আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in পবিত্রতা (Purity) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ শায়েখ।
১. হায়েজ কি শয়তানের পক্ষ থেকেও হতে পারে? যদি হয়, তাহলে কি করে বুঝব সেটি শয়তানের তরফ থেকে এসেছে নাকি আল্লাহ?
২. ইবাদাতে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য শয়তান হায়েজের শুরু করিয়ে দেয় নাকি হায়েজ শেষে দীর্ঘদিন ইস্তেহাজার যে বিষয়টি সেটি শয়তানের কারণে হয়? নাকি দুটোই।

৩. রমাদানেও কি শয়তানের কারণে মানুষের হায়েজসহ অন্য অসুস্থতা হতে পারে?
৪. যাদের অনিয়মিত হায়েজের সমস্যা, এবং হঠাৎ কখনো হায়েজের শুরুর কিছুদিন সাধারণ রক্ত বা রক্তের মতো তরল কিছু না হয়ে ময়লার মতো সামান্যই কিছু নির্গত হলে সেটিও হায়েজের অন্তর্ভুক্ত হবে? এবং এটিও কি শয়তানের কারণে হতে পারে ইবাদাতে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য?
৫. কারিন জ্বীন কি এর জন্য দায়ী নাকি অন্য যেকোনো শয়তানই দায়ী হতে পারে?

৬. রেগুলার হিফাজতের আমল করার পরেও এর দ্বারা এফেক্টেড হলে অন্য কোন উপায়ে শয়তানের এই আক্রমণ থেকে বাঁচা সম্ভব?
৭. এফেক্টেড হয়ে যাওয়ার পর করনীয় কি? যদি হায়েজের শুরুটাই শয়তানের কারণে হয় এবং ময়লার মতো নির্গত হয়, তাহলে করনীয় কি? এ অবস্থায় ইবাদত করা বা দীর্ঘমেয়াদী ইবাদাত যেমন রোযা, ইতিকাফে ইবাদাতরত থাকা যাবে?
অনেকগুলো প্রশ্ন হয়ে গেছে, শায়েখ যেহেতু এ বিষয়ে কিছুই জানি না এবং জানা জরুরি, প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর একটু সবর করে দিলে ভালো হয়। আল্লাহ আপনার ইলমে বারাকাহ দিন।
এ বিষয়ে দুটি ঘটনা পড়েছি,
১. কেউ একজন কাবা তায়েফ করার সময় বারবার ইস্তেহাযার রক্ত দেখছিল আবার ফরয গোসল করছিলো, এরকম কয়েকবার হওয়ার পর অন্য একজন উপদেশ দেয় যে এটি শয়তান করাচ্ছে, সে যেনো পট্টি বেঁধে ইবাদাত শুরু করেন।

২. কোনো একজনের এরকম হওয়ার পর স্বলাত ছেড়ে দেওয়ায় রসূল (স্বল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন এটি শয়তানের কারণে হচ্ছে, চেক করার একটি পদ্ধতিও জানিয়ে দেন এবং তিন স্বলাতের মাঝখানে গোসল করতে বলেন।

এ ঘটনাগুলো সত্যিকিনা আমার জানা নেই শায়েখ, কিন্তু হায়েজের সাথে শয়তানের সম্পর্ক আছে জেনে বিভ্রান্ত হয়ে গেছি। তারা বুঝতে পেরেছিলেন কি করে এটি শয়তানের পক্ষ থেকে, প্রথম দিন রক্তের বালাই না থাকলে শুধু ময়লার মতো কিছুর দ্বারা কি করে বুঝব এটি শয়তান করাচ্ছে কিনা?
জাজাকুমুল্লাহ খইরন ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাহ।

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عن صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَيٍّ رضي الله عنها قالت: «كان النبي صلى الله عليه وسلم مُعْتَكِفًا، فَأَتَيْتُهُ أَزُورُهُ ليلا، فَحَدَّثْتُهُ، ثمَّ قُمْتُ لِأَنْقَلِبَ، فقام معي لِيَقْلِبَنِي -وكان مسكنها في دار أُسَامَةَ بن زَيْدٍ-، فَمَرَّ رَجُلاَنِ من الأنصار، فلما رأيا رسول الله صلى الله عليه وسلم أسرعا، فقال النبي صلى الله عليه وسلم : على رِسْلِكُمَا، إنها صَفِيَّةَ بِنْتُ حُيَيٍّ، فقالا: سبحان الله يا رسول الله، فقال: إن الشَّيْطَانَ يَجْرِي من ابن آدم مَجْرَى الدَّمِ، وإني خَشِيتُ أن يَقْذِفَ في قُلُوبِكُمَا شرا -أو قال شيئا-». وفي رواية: «أنها جاءَت تَزُورُهُ في اعْتِكَافِهِ في الْمَسْجِدِ، فِي العَشْرِ الأوَاخِرِ من رمضان، فتَحدَّثَتْ عنده ساعة، ثم قامت تَنقَلِبُ، فقام النبي صلى الله عليه وسلم معها يَقْلِبُهَا ، حتى إذا بَلَغَتْ باب المسجد عند باب أم سلمة...» ثم ذكره بمعناه.

সাফিয়্যাহ বিনতে হুয়াই রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে মরফূ‘ হিসেবে বর্ণিত, “আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফ অবস্থায় ছিলেন। আমি রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসলাম। অতঃপর তাঁর সঙ্গে কিছু কথা বললাম। অতঃপর আমি ফিরে আসার জন্য দাঁড়ালাম। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও আমাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমার সঙ্গে উঠে দাঁড়ালেন। আর তাঁর বাসস্থান ছিল উসামাহ ইবন যায়েদর বাড়িতে। এ সময় দু’জন আনসারী সে স্থান দিয়ে অতিক্রম করল। তারা যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখল তখন তারা শীঘ্র চলে যেতে লাগল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা একটু থাম। এ হচ্ছে সাফিয়্যাহ বিনতে হুয়াই। তারা বললেন, সুবহানাল্লাহ! হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, মানুষের ভেতর রক্তের শিরায় শয়তান চলাচল করে। আমি শংকাবোধ করছিলাম যে, সে তোমাদের মনে কোন খারাপ ধারণা অথবা বললেন অন্য কিছু সৃষ্টি করে দেবে। অন্য বর্ণনায় এসেছে: একদা তিনি রমাযানের শেষ দশকে মসজিদে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে উপস্থিত হন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফরত ছিলেন। সাফিয়্যাহ তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। অতঃপর ফিরে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি (উম্মুল মুমিনীন) উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহার গৃহ সংলগ্ন মসজিদের দরজা পর্যন্ত পৌঁছলেন...” অতঃপর অনুরূপ হাদীস উল্লেখ করেছেন।  
সহীহ - মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শয়তান মানুষের রোগের শিরা উপ শিরায় চলাচল করতে পারে, এটা সঠিক কথা। তবে কোন মহিলার হায়েজ চালু করার সক্ষমতা শয়তানের নেই।

সেটি আল্লাহর হুকুমেই হয়।

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الْقَاسِمِ، قَالَ سَمِعْتُ الْقَاسِمَ، يَقُولُ سَمِعْتُ عَائِشَةَ، تَقُولُ خَرَجْنَا لاَ نَرَى إِلاَّ الْحَجَّ، فَلَمَّا كُنَّا بِسَرِفَ حِضْتُ، فَدَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا أَبْكِي قَالَ " مَا لَكِ أَنُفِسْتِ ". قُلْتُ نَعَمْ. قَالَ " إِنَّ هَذَا أَمْرٌ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ، فَاقْضِي مَا يَقْضِي الْحَاجُّ، غَيْرَ أَنْ لاَ تَطُوفِي بِالْبَيْتِ ". قَالَتْ وَضَحَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ نِسَائِهِ بِالْبَقَرِ.

আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা হাজ্জের উদ্দেশেই (মদিনা হতে) বের হলাম। ‘সারিফ’ নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার হায়য আসলো। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং বললেনঃ কী হলো তোমার? তোমার হায়য এসেছে? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বললেনঃ এ তো আল্লাহ্ তা‘আলাই আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি বাইতুল্লাহর ত্বওয়াফ ছাড়া হাজ্জের বাকী সব কাজ করে যাও। ‘আয়িশাহ (রাযি.) বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ হতে গাভী কুরবানী করলেন। (বুখারী শরীফ ৩০৫, ৩১৬, ৩১৭, ৩১৯, ৩২৮, ১৫১৬, ১৫১৮, ১৫৫৬, ১৫৬০, ১৫৬১, ১৫৬২, ১২৩৮, ১৬৫০, ১৭০৯, ১৭২০, ১৭৩৩, ১৭৫৭, ১৭৬২, ১৭৭১, ১৭৭২, ১৭৮৩, ১৭৮৬, ১৭৮৭, ১৭৮৮, ২৯৫২, ২৯৮৪, ৪৩৯৫, ৪৪০১, ৪৪০৮, ৫৩২৯, ৫৫৪৮, ৫৫৫৯, ৬১৫৭,৭২২৯; মুসলিম ১৫/১৭, হাঃ ১২১১) (আধুনিক প্রকাশনী- ২৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২৯০)

(০২)
হায়েজ শয়তানের পক্ষ থেকে হয়না।
তবে ইস্তেহাজা শয়তানের পক্ষ থেকে হয় বলে হাদীসে আছে।

عن أسماء بنت عُمَيْس رضي الله عنها قالت: قلت: يا رسول الله، إن فاطمة بنت أبي حُبَيْش اسْتُحِيضَتْ -مُنْذُ كذا وكذا- فلم تُصَل فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «سُبحان الله، إن هذا من الشَّيطان لِتَجْلِسْ في مِرْكَنٍ، فإذا رأت صُفْرَة فوق الماء فلتَغْتَسِل للظهر والعصر غُسْلاً واحدا، وتغتسل للمغرب والعشاء غسلا واحدا، وتغتسل للفجر غسلا واحدا، وتتوضأ فيما بَيْنَ ذلك».

আসমা বিনতে উমাইস বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! ফাতেমা বিনতে আবূ হুবাইশের এতো এতো দিন থেকে ইস্তেহাযা (রক্তপ্রদর) হয়েছে। ফলে সে সালাত আদায় করে নি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “সুবহানাল্লাহ! নিশ্চয় এটি শয়তানের পক্ষ থেকে। সে গোসলের পাত্রে বসুক। যখন পানির উপর হলদে বর্ণ দেখবে, তখন যোহর ও আসরের জন্য একবার, মাগরিব ও এশার জন্য একবার এবং ফজরের জন্য একবার গোসল করবে। আর তার মাঝখানে সে অযু করবে।” 
(আবু দাউদ)

(০৩)
এটি শয়তানের কারনে হয়না।

(০৪)
সেটিও হায়েজের অন্তর্ভুক্ত হবে।
এটি শয়তানের পক্ষ থেকে হয়না।

(০৫)
কেহই দায়ী নয়।

(০৬)
সম্ভব নয়।
বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসা নিতে পারেন।

(০৭)
বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসা নিতে পারেন।

★জ্বী,ঘটনা গুলো সত্যি।
যার স্বপক্ষে একটি হাদীস উপরে উল্লেখ রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 172 views
0 votes
1 answer 79 views
...