আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
in পবিত্রতা (Purity) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম

১)আমাদের ঘরের জায়নামাজগুলো নাপাকি না লাগলেও আমার আম্মা এগুলো ধুয়ে দেন,এখন উনি বাথরুমে যখন ধুয়ে দেন আমার ধারণা তখন কোনো না কোনো নাপাকি লাগবেই,কেননা উনি ফ্লোরে রেখেও ধুতে পারেন,আর আমার আম্মা কাপড় বা জায়নামাজ ধুয়ে দিলেও উনি সেটাকে চিপে পানি বের করেন না কারণ উনার হাতে সমস্যা বা পাক নাপাকির ওসব খুব একটা জানেন না,এখন আম্মার ধোয়া জায়নামাজ যেগুলো এম্নিতেই ধুয়ে শুকানো ওগুলোতেই আমরা আজীবন নামাজ পড়েই আসছি আমাদের সেই নামাজগুলো কি হয়নি?

২)বাড়িতে মেহমান আসলে তারাও পাক নাপাকি বুঝেন না,এজন্য তাদেরকে জায়নামাজ দিলে তারা জায়নামাজে নাপাকি নিয়েও নামাজ পড়তে পারেন,আমি যতটুকু জানি বা দেখেছি তারা বাথরুমে যেকোনোভাবে ওজু করে চলে আসেন,নাপাকির ছিটা অন্তত তাদের থাকতে পারে কাপড়ে বা হাতে পায়ে,এবং বাথরুমের বাইরের পাপোষ বা কার্পেট ওগুলোতে নাপাকি থাকে সেখানে তারা পা দিয়ে আবার জায়নামাজে এসে নামাজ পড়েন,আমার প্রশ্ন তাদের এভাবে নামাজ পড়ার কারণে তাদের হাত পায়ের নাপাক পানি জায়নামাজে লাগার কারণে জায়নামাজ কি নাপাক হয়নি?

৩)আমি কখনো জায়নামাজ ধুই নি,কিন্তু সেদিন আমি জায়নামাজ ভিজিয়েছি সেটা নাপাক ই আমি বুঝতে পারছি,২ বার আমি সেটাকে ধুয়ে চিপে পানি বের করেছি কিন্তু সেই দুইবারেও মনে হয়েছে নাপাকি লেগে গেছে ছিটেফোটা তাই তৃতীয় বারে আমি ডুবিয়ে রেখেছি বেশি পানি দিয়ে তারপর সেটাকে যতটা সম্ভব চিপে পানি বের করার চেষ্টা করেছি।জায়নামাজ তো একা পুরো চিপে নিংড়িয়ে পানি বের করতে পারবো না তাই যতটা পেরেছি করেছি।
আমি জেনেছিলাম একবার যেকোনো নাপাকি কাপড় ভালো করে ডুবিয়ে ধুইলেই পবিত্র হয়ে যায় তাই তৃতীয় বার ভালো করে ডুবিয়ে রেখেছিলাম বাল্টিতে বেশি পানি দিয়ে, জায়নামাজ ডুবে যাতে এর উপরে পানি থাকে এরকম।
এখন আমার এইভাবে ধোয়ায় কি সেটা পাক হয়নি?

৪)আমি দেখেছি নাপাকি চুষে নিলে নাকি আর পবিত্র হয় না,আর জায়নামাজের ধোয়ার নিয়মও নাকি আলাদা কিন্ত এসব তো আমি জানতাম না।আমি ৩ বার ধুলেও একবার শেষের দিকে এভাবেই ভালো করে ধুয়েছি এখন এই জায়নামাজে কি নামাজ পড়লে নামাজ হবে না?

৫)জায়নামাজের এই বিষয়ে আমি অনেক পেরেশান হয়ে আছি,আমাদের ঘরের সকল জায়নামাজ ই তো এমন,আম্মার ধুয়া,আর ১ টা আমার ধোয়া।যেকোনো কিছুতে নাপাকি লাগলে পানিজাতীয় নাপাকি সেটা তো চুষে নিবেই কাপড় হোক বা জায়নামাজ এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার তাহলে এটা কেনো আর কখনো পবিত্র হবেনা?আই ফতোয়াতেই দেখেছি একজন ইমাম বলেছেন এটা যে নাপাকি চুষে নিলে আর পবিত্র করা যায় না।

আমাদের ঘরে অনেক গুলো জায়নামাজ এখন সেগুলো কীভাবে পবিত্র করতে পারি।সবগুলোকেই আমার নাপাক মনে হয় কারণ আমার আম্মা সেগুলোকে ধুয়েছেন উনার স্টাইলেই,আর মেহমান দ্বারাও সেটা নাপাক হয়েছে।এখন আমার করনীয় কী?

৬)আমাদের একটা মকমল কাপড়ের কম্বলের কাপড়ের মতো জায়নামাজ আছে সেটাকেও আম্মা বাথ্রুমে ধুয়েছেন ওটা তো চিপাও সম্ভব না এম্নেই ধুয়ে রোদে শুকায় ফেলছেন এতে কি ওটা নাপাক রয়ে গেছে?

৭) আমাদের পুরো ঘরে পানিকাপড় জাতীয় কার্পেট বিছানো যেগুলো টেবিল ক্লথ হিসেবেও থাকে ওরকম কার্পেট।এখন ওটাতে৷ নাপাকি লেগে গেলে শুকিয়ে গেলে আমি মনে করি পাক হয়ে গেছে।তাই ওখানে নামাজও পড়ি আবার শুকানোএ পর ভেজা পা নিয়েও চলাফেরা করি নামাজ পড়ি জায়নামাজ বিছিয়েই।এখন এই কার্পেট শুকানোর পর ভেজা লেগে গেলেও নাপাক আর হবে কি?

৮)এই কার্পেটে বা কোথাও যদি নাপাকি থাকে আর জায়নামাজের নিচের অংশে সেটা লেগে যায় তাতেও জায়নামাজ নাপাক হয়ে যাবে?কারণ জায়গা নাপাক হলেও তো যেকোনো কিছু বিছিয়ে নামাজ পড়া যায়,নাপাক জায়গায় যা বিছিয়ে নামাজ পড়া হয়েছে সেটাও তো নাপাক হয়ে যাবে তাই না?

~আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবেন প্লিজ,আমি খুব পেরেশানিতে আছি এসব নিয়ে।

1 Answer

0 votes
by (611,730 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো পাক জিনিসকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।
যাহা নিম্নোক্ত হাদীস থেকে প্রমানিত হয়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح : 

‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,

اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ
ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ} 

ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]
মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।
হাদীসটি এই, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয়।এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়,যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে।(আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)............ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/293

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
(০১)
আপনাদের সে নামাজগুলি আদায় হয়েছে।

(০২)
সেই জায়নামাজে নাপাকি লেগেছে এ বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত না হলে জায়নামাজটিকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।

(০৩)
সেটি পাক।

(০৪)
উক্ত জায়নামাজে নামাজ পড়লে নামাজ হবে।

(৫-৬)
সেই জায়নামাজে নাপাকি লেগেছে এ বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত না হলে জায়নামাজটিকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।

(০৭)
এই কার্পেটে যদি সত্যিই নাপাকি লেগে থাকে,সেক্ষেত্রে উহা পাক করার আগ পর্যন্ত শুকানোর পরেও নাপাক থাকবে,পুনরায়  ভেজা লেগে গেলেও নাপাক থাকবে।

(০৮)
হ্যাঁ, নামাজ হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (4 points)
reshown by
নাপাক পাপোষে তারা পা মুছে বা হাতে নাপাকি লাগবে এটা আমার ধারণা। যদি সত্যিই লেগে থাকে তাহলে? 
আর জায়নামাজ কীভাবে পাক করতে হয় সেই নিয়ম জানতে চাই।
আর কার্পেটে তো নাপাকি শুকানোর পর আমরা ভেজা অজুর পানি পায়ে নিয়ে কার্পেটে হেটেছি তারপর নামাজও পড়েছি আমি ভেবেছিলাম কার্পেট শুকিয়ে গেলে আর নাপাক থাকবে না।এটা ভেবেই ভেজা পা নিয়েই হেটেছি এখন কি আমার নামাজগুলো হয়নি।কার্পেটে ভেজা নাপাকি লাগলে বা দাগ থাকলে সেটা পবিত্র করার উপায় কি?ভেজা নাপাকি শুকিয়ে গেলে আবার ভেজা পা লাগলে নাপাক হয়ে যায় সেটা? কার্পেটের ধরণ তো টেবিল ক্লথের মতোই যেগুলো পুরো ঘরে বিছানো থাকে টাইলসের বদলে যেগুলো বিছানো হয়।ফ্লোর রেক্সিন বলে যেগুলোকে ওগুলোতে নাপাক পানিজাতীয় কিছু শুকিয়ে গেলে আবার ভেজা পা লাগলে পা নাপাক হয়ে যাবে সাথে সেই ফ্লোর রেক্সিনও নাপাক হয়ে যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 164 views
...