আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
56 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
السلام عليكم و رحمة الله و بركاته
উস্তায আমি কিছুদিন পূর্বে স্বপ্নে দেখি-
১. আমরা পরিবারের সবাই লঞ্চে করে কোথাও একটা যাচ্ছি। লঞ্চ ঘাটে আসলে পরিবারের সবাই নেমে গেলেও আমি নামতে পারিনি। আমি নেমে যাওয়ার পূর্ব মূহুর্তে লঞ্চ ঘাট ছেড়ে দেয়। আমি খুব চিন্তিত। পরের ঘাটে লঞ্চ আসলেই আমি নেমে যাই। যেখানে নামি সেখান থেকে আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে আসতে আবার একটি নদী পাড় করতে হবে। তো সেখানে অনেকেই নদীর এপার থেকে ওপার যাচ্ছে ছোট নৌকায় করে। আমি আর দুজন আন্টি একটা নৌকায় উঠি নদী পার করার জন্য, উঠার পরই দেখি নৌকা ডুবে যাচ্ছে, তাই দ্রুত নেমে যাই। নদীতে তখন ভরা কটাল, অনেক পানি এবং স্রোত। এরপর আমি আমি কীভাবে নদী পার হবো ভাবতে ছিলাম আর কাদতেছিলাম,কেননা তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। এরপর একজন ছেলে খুব ছোট এবং ভাঙা একটি নৌকা নিয়ে আমার কাছে আসে এবং বলে সে নদী পার করে দিবে আমাকে। আমিও আশ্বস্ত হয়ে তার সেই ছোট নৌকায় উঠি। এরপর খুব ইজিলি নদী পাড় করে দেয় আমাকে।
তীরে এসে দেখি আমার ভাইয়া দাড়িয়ে আছে আমার জন্য। আমাকে ভাইয়া রাস্তার পাশে একজায়গায় বসিয়ে আদর করে দিচ্ছিলেন আর বলছিলেন আমি তো আছি। তোমার জন্য আমি এ ঘাটে চলে আসছি। বাকিদের বাসায় রেখে আসছি।
এরপর ভাইয়া আমাকে আঙুর খাওয়াইয়া দিচ্ছিলেন ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি তাই। সেখানের পরিবেশ খুবই মনোরম, শান্ত এবং স্নিগ্ধ। লোকজন তাদের প্রয়োজনে আসা যাওয়া করছিলেন
এরপর ভাইয়াকে জিজ্ঞেস লরছিলাম আমরা বাসায় যাব কিভাবে? ভাইয়া একটা রাস্তা দেখিয়ে বললেন এ রাস্তা দিয়ে যাব। রাস্তাটা দেখতে অন্নেক সুন্দর ছিল। পিচঢালাই রাস্তা দুপাশে সুন্দর খেজুর গাছ মেইবি। আমি মনে মনে ভাবছিলাম এই এলাকা এতো সুন্দর! একদম আমার স্বপ্নের মতো। মদিনার খেজুর বাগানের মতো ছিল কিছুটা। এরপরই ঘুম ভেঙে যায়।

২. গতোকাল স্বপ্নে দেখি আমার ভাইয়া অস্ট্রেলিয়া বা আমেরিকা যাবে পিএইচডি করতে। সকল কিছু রেডি শুধু বাসা থেকে বের হওয়া বাকি। ওদিকে আমার আরেকভাইয়া অপেক্ষা করছেন কখন বড়োভাইয়া আমেরিকা যাবেন!
ভাইয়া বের হবে কিন্তু ভাইয়ার ছেলে মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে যাবেন নয়ত ওরা কান্নাকাটি করবে। তাই আমি মেয়ে বাবুকে ঘুম পাড়িয়ে ওর পাশে শুয়ে ছিলাম আর আমার ভাবি বড়ো বাবুকে ঘুম পারিয়ে সেখানে ছিলেন। কিন্তু ভাইয়া কেন যেন যেতে পারছেন না ওদের রেখে।
এরপর ভাইয়া বাসা থেকে বের হচ্ছেন। তখন বাবুরা উঠে যায় আর বাবা বাবা করতে ছিল। এরপর ওদের সাথে নিয়েই এগিয়ে দিচ্ছিলাম ভাইয়াকে। পথিমধ্যে দেখি বাচ্চারা মক্তবে পড়তে যাচ্ছে তখনই ঘুম ভেঙে যায়। স্বপ্ন আরও লম্বা ছিল স্পষ্ট এইটুকুই মনে আছে।
বি.দ্র: আমার ভাইয়ার পিএইচডি করার ইচ্ছে নাই

৩. আজকে স্বপ্নে দেখি আমার কাজিনের বিয়ে (চাচাতো ভাইয়ের)। উনার বউ এনে আমাদের বাসায় রেখেছি। লাল রঙের বেনারশি পড়া অবস্থায়ই ভাবি শুয়ে ছিলেন। রুম সাজাব এজন্য ফিতাসহ সব কিছু গুছাচ্ছিলাম। এরমধ্যে আমার কাজিন বলে এই রাফি তোর আর রুম সাজানো লাগবে না আমাকে যেতে দে। আমি ভাইয়াকে না বলি।
এরপর বলি এখনও লুঙ্গি পরে নরমাল লুকেই আছেন! আপনি যে একজন বুয়েটের প্রোগ্রাম অফিসার বুঝাই যায় না।
এটা ভাইয়া শুনে হেসে ফেলে আর বলে বাড়ি আসছি এজন্য রে।
এরপরই ঘুম ভেঙে যায়।
বি. দ্র: বাস্তবে আমার কাজিন বিবাহিত। তিনজন ছেলেও আছে। আর উনার সাথে সালাম বিনিময় + কেমন আছেন এটুকু জিজ্ঞেস করা/এটুকুর রিপ্লাই করা ছাড়া কখনও কথাই বলি না।

৪. আমি স্বপ্নে দেখি আমাদের পুকুরে মাছ ধরতেছি বরশী দিয়ে

৫. আমি প্রচুর নরমাল + অর্থবহ স্বপ্ন দেখি। যা দেখি তা অলমোস্ট সব সত্য হয়। নরমাল স্বপ্ন ভেবে ব্যাখ্যা জানতে চাই না। আবার সময় নিয়ে লিখতেও ইচ্ছে করে না। আমার প্রশ্ন-
(ক) স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানা কী জরুরি? ব্যাখ্যা না জানলে কী স্বপ্নের কল্যাণকর বিষয়গুলো আমার জীবনে ঘটবে না?

(খ) অর্থবহ স্বপ্ন মাঝে মাঝে খুশী হয়ে এমনকাউকে বলে দেই যিনি আমাকে প্রচুউউউউর হিংসা করেন।
ভালো স্বপ্নগুলোর উপরেও কী হিংসার ফলে বদনজর লাগতে পারে?

(গ) আগে সকল স্বপ্ন হুবহু মনে রাখতে পারতাম। ইদানিং ভুলো যাচ্ছি। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি কিছুই দেখিনি। স্বপ্নে যাতে না ভুলে যাই এজন্য কী করতে পারি? কেননা স্বপ্ন হচ্ছে নবুয়াতের ৪৬ ভাগের এক ভাগ। স্বপ্নে অনেক বিষয়ে ইঙ্গিত পাই। এখন সে স্বপ্ন যদি মনে রাখতে না পারি সেটা তো ভালো কিছু না।

جزاك الله خيرا في الدنيا والأخرة

1 Answer

0 votes
by (611,730 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ تَكَدْ رُؤْيَا الْمُسْلِمِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُكُمْ رُؤْيَا أَصْدَقُكُمْ حَدِيثًا وَرُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ خَمْسٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَالرُّؤْيَا ثَلاَثَةٌ فَرُؤْيَا الصَّالِحَةِ بُشْرَى مِنَ اللَّهِ وَرُؤْيَا تَحْزِينٌ مِنَ الشَّيْطَانِ وَرُؤْيَا مِمَّا يُحَدِّثُ الْمَرْءُ نَفْسَهُ فَإِنْ رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا النَّاسَ "
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমার আল-মাক্কী (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যুগ ও সময় (কিয়ামাতের) সন্নিকটে হয়ে আসবে তখন প্রায়শ (খাঁটি) মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হবে না। তোমাদের (মাঝে) অধিক সত্যভাষী লোক সর্বাধিক সত্য (ও বাস্তব) স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। আর মুসলিমের স্বপ্ন নুবুওয়াতের পয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন তিন (প্রকার)- ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে সুসংবাদ (বাহক)। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে (এবং ভাবনা-চিন্তা করে) তা থেকে (উদ্ভূত)।

অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু (স্বপ্ন) দর্শন করে- যা সে পছন্দ করে না, তাহলে সে যেন (ঘুম থেকে) উঠে দাঁড়ায় এবং সলাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করে আর মানুষের নিকট সে (স্বপ্নের) কথা গোপন রাখে।
(মুসলিম ৫৭৯৮, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৭০৮, ইসলামিক সেন্টার ৫৭৪০)

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১-৩)
প্রশ্নের উল্লেখিত স্বপ্ন গুলি আপনার মনের কল্পনা প্রসূত বলেই মনে হচ্ছে, সুতরাং এক্ষেত্রে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, কোন সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ।

(০৪)
স্বপ্নে মাছ দেখার অর্থ হল, নিয়ামত পাওয়া,বরকত প্রাপ্ত হওয়া। 
আপনি যেহেতু স্বপ্নে নিজে মাছ ধরতে দেখেছেন,সুতরাং আপনি নিয়ামত ও বরকত প্রাপ্ত পাবেন,ইনশাআল্লাহ । 

আরো জানুনঃ- 

(০৫)
(ক) স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানা জরুরি নয়।

ব্যাখ্যা না জানলেও স্বপ্নের কল্যাণকর বিষয়গুলো আপনার জীবনে ঘটবে।

খ, এক্ষেত্রে বদনজর লাগবেনা।
তবে স্বপ্নের কথা শেয়ার না করাই ভালো।
কেননা এতে সে মন্দ ব্যখ্যা করলে সেই মন্দ ব্যখ্যাও বাস্তবায়ন হয়ে যেতে পারে।

গ, এক্ষেত্রে কোনো কিছু করার প্রয়োজনীয়তা নেই। এটাকে এতো গুরুত্ব না দেয়ার পরামর্শ থাকবে। 
নিজের ঈমান আমলের পিছনে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ রইলো। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 176 views
+1 vote
1 answer 197 views
...