আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)

আসসালামু আলাইকুম 
 

১) নাবালেগদের গুনাহ লিখা হয় না। এখন আমি যখন নাবালেগ ছিলাম তখন আমি অনেক নাবালেগের দ্বারা জুলুমের শিকার হয়েছি। যেহেতু জুলুমও বড় গুনাহ আর স্বাভাবিকভাবে মাজলুম ক্ষমা না করলে জালেম ক্ষমা প্রাপ্ত হয় না। তাহলে নাবালেগ সেসকল জালেমদের ক্ষেত্রে কি বিধান হবে?

 

২) নাবালেগ থাকাকালীন সময়ের কথা আমরা তিনজন নাবালেগ ছিলাম তবে বয়সের পার্থক্য ছিল। আমি ছোটবেলায় সহজ সরল ছিলাম। এখন একজন আরেকজনের একটি বস্তু লুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু আমি তা জেনে ফেলি পরবর্তীতে সে আমাকে জানায় যে আমি যেন এ ব্যাপারে কিছু না বলি সে মজা করছে। কিন্তুু পরে সে নিজেই আমাকে ফাসিয়ে দেয় এ দরুন বছরখানেক মাঝে মধ্যে এ চুরির খোটা শুনতে হয়েছিল পরিবার থেকে। আর ওটা গ্রামে ঘটেছিল তাই অনেকের সামনে আমি লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলাম। এগুলো কি জুলুমের অন্তর্ভুক্ত হবে না? যেই নাবেলগ আমাকে ফাসিয়ে দিয়েছিল তার কি এজন্য গুনাহ হবে না বা আখিরাতে শাস্তির আওতাভুক্ত হবে না। যদিও উক্ত ঘটনার কয়েক মাস পর আমি বালেগ হয়েছিলাম


 

৩) নাবেলগ থাকাকালীন আমার উপর ঘরের বিভিন্ন বস্তু নষ্টের দোষ ফেলানো হয়েছে যা আমি নিজে করিনি তা আমার ছোটভাই সম্ভবত করেছিল। তবে সে মার সামনে স্বীকার করেনি। কিন্তুু আমার মা উক্ত বস্তুগুলো নষ্টের জন্য আমাকে দায়ী করেছে। এতে আমার উপর আমার মা ভাই উভয়ই কি জুলুম করেনি? 


 

৪) নাবালেগ থাকাকালীন আমি একজনের বাসা থেকে ছোট্ট একটি শোপিস খেলনা ধরনের নিয়ে এসেছিলাম পরে আমি আমার ভুল বুঝতে পেরে সেই জিনিসটি ফেলে দিই। ওইটার দাম কেমন হতে পারে তা আমার একদম অজানা। এখন আমার কি এজন্য কোনো অর্থ দান করতে হবে? কেউ যদি কখনো আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি কখনো চুরি করেছিলাম কিনা তাহলে এক্ষেত্রে কি বলবো? যেহেতু এটা নাবালেগ থাকাকালীন সময়ে হয়েছে। 

 

জাযাকাল্লাহু খাইরান






 

1 Answer

0 votes
by (612,540 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

বালেগ হওয়ার পূর্বে কৃত গুনাহের ক্ষেত্রে যেহেতু সে মুকাল্লাফ হয়নি,তাই এক্ষেত্রে তার গুনাহ হবেনা। তার উপর কোনো শাস্তিও আরোপ করা হবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَبْلُغَ وَعَنِ الْمَعْتُوهِ حَتَّى يعقل

‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন ব্যক্তি (কিয়ামত দিবসে) দায়-দায়িত্বমুক্ত। ঘুমন্ত ব্যক্তি জেগে না ওঠা পর্যন্ত, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালেগ না হওয়া পর্যন্ত এবং নির্বোধ ব্যক্তি (বুদ্ধি-বিবেচনার) জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত।
(সহীহ : তিরমিযী ১৪২৩, আবূ দাঊদ ৪৪০৩।)

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا, عَنْ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ, وَعَنِ الصَّغِيرِ حَتَّى يَكْبُرَ, وَعَنِ الْمَجْنُونِ حَتَّى يَعْقِلَ, أَوْ يَفِيقَ».

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছেঃ ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ, যতক্ষণ না সে বালেগ হয় এবং পাগল, যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়।

(আবূ দাউদ ৪৩৯৮, নাসায়ী ৩৪৩২, ইবনু মাজাহ ২০৪১, আহমাদ ২৪১৭৩, ২৪১৮২, দারেমী ২২৯৬।)

আরো জানুনঃ- 

বালেগ হওয়ার পূর্বে কৃত গুনাহের ক্ষেত্রে যেহেতু সে মুকাল্লাফ হয়নি,তাই এক্ষেত্রে তার গুনাহ হবেনা। তার উপর কোনো শাস্তিও আরোপ করা হবেনা।

তবে কেউ কেউ বলেছেন যে বালেগ হওয়ার পূর্বে কোনো গুনাহ করলে তার উপর কোনো শাস্তি আরোপ করা না হলেও সেই গুনাহ আমলনামায় লেখা হয়।

তবে আর্থিক ভাবে কোনো বান্দার হক নষ্ট করলে 
সেক্ষেত্রে তার অভিভাবক সেটি আদায় করবে,অথবা সে বা তার অভিভাবক ক্ষমা চাইবে।

অর্থাৎ সন্তান আর্থিক ভাবে কোনো বান্দার হক নষ্ট করলে সেক্ষেত্রে তার অভিভাবক সেটি আদায় করবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক জালেম মাজলুম থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়ার পরামর্শ থাকবে ।

(০২)
সে যেহেতু নাবালেগ ছিলো,তাই তার গুনাহ হবেনা। 

তদুপরি সে আপনার থেকে ক্ষমা চেয়ে নিবে।

(০৩)
হ্যাঁ, তারা উভয়েই আপনার উপর জুলুম করেছে।

(০৪)
ঐটার দাম তখনকার বাজারে কেমন আসতে পারে, সে পরিমাণ টাকা আপনি তাদেরকে ফেরত দিয়ে আসবেন।

অথবা তাদের মোবাইলে ফ্ল্যাক্সিলোড করে দিবেন বা তাদের বিকাশে বা ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (39 points)
জাযাকাল্লাহু খাইরান 

হুজুর ৪ নং প্রশ্ন অনুযায়ী আমি তখন নিজেও নাবালেগ ছিলাম তাহলে আমি যে জুলুম করেছি আমি তার মূল্য কেন দিবো যেহেতু নাবালেগের গুনাহ হয় না। 
by (612,540 points)
নাবালেক অবস্থায় কারো আর্থিক হক নষ্ট করে থাকলে তার বাবা মাকে সেই হক আদায় করতে হবে।

তার বাবা-মা সে সময় উক্ত হক আদায় না করে থাকলে পরবর্তীতে তার বাবা-মাকে আদায় করতে হবে।

পরবর্তীতে ও বাবা মা আদায় না করে থাকলে সন্তান এটা বাবা-মার পক্ষ থেকে আদায় করে দিবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...