ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/7942/
নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
মনের ভয়ের সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, আল্লাহর সঙ্গে
সম্পর্কের দুর্বলতা, তাঁর প্রতি আনুগত্য ও তাওয়াক্কুল-ভরসা কমে যাওয়া।
কারণ আল্লাহ বলেছেন-
أَلا
إِنَّ أَوْلِيَاء اللّهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
‘‘মনে রেখো যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন
ভয় ভীতি আছে , না তারা চিন্তান্বিত হবে।” (সূরা ইউনুস ৬২ )
,
সুতরাং আপনার প্রথম কাজ হল, আল্লাহর উপর ভরসা করা।
আল্লাহ বলেছেন–
وَمَنْ
يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ
‘‘আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, আল্লাহ তার জন্য
যথেষ্ট।” (সূরা তালাক ৩)
,
★যিকির না করার কারনে কলব মরে যায়। কলব মরে গেলেও
ভয় লাগতে পারে। বেশি বেশি যিকির করতে হবে,কুরআন তেলাওয়াত করতে
হবে। তাহলে ইনশাআল্লাহ কোনো সমস্যা থাকবেনা।
,
কিছু দোয়া রয়েছে। এগুলো বেশি করে বিশেষভাবে ভয়ের মুহূর্তে ও
যথাসময়ে পড়লে উপকার পাওয়া যাবে। এতে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হবে, তাওয়াক্কুল-ভরসা
বাড়বে ও ধীরে ধীরে মনের ভয়ও দূর হবে, ইনশাআল্লাহ।
,
★ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.)
বিপদাপদকালে এই দোয়া পাঠ করতেন।
لَا
إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ
الْعَرْشِ الْعَظِيمِ ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَرَبُّ
الْأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আযিমুল হালিম। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু
রাব্বুল আরশিল আযিম। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদ্বি ও
রাব্বুল আরশিল কারিম।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬৩৪৬)
দোয়াটির অর্থঃ ‘‘মহান ও মহা-ধৈর্যশীল আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য
নেই। মহান আরশের রব ‘আল্লাহ’ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আসমানসূমহ ও জমিনের রব এবং
মহান আরশের রব ‘আল্লাহ’ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই।”
,
ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিপদাপদকালে উক্ত দোয়া বলতেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩৪৬)
সহিহ মুসলিমের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহ. বলেন, এটি একটি মহান
হাদিস। এ হাদিসটিকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। বিপদাপদের ভয় ও বড় বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণকালে এ
দোয়াটি বার বার আওড়ানো উচিত। তাবারী রহ. বলেন, সলফে সালেহীনগণ এ দোয়াটি দিয়ে দোয়া করতেন। তাঁরা এটিকে বিপদাপদ
মুক্তির দোয়া আখ্যায়িত করতেন।
,
★উসমান ইবনে আফ্ফান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ
(সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় তিনবার এই দোয়াটি পাঠ
করবে, কোনো কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না।’
بِسْمِ
اللّهِ الَّذِيْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِه شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي
السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيمُ
‘বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা
ফিস সামাই ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।’ (তিরমিজি,
হাদিস নম্বর : ৩৩৮৮)
দোয়াটির অর্থঃ ‘‘আল্লাহর নামে, যার নামের বরকতে আসমান ও জমীনের কোন কিছুই কোন ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা
ও সর্বজ্ঞ।”
,
উসমান ইবনে আফ্ফান রাযি. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোন বান্দা প্রতিদিন সকালে ও প্রতি রাতের সন্ধ্যায় তিনবার
করে এই দোয়াটি পাঠ করলে কোন কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। (তিরমিযী,হাদীস নং ৩৩৮৮)
اَللّهُمَّ
إِنَّا نَجْعَلُكَ فِيْ نُحُوْرِهِمْ وَنَعُوْذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ
অর্থাৎ ‘‘ হে আল্লাহ! আমরা তোমাকেই তাদের মুখোমুখী করছি এবং
তাদের অনিষ্টতা থেকে তোমারই কাছে আশ্রয় চাচ্ছি ।”
,
আবু মুসা আল-আশআরী রাযি.থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যখন কোন সম্প্রদায় দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা করতেন তখন দোয়া টি বলতেন
(আবূদাউদ,হাদীস নং ১৫৩৭)
لَا
إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ
يُحْيِيْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
অর্থাৎ ‘‘আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তার কোন শরীক
নাই, সার্বভৌমত্ব তারই, সব প্রশংসা তারই জন্য, তিনিই জীবন ও মৃত্যু দান করেন আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান
।”
,
আবু যার রাযি. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর দুই পা ভাঁজ অবস্থায় কারো সাথে
কথা বলার পূর্বে দশ বার দোয়াটি বলে,তার আমলনামায় দশটি নেকী লেখা হয়, দশটি গুনাহ বিলুপ্ত
করা হয় এবং দশগুণ মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। সে ঐ দিন সব রকমের বিপদ থেকে মুক্ত থাকবে, শয়তানের ধোঁকা
থেকে তাকে পাহারা দেয়া হবে এবং ঐ দিন শিরক ছাড়া অন্য কোন গুনাহ তাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে
পারবে না। (তিরমিযী, হাদীস নং ৩৪৭৪)
,
★বেশি বেশি যিকির, কুরআন তেলাওয়াত করুন, পরিপূর্ণ ভাবে দ্বীন মানুন, আল্লাহর উপর ভরসা করুন, উপরে উল্লেখিত
আমল ঠিক ঠাকভাবে আদায় করুন, ইনশাআল্লাহ ভয় কেটে যাবে।
আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/7942/