আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (16 points)
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ,

উস্তায সতর্কতামূলক আমার বিয়ে নবায়ন করতে বলা হয়েছিলো, ৫দিন পর আয়োজন করে আমাকে স্বামীরবাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে, চাচ্ছিলাম ওইদিনই নবায়ন করতে । তো একটু নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করলে মুনাসিব,

১) আমার স্বামী বিয়ে পড়াবেন (তিনি ইমাম), ৫০০/১০০০৳ অথবা কয়েকটা বই নতুন মোহরানা হিসেেব ধার্য করা যাবে?

২) বিভিন্ন কারনে বিয়ে নবায়ন গোপনে করতে হচ্ছে, এতে আমার ২ভাই (কাজিন), বয়স ২৪ আরেকজন ২০বছর । এই ২জন সাক্ষী হিসেবে থাকতে পারবে? (দ্বীনের ব্যাসিক জ্ঞান আছে এদের, তবে কম মানে) ।

৩) কনে যে ইজাব কবুল বা সম্মতি প্রদান করে তা আমার নিকট এসে জিজ্ঞেস করার মতো কেউ নেই (সাক্ষী ভাইয়েরা নন মাহরাম),, তাই আমি মেসেজ/কলে স্বামীকে সম্মতি প্রদান করতে পারবো? (যেহেতু স্বামী বিয়ে পড়াবেন)

একটু বিস্তারিত জানালে মুনাসিব উস্তায, ভীষণ চিন্তা লাগছে

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মোহরানা আদায় করা ফরজ।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

فَمَا اسْتَمْتَعْتُم بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُم بِهِ مِن بَعْدِ الْفَرِيضَةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:٢٤] 

অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা গ্রহণ করবে,তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। [সূরা নিসা-২৪] 


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

واتوا النساء صدقاتهن نحلة فان طبن لكم عن شيئ منه نفسا فكلوا هنيئا مرئيا

এবং তোমরা নারীদেরকে দাও তাদের মোহর খুশিমনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় স্বাগ্রহে ছেড়ে  দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য তাহলে তা স্বচ্ছন্দে ভোগ কর।-সূরা নিসা : ৪

এই আয়াতের প্রধান কয়েকটি শিক্ষা ও বিধান এই :

১. মোহর আদায় করা ফরয। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা মোহর আদায়ের আদেশ করেছেন।

২. মোহর সম্পূর্ণরূপে নারীর প্রাপ্য। তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ছাড়া অন্য কারো তাতে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। সুতরাং স্বামী যেমন স্ত্রীকে মোহর থেকে বঞ্চিত করতে, কিংবা পরিশোধ করার পর ফেরত নিতে পারে না তেমনি পিতা-মাতা, ভাইবোন বা অন্য কেউ নিজ কন্যার, বোনের বা আত্মীয়ার মোহর তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ছাড়া নিতে পারে না। নিলে তা হবে কুরআনের ভাষায় ‘আক্ল বিল বাতিল’ তথা অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করা।

৩. মুমিনের কর্তব্য খুশিমনে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে স্ত্রীর মোহর আদায় করা। কারো অনুরোধ-উপরোধ বা জোর-জবরদস্তির অপেক্ষায় থাকা কুরআনী শিক্ষার পরিপন্থী ও অতি নিন্দনীয় প্রবণতা।

৪. স্ত্রী যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মোহরের কিছু অংশ ছেড়ে দেয় কিংবা গ্রহণ করার পর স্বামীকে উপহার দেয় তাহলে স্বামী তা স্বচ্ছন্দে ভোগ করতে পারবে।

৫. পূর্ণ মোহর ছেড়ে দেওয়ার বা পূর্ণ মোহর স্বামীকে উপহার দেওয়ারও অধিকার স্ত্রীর রয়েছে, তবে সাধারণ অবস্থায় পূর্ণ মোহর না দিয়ে কিছু অংশ দেওয়াই ভালো।

৬. স্বামী যদি চাপ দিয়ে বা কৌশলে পূর্ণ মোহর বা কিছু অংশ মাফ করিয়ে নেয় তাহলে আল্লাহর বিচারে তা মাফ হবে না।

মোহরানা স্ত্রীর অধিকার।
সর্বনিম্ন মোহর ১০ দিরহাম,আর সর্বোচ্চ কোনো নির্দিষ্ট নেই।
এটি স্বামী ও তার অভিভাবক, এবং স্ত্রীর অভিভাবকগন স্ত্রীর অনুমতি স্বাপেক্ষে সন্তুষ্টি চিত্তে নির্ধারন করবেন।
,
যাহা নির্দিষ্ট হবে,স্বামীকে তাহা আদায় করতেই হবে।
স্বামী দেনমোহর আদায় না করলে তা ঋণ হিসেবে তার জিম্মায় বাকি থেকে যাবে।

স্ত্রী যদি উক্ত দেনমোহর মাফ না করে, আর স্বামীও তা পরিশোধ না করে, তাহলে কিয়ামতের ময়দানে স্বামীর অপরাধী সাব্যস্ত হবে। তাই দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে দেয়া জরুরী।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ [٥:٥] 

তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর। [সূরা মায়িদা-৫] 

وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَن تَنكِحُوهُنَّ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ  [٦٠:١٠] 

তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। [সূরা মুমতাহিনা-১০]

বিস্তারিত জানুনঃ- 

বিবাহের সর্বনিম্ন মহর দশ দিরহাম।

 

হাদীস শরীফে এসেছে- আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিততিনি বলেছেন,

 

«لَا يَكُونُ الْمَهْرُ أَقَلَّ مِنْ عَشَرَةِ دَرَاهِمَ».

 মোহর দশ দিরহামের কমে হবে না। (বুলুগুল মারাম১০৩৪)


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
বিবাহের সর্বনিম্ন মহর দশ দিরহাম। অর্থাৎ দুই তোলা সাড়ে সাত মাশা বা ৩০.৬১৮ গ্রাম রূপা।

এক দিরহামের ওজন হল ৩.০৬১৮ গ্রাম। 

বর্তমান বিশ্বের মুহাক্কিক আলেমগন এই মতটিই গ্রহণ করেছেন।

(সেই হিসেবে বিবাহের সর্বনিম্ন মোহরঃ-

প্রতি তোলা রূপার মূল্য ১২০০/- টাকা হলে ১০ দিরহামের মূল্য দাঁড়ায় ৩,১৫০/- টাকা। 

রুপা ১২০০ টাকা ভরি হলে এক দিরহামের মূল্য ৩১৫ টাকা। ১০ দিরহামের মূল্য দাঁড়ায় ৩,১৫০/- টাকা। 

রুপা ১৪০০ টাকা ভরি হলে এক দিরহামের মূল্য ৩৬৭ টাকা। ১০ দিরহামের মূল্য দাঁড়ায় ৩,৬৭০/- টাকা। 

★সুতরাং ৫০০/১০০০৳ অথবা কয়েকটা বই নতুন মোহরানা হিসেেব ধার্য করা যাবেনা।

(০২)
হ্যাঁ, পারবে।

(০৩)
শুধুমাত্র এভাবে সম্মতি জানানোর মাধ্যমে পাত্র কবুল বলতে পারবেনা।

এক্ষেত্রে আপনি পাত্রকে আপনার উকিল বানাতে পারেন। 
পাত্রকে মেসেজে/কলে বলবেন যে আপনি আমাকে আপনার সাথে বিবাহ দিয়ে দিন।

এরপর পাত্র ওই দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে আপনাকে বিবাহ করে নিবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...