বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি
ওয়া বারাকাতুহু
জবাব,
https://ifatwa.info/108927/?show=108927#q108927
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যেসব ভিডিও দেখা জায়েজ নয় কিংবা যেসব কনটেন্ট বা ছবি শরিয়তের মূলনীতিবিরোধী,
সেসব ভিডিও-কনটেন্ট-ছবি ইত্যাদি দেখা,
প্রচার করা,
লাইক করা,
সেসব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করা কোনোটিই
বৈধ নয়। তা থেকে উপার্জনও বৈধ নয়। অন্যায় কাজ নিজে করা যেমন বৈধ নয়,
তেমনি সহযোগিতা করাও বৈধ নয়। তাই সহযোগিতাকারীরা
গোনাহগার হবেন এবং তাদের উপার্জিত অর্থও হালাল হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন,
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য
করো। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়
আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সুরা মায়েদা: ২)
আর যদি নাজায়েজ
কনটেন্ট বা ভিডিও না হয়, তাহলে লাইক-কমেন্ট, শেয়ার, সাবস্ক্রাইব, ভিডিও আপলোড, ছবি-কনটেন্ট আপলোড করা জায়েজ আছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘হে ইমানদাররা! তোমরা একে
অপরের মাল অন্যায়ভাবে গ্রাস (আত্মসাৎ) করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে
যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ।’ (সুরা নিসা: ২৯)
প্রসঙ্গত গুগলের
একটি বিশেষ সার্ভিস হলো ‘গুগল এডসেন্স’। অর্থের বিনিময়ে তারা বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন
ইউটিউবসহ অন্যান্য ওয়েবসাইটে প্রচার করে থাকে। আর সে অর্থের একটি নির্দিষ্ট অংশ তারা
ইউটিউবারদের দিয়ে থাকে।
সুতরাং বিজ্ঞাপনগুলো
যদি অশ্লীল হয় কিংবা হারাম পণ্যের হয়, তাহলে প্রাপ্ত অর্থ হালাল হবে না। উপরন্তু হারামের
প্রচার ও সহযোগিতার কারণে গুনাহগার হতে হবে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন,
‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার
প্রসার কামনা করে, নিশ্চয়ই তাদের জন্য ইহকালে ও পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা নুর: ১৯)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
হালাল বিজ্ঞাপন
হলে ভিডিও আপলোড করা জায়েজ। কিন্তু বেগানা
নারীসহ হারাম বিষয়ের বিজ্ঞাপন প্রচার করে এমন মনিটাইজ করে টাকা ইনকাম করা জায়েজ নেই।
যেহেতু এসবে
অহরহ হারাম বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়, তাহলে সতর্কতামূলক উক্ত ইনকাম বর্জন করাই নিরাপদ।
নিজের তৈরিকৃত
ভিডিও-এর সাথে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন যুক্ত করার বিনিময়ে ইউটিউব/ফেসবুক থেকে অর্থ
উপার্জনের বিষয়টি নিরাপদ নয়। কারণ ইউটিউব/ফেসবুক কখন কোন্ ধরনের এবং কোন্ কোম্পানির
বিজ্ঞাপন দেবে তাতে ভিডিওদাতার এখতিয়ার থাকে না বরং এসব কিছু ইউটিউব/ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ
করে। সে তার ইচ্ছা মত যে কোনো বিজ্ঞাপন দিতে পারে। অথচ বাছ-বিচার ছাড়া যে কোনো বিজ্ঞাপন
যুক্ত করেই অর্থ-উপার্জন বৈধ নয়। বরং অর্থ-উপার্জন বৈধ হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে কিছু
শর্তাবলীর উপর যার কয়েকটি নিন্মরূপ :
১. যে বিষয়ের
বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে সেটি বৈধ হওয়া।
২. বিজ্ঞাপনের
চিত্র শরীয়ত পরিপন্থী না হওয়া।
৩. বিজ্ঞাপন
ও এর ভাষা এবং উপস্থাপনের মধ্যে কোনো ধরনের ধোঁকা বা প্রতারণার আশ্রয় না নেয়া ইত্যাদি।
আর সাধারণত
যেহেতু এসব শর্তাবলী রক্ষা করা ভিডিওদাতার পক্ষে সম্ভব হয় না,
তাই এ ধরনের উপার্জন থেকে বিরত থাকা
উচিত। (কিতাবুল আছল ৪/২০; বাদায়েউস সানায়ে ৪৪৬; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/২৮৪)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি
বাস্তবেই কোন হারাম এড না থাকে তাহলে লেখালেখির মাধ্যমে ইনকাম করা হারাম বলা যাবে
না। কিন্তু বেগানা নারীসহ হারাম বিষয়ের বিজ্ঞাপন প্রচার করে এমন মনিটাইজ করে টাকা ইনকাম
করা জায়েজ নেই।
তবে উলামায়ে
কেরামের নিকট এজাতীয় মাধ্যম থেকে সতর্কতামূলক ইনকাম বর্জন করাই নিরাপদ।