জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলছেন
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
যাকাত হল কেবল (১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫)এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ও (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান।আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।(সূরা আত-তাওবাহ-৬০)
কে যাকাত খেতে পারবে?
وَلَا يُشْتَرَطُ النَّمَاءُ إذْ هُوَ شَرْطُ وُجُوبِ الزَّكَاةِ لَا الْحِرْمَانِ كَذَا فِي الْكَافِي. وَيَجُوزُ دَفْعُهَا إلَى مَنْ يَمْلِكُ أَقَلَّ مِنْ النِّصَابِ، وَإِنْ كَانَ صَحِيحًا مُكْتَسَبًا كَذَا فِي الزَّاهِدِيِّ.
অর্থাৎ-নেসাব পরিমাণ মাল(নামী তথা বাড়ন্ত হোক বা না হোক,শরীয়তে নামী মাল চার প্রকার যথা-স্বর্ণ,রূপা বা টাকা,ব্যবসার মাল,গবাদি পশু)
এর মালিক না হলে যাকাত খাওয়া যাবে যদি প্রয়োজন থাকে।তাই গায়রে নামী বা অবাড়ন্ত মালের নেসাব পরিমাণ কেউ মালিক হলে যদিও তার উপর যাকাত আসবে না তথাপিও সে যাকাতের মাল খেতে পারবে না।আর কোনো প্রকার মালই যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে সে সুস্থ উপার্জন স্বক্ষম হওয়া সত্তেও তার জন্য যাকাতের মাল খাওয়া জায়েয আছে।
(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৮৯)
যে ব্যাক্তি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক নন,সেই ব্যাক্তি শরীয়তের পরিভাষায় ধনী নয়,সে ফকির।
সুতরাং সেই ব্যাক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে।
আরো জানুনঃ-
الفتاوى الهندية (ج:1، ص:190، ط: دار الفكر):
"والأفضل في الزكاة والفطر والنذر، الصرف أولًا إلى الإخوة والأخوات ثم إلى أولادهم ثم إلى الأعمام والعمات ثم إلى أولادهم ثم إلى الأخوال والخالات ثم إلى أولادهم ثم إلى ذوي الأرحام ثم إلى الجيران ثم إلى أهل حرفته ثم إلى أهل مصره أو قريته، كذا في السراج الوهاج."
সারমর্মঃ-
যাকাত,সদকায়ে ফিতির এবং মান্নতের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম ভাই এবং বোনকে দেয়া উত্তম, অতঃপর ভাই এবং বোনের সন্তানদেরকে দেওয়া উত্তম অতঃপর চাচা
ফুপি অতঃপর তাদের সন্তানাদি অতঃপর খালা মামা অতঃপর তাদের সন্তানাদি অতঃপর অন্য অন্য আত্মীয়-স্বজন অতঃপর নিজের প্রতিবেশী।
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار ) (ج:2، ص:346، ط: دار الفكر-بيروت):
وقيد بالولاد لجوازه لبقية الأقارب كالإخوة والأعمام والأخوال الفقراء بل هم أولى؛ لأنه صلة وصدقة."
সারমর্মঃ-
যাকাত নিজের ভাই বোন চাচা ফুপি খালা মামাদের দেওয়া উত্তম কেননা এতে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা হয় পাশাপাশি সদকার ও হয়।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
নিজ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, পরদাদা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ যারা তার জন্মের উৎস তাদেরকে নিজের যাকাত,ফিতরাহ দেওয়া জায়েয নয়। এমনিভাবে নিজের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতিন এবং তাদের অধস্তনকে নিজ সম্পদের যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরকে যাকাত,ফিতরাহ দেওয়া জায়েয নয়।-রদ্দুল মুহতার ২/২৫৮
আরো জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
আপনার বাবার পক্ষ থেকে আপনার মা বাবা ভাই বোন আর দাদুর ফিতরা আপনার নানুর বোনকে দিতে পারবে।
শর্ত হলো আপনার নানুর বোনের দরিদ্র হতে হবে,যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত হতে হবে।
নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হলে তাকে ফিতরা দেয়া জায়েজ নেই।
(০২)
আপনার স্বামীর পক্ষ থেকে তার মা - বাবা এবং আপনার ফিতরা তিনি তার ফুফুকে দিতে পারবেন।
শর্ত হলো তার ফুফুর দরিদ্র হতে হবে।
যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত হতে হবে।
তবে আপনার স্বামীর মা বাবার ফিতরা তিনি তার বোনকে দিতে পারবেনা।
কেননা তার বোন আপনার স্বামীর মা বাবার সন্তান।
আর সন্তানকে ফিতরা দেয়া জায়েজ নেই।
এতে ফিতরা আদায় হবেনা।