আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
১,বর্তমান বিশ্বের দিকে তাকালে বুঝা যায় আমেরিকা ইসরায়েলের সাথে হাত মিলিয়ে মুসলিমদের মেরে দাজ্জালের জন্য পথটা সহজ করছে,  এতে কি আমেরিকা বা ইউরোপ কান্ট্রির ছেলেকে বিবাহ(যদি দ্বীনদার হয়) করা যাবে?

২,ইতিকাফ অবস্থায় একদিন মা দরজায় তালা দিতে ভুলে গেছে, এ অবস্থায় রাতে বারোটা বাজে দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম মনে হলো, তাৎক্ষণিক গিয়ে দেখি দরজায় তালা নেই, আর দরজার অবস্থা এমন, যে কেউ খুব সহজে খুলতে পারবে।মা-বাবা ঘুমাচ্ছে, তখন আমি দরজায় তালা দিই আর কিছুটা ভয়ে ছিলাম।এজন্য পুরো ঘরে লাইট মেরে চেক করেছি যে কেউ ঘরে ঢুকেছে কিনা..এতে কি আমার ইতিকাফ  হবে না?

৩,আবার আমি IRCএর সাজেশন অনুযায়ী রুকইয়ার গোসল করেছি,প্রতি রাতে। যেহেতু আপনারা বলেছেন ইতিকাফ অবস্থায় গোসল করা আবশ্যক নয়, এতে কি আমার ইতিকাফ হবে না?

৪,আমি আবার আমার ইতিকাফের রুম ও ঝাড়ু দিয়েছি, মা ঝাড়ু দিলে ময়লা থেকে যায় এজন্য  পাশের রুম থেকে ঝাড়ু এনে নিজেই ইতিকাফের রুম ঝাড়ু দিতাম, এমন করলেও কি ইতিকাফ হবে না?

৫,আর শেষ ২৯ রমাদানের ফজরের আগে আমার হায়েজ শুরু হয়,এতে কি আমি একদিন ইতিকাফ কাজা করবো? করলে কিভাবে করবো বললে ভালো হতো।

৬,গতবছরও আমি ইতিকাফে বসেছি, সকাল বেলা ইশরাকের আগে আমার ঘুম আসে দেখে আমি ছাঁদে গিয়ে হাঁটতাম,ঘর ঝাড়ু দিতাম( তখন আমি জানতাম না যে এসব করলে ইতিকাফ হবে না)। এখন গতবছরের ইতিকাফ কিভাবে কাজা করবো?

1 Answer

0 votes
by (612,390 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
বিবাহ করা যাবে।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْحَاقَ - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتِ السُّنَّةُ عَلَى الْمُعْتَكِفِ أَنْ لاَ يَعُودَ مَرِيضًا وَلاَ يَشْهَدَ جَنَازَةً وَلاَ يَمَسَّ امْرَأَةً وَلاَ يُبَاشِرَهَا وَلاَ يَخْرُجَ لِحَاجَةٍ إِلاَّ لِمَا لاَ بُدَّ مِنْهُ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ بِصَوْمٍ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ فِي مَسْجِدٍ جَامِعٍ

ওয়াহব  ইবন  বাকীয়্যা ......... আয়েশা  (রাঃ)  হতে  বর্ণিত।  তিনি বলেন,  ই‘তিকাফের  জন্য  সুন্নাত  এই  যে,  সে  যেন  কোন  রোগীর  পরিচর্যার  জন্য  গমন  না  করে,  জানাযার  নামাযে  শরীক  না  হয়,  স্ত্রীকে  স্পর্শ  না  করে  এবং  তার  সাথে  সহবাস  না  করে।  আর  সে  যেন  বিশেষ  প্রয়োজন  ব্যতীত  মসজিদ  হতে  বের  না  হয়।  রোযা  ব্যতীত  ই‘তিকাফ  নেই  এবং  জামে  মসজিদ  ব্যতীত  ই‘তিকাফ  শুদ্ধ  নয়।

(আবু দাউদ ২৪৬৫)

ইতেকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সকল বিষয় থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। এতেকাফ ঈমান বৃদ্ধির একটি মূখ্য সুযোগ। সকলের উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ঈমানী চেতনাকে প্রাণিত করে তোলা ও উন্নতর পর্যায়ে পৌছেঁ দেয়ার চেষ্টা করা।
কুরআনুল কারিমে বিভিন্নভাবে ইতেকাফ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, আমি ইবরাহীম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, এতেকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো। (বাকারাহ-125)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, তোমরা মসজিদে এতেকাফ কালে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না। (বাকারাহ-187)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসংখ্য হাদীস এতেকাফ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্য হতে কিছু হাদীস নিচে উল্লেখ করা হল:
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন। (বুখারি-2025)
রসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজানের শেষের দশকে এতেকাফ করেছেন, ইন্তেকাল পর্যন্ত। এরপর তাঁর স্ত্রী গণ এতেকাফ করেছেন। (বুখারি-2026)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজানে দশ দিন এতেকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি পরলোকগত হন, সে বছর তিনি বিশ দিন এতেকাফে কাটান। (তিরমিযী-808)

উত্তম হল নফল ইবাদত বেশী বেশী করা। যেমন সলাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল তথা সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, তাওবাহ-ইস্তেগফার, দু‘আ, দুরূদ ইত্যাদি ইবাদতে সর্বাধিক সময় মশগুল থাকা। 

তাছাড়া শরীয়া বিষয়ক ইলম চর্চা করা।
পার্থিব ব্যাপারে কথাবার্তা বলা, অনর্থক গল্পগুজব ও আলোচনা থেকে বিরত থাকা উচিত, তবে পারিবারিক কল্যাণর্থে বৈধ কোন বিষয়ে অল্পস্বল্প কথাবার্তা বলার মধ্যে কোন দোষ নেই।

ইতিকাফ যে সকল কারণে ভঙ্গ হয়ে যায় তা হলো :
১. স্বেচ্ছায় বিনা প্রয়োজনে মাসজিদ থেকে বের হলে।
২. কোন শিরক বা কুফরী কাজ করলে।
৩. পাগল বা বেঁহুশ হয়ে গেলে।
৪. নারীদের হায়েয-নিফাস শুরু হয়ে গেলে।
৫. স্ত্রীসহবাস বা যে কোন প্রকার যৌনসম্ভোগ করলে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এটি আপনার রুমের দরজা হয়ে থাকলে ইতিকাফ ভেঙে যায়নি।

অন্য দরজা বা মেইন গেট এর দরজা হয়ে থাকলে আপনার ইতেকাফ ভেঙে গিয়েছে।

(০৩)
আপনি যদি ইতিকাফ অবস্থায় উলামায়ের কেরামদের বলে দেয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে গোসল করে থাকেন,সেক্ষেত্রে ইতেকাফ ভেঙে যায়নি।

অন্যথায় ইতেকাফ ভেঙে গিয়েছে। 

উক্ত পদ্ধতি সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৪)
উক্ত বিবরণ মতে ইতেকাফ ভেঙে যাবেনা।
তবে আপনি ঝাড়ু তাদেরকে আপনার দরজার পাশে রেখে যেতে বলতে পারতেন।
যাতে ঝাড়ু নিতে আপনার অন্য রুমে না যেতে হয়।

(০৫)
হ্যাঁ এক দিন এক রাতের ইতেকাফের কাজা আদায় করবেন।
সেদিন রোযাও রাখতে হবে।

যেমন কোনো একদিন মাগরিবের সময় সুন্নাত ইতেকাফের কাজার নিয়তে ঘরে প্রবেশ করবেন। পরদিন যেকোনো রোযা রাখবেন।
এরপর মাগরিবের সময় বা মাগরিবের পর ঘর থেকে বের হবেন।

(০৬)
হ্যাঁ, কাজা করতে হবে।
এক্ষেত্রেও এক দিন এক রাতের ইতেকাফের কাজা আদায় করবেন।
দিনের বেলা রোযাও রাখতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...