আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
২১ রমাদ্বান শেষ রাত্রি থেকে আমি ইতিকাফের নিয়ত বাধি। এখনও পর্যন্ত নিয়ত ভঙ্গ করিনি।

তবে এর মাঝে বেশ কয়েকবার আমাকে ইতিকাফের স্থান থেকে বের হতে হয়েছিল।

১। এমন কিছু ওজর ছিল যেখানে আমি না গেলেই নয়। তবে আমি সে স্থানে অধিক সময় ক্ষেপণ করিনি। আমার বাসার সীমানার ভেতরেই ছিলাম। এতে কি আমার ইতিকাফ ভেঙে গেছে?

২। আমার পরিবারের রান্না যারা করছেন তারা খুবই অসুস্থ। তাই সংকোচবশত খাবার রুমে দিয়ে যেতে বলিনি। প্রথম দুইদিন ইফতার তাদের সাথে করে ইতিকাফের স্থানে ফিরে এসেছি। তৃতীয় দিন থেকে আমার ইতিকাফের স্থানেই খাচ্ছি।

৩। ঘুম এবং খাবার কি কম হতেই হবে? আমার পর্যাপ্ত ঘুম খাবার না হলে রাতের ইবাদতে ব্যঘাত ঘটছে।

৪। একজন সহপাঠী বোন তার বাবাকে সুদের ব্যাপারে বোঝানোর পরামর্শ চেয়েছিলেন এবং তার তিলাওয়াতের কারেকশন করে দিয়েছিলাম ইতিকাফের স্থলে থেকেই। এতে আমার ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে গিয়েছে?

৫। আমার মা বাসায় নেই তার সাথে আড়াই তিন মিনিটের মতো ফোনে কথা বললে কি ইতিকাফ ভেঙে যাবে?

৬। আমি আজ একটা আর্টিকেল খাতায় লিখছিলাম যেখানে কিভাবে নিজেকে রমাদ্বান পরেও উন্নত করতে পারি তার ব্যাপারে। এ কাজে কি ইতিকাফ ভেঙে গিয়েছে?

৭। কিছু সময় কোন ইবাদত থেকে বিরত থাকলে তবে দুনিয়াবি কাজে লিপ্ত না হলে কি ইতিকাফ ভেঙে যাবে?

৮। দুনিয়াবি কোন কিছু যদি চিন্তা করে ফেলি তবে কি ইতিকাফ ভেঙে যাবে?

৯। ইতিকাফ ভেঙে যাবার কারণসমূহ কি কি?

১০। ইতিকাফ সঠিকভাবে কিভাবে করতে হয়? ইতিকাফে কি কি আমল করতে হয়? কি কি বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়?

1 Answer

0 votes
ago by (72,690 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://www.ifatwa.info/42946/  নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

হযরত আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত,

ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺯَﻭْﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻮَﻓَّﺎﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ، ﺛُﻢَّ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻪُ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِﻩِ

রাসূলুল্লাহ সাঃ ইহকাল ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত রমজানের শেষ দশে এ'তেক্বাফ করতেন। অতঃপর উনার বিবিগণ এ'তেক্বাফ করেন।

সহীহ বোখারী-২০২৬, সহীহ মুসলিম-১১৭২

,

মহিলারা ঘরের মসজিদে (নামাজ পড়ার স্থানে) বা একটি জায়গাকে নির্দিষ্ট করে এ'তেক্বাফে বসবে। তবে সাবধান! পরবর্তীতে আর স্থান পরিবর্তন করা যাবে না। মহিলাদের জন্য শর্ত হল, হায়েয নেফাস থেকে পবিত্র থাকা। এ'তেক্বাফের মধ্যখানে যদি হায়েয চলে আসে, তাহলে এ'তেক্বাফ ফাসিদ হয়ে যাবে। কেননা তখন তো আর রোযা রাখতে পারবেন না।

,

পরবর্তীতে কমপক্ষে একদিন রোযা সহ এ'তেক্বাফকে কাযা করে নেবেন। সম্ভব হলে অবশিষ্ট সকল দিনের এ'তেক্বাফকে রোযাসহ কাযা করে নিতেও পারেন। স্বভাবত মানুষের যে সমস্ত প্রয়োজন থাকে সেসব প্রয়োজনের স্বার্থে তিনি এ'তেক্বাফ থেকে বের হতে পারবেন। প্রস্রাব পায়খানা, ওজু ফরয গোসল ইত্যাদির জন্য। তবে শীতলতা অর্জনের নিমিত্তে উনি গোসলে যেতে পারবেন না।

,

খানা পাকানোর জন্য উনি পাকঘরে যেতে পারবেন না। তবে প্রয়োজনে তিনি এ'তেক্বাফ স্থলে খানাকে রান্না করে নিতে পারবেন। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১০/২৫১)

বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/1275/

,

সুতরাং আপনি ঘরের নামাজ পড়ার স্থানে বা একটি জায়গাকে নির্দিষ্ট করে এ'তেক্বাফে বসবেন। এক্ষেত্রে সেখানে প্রবেশ কালে ইতেকাফের নিয়ত করবেন। ঐ স্থান থেকেই যে কাজ গুলি করা যায়, সেগুলো করতে পারবেন।

ঐ স্থান কোনোভাবেই ত্যাগ করা যাবে না। শুধু মাত্র পায়খানা পেশাব করার জন্য বাহিরে (টয়লেটে) যেতে পারবেন। দৈনন্দিনের গোসলের জন্য যেতে পারবেননা। যদি গোসল করেন, তাহলে এক্ষেত্রে আপনি ইস্তেঞ্জা (পেশাব/পায়খানা) করার জন্য বের হওয়ার সময় গোসলের কাপড় ইত্যাদি নিয়ে এক বারে বের হবেন, যাতে আবার সেই স্থানে আসতে না হয়। দ্রুত ইস্তেঞ্জা গোসল করে চলে আসবেন। উক্ত স্থান থেকে বাহিরে গিয়ে কাহারো সাথে কোনো কথা বলবেন না।

,

উক্ত স্থানে থেকেও অহেতুক কাজ ও কথা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। সর্বদায় কুরআন তিলাওয়াত, যিকির আযকার, নামাজ ইত্যাদিতে মগ্ন থাকবেন।   

,

রমজানের শেষ দশকে দশদিনের নিচে ইতেকাফ করলে সেটি নফল ইতেকাফ বলে গন্য হবে।

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/16004/

,

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

,

আপনি যেহেতু ২১ রমাদ্বান শেষ রাত্রি থেকে ইতিকাফে আছেন তাই এই ইতিকাফ নফল হিসাবে গণ্য হবে। কারণ, সুন্নাত ইতিকাফ হলো ২০ রমাদান দিবাগত সন্ধ্যা থেকে রাখতে হয়।

,

১-২. আপনার যেহেতু নফল ইতিকাফ। তাই কোনো সমস্যা নেই। তাই পেরেশানীর কোনো কারণ নেই।

৩. তাহলে আপনি পর্যাপ্ত ঘুম ও খাবার খেতে পারেন।

৪-৮. না, এতে কোনো সমস্যা নেই।

৯. ইতিকাফের নির্দিষ্ট স্থান থেকে অযু, ইস্তিজা ছাড়া অন্য কোনো কারণে বাইরে গেলে ইতিকাফ ভেঙ্গে যায়।

১০. উপরে কিছু উল্লেখ করা হয়েছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...