহ পূর্ব প্রেম পুরোপুরি নাজায়েজ।    
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ   
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
হ্যাঁ, আপনি সম্পর্কে ছিলেন।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এটি প্রেম,যেটাকে সম্পর্কও বলে।

(কাউকে পছন্দ হওয়া এবং তাকে এটা জানানো,এরপর তার সাথে একাধিক মাস ফোনে কথা বলা,মেসেজিং করা এটিকে তো প্রেম তথা হারাম সম্পর্কই বলে।
এটিকে তো জায়েজ বলা যায়না।)

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার মনের মধ্যে যদি তাকে নিয়ে ভালো লাগা কাজ করে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনি কিছুদিনের জন্যে হলেও হারাম সম্পর্কে ছিলেন।

(০৪)
যেহেতু আপনি খালেস দিলে তওবা করে ফিরে এসেছেন,সুতরাং আপনার পরিবারকে ঐসব বায়োডাটা তে নক করতে বলতে পারবেন।

আরো জানুনঃ- 

(০৫)
এতে কিছুটা ধোকার আশ্রয় হবে।
তাই এমতাবস্থায় যেহেতু অন্তরে সর্বদা নিজেকে প্রতারক মনে হবে, তাই এমন পাত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়াই উচিৎ।

(০৬)
আপনি পূর্ণ ইসলাম মেনে চলুন,দ্বীনদার পাত্রের সাথে বিবাহের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যান,ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা আপনাকে নিরাশ করবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...