আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম হযরত আমার বাসা নওগাঁ। প্রতি সপ্তাহে ঢাকা যাতায়াত করি সেখানে স্থায়ী থাকিনা। এখন আমি যে প্রতি সন্তাহে ঢাকা যাচ্ছি আমি তো এখন মুসাফির হালতে নামাজ পড়ব তাইনা?
আরেকটা বিষয় আমার শ্বশুর বাড়ি বগুড়া। তো আমি যদি ট্রেনে নওগাঁ না নেমে সরাসরি বগুড়া চলে আসি তাহলে কি মুসাফিরই থাকবো?

আরেকটা বিষয় আমার গ্রামের বাড়ি সান্তাহার যেটা বগুড়ার মধ্যে পরে। আগে সেখানেই থাকতাম তবে সম্প্রতি দুই মাস হচ্ছে নওগাঁ পার হয়েছি। ট্রেন থেকে নামলে আমার গ্রামের বাসার ওপর দিয়েই নওগাঁ যায়। সান্তাহার থেকে নওগার দূরত্ব ৪-৫ কিলোমিটার। আবার সান্তাহার রেল স্টেশন থেকে আমার গ্রামের বাসা যেতে ১০ মিনিট লাগে। এমন অবস্থায় যদি আমি সান্তাহার ট্রেন দাঁড়ানো অবস্থায় ট্রেনে নামাজ পড়ি আর নিয়ত থাকে সান্তাহার না নেমে বগুড়া যাবো একবারে তাহলে মুসাফির হালতে পড়বো নাকি মুকিম?


আরেকটা বিষয় সাহাবা রা: গণের তো অনেক গায়রত ছিল যার জন্য নিজের স্ত্রীর নামও প্রকাশ করতেন না। কিন্তু আমি যদি স্ত্রীর গোপন পোশাক কিনতে যাই সেক্ষেত্রে তারা একটা ধারণা তো পাবে যেটা আমি মোটেই চাইনা। এক্ষেত্রে উত্তম পদ্ধতি কি হতে পারে। আর যদি কিনতে যাইও তারা ধারণা পেয়ে যদি মনে ওয়াস ওয়াসা আসে সেটার জন্য কি আমার গুনা হবে?

1 Answer

0 votes
by (604,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

সেক্ষেত্রে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কসর করতে হবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ

‘আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোনো দোষ নেই।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১০১]

হাদিস শরীফে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

আরো জানুনঃ 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি ঢাকায় গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে সেখানে আপনি কছর নামাজ আদায় করবেন।

★ ঢাকা থেকে ট্রেনে করে বগুড়ায় আসলে সেক্ষেত্রে যেহেতু ট্রেন নওগাঁর উপর দিয়ে আসবে,সুতরাং আপনার ট্রেন যদি আপনার নিজ শহরের উপর দিয়ে যায় সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনি বগুড়ায় আর মুসাফির থাকবেননা।

হ্যাঁ যদি আপনার ট্রেন আপনার শহর দিয়ে না যায় বরং অনেকটা বাহিরের সাইড দিয়ে যায় যেটা আপনার শহরের মধ্যে পড়ে না, সেক্ষেত্রে আপনি বগুড়া এসে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বগুড়ায় আপনি মুসাফির হিসেবে থাকবেন।

★আপনার স্থায়ী নিবাস কোনটা,সান্তাহার নাকি নওগা?
আপনি সান্তাহার কোথা থেকে যাবেন,কোথায় যাচ্ছেন?
বিস্তারিত জানালে জবাব প্রদানে সুবিধা হতো। 
★আপনি অনলাইন থেকে এসব গোপনীয় পোশাক কিনতে পারেন।
অথবা পাইকারী দোকান থেকে একটু বেশি করে কিনতে পারেন,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (25 points)
স্থায়ী নিবাস আগে সান্তাহার ছিল যেটা আমার গ্রামের বাড়ি। তবে এখন নওগাঁ পার হয়েছি। সেখানেই স্থায়ী ভাবে থাকা হচ্ছে। তবে ট্রেন থেকে নেমে নওগাঁ যাওয়ার সময় আমার গ্রামের বাসার উপর দিয়েই যায়। আমি মূলত প্রতি সপ্তাহে ঢাকা যাই তবে ঢাকা থেকে ব্যাক করার সময় মাঝে মাঝে সান্তাহার না নেমে বগুড়া যাই আমার শ্বশুর বাড়ি।
by (604,290 points)
ঢাকা থেকে ট্রেনে করে যখন আপনি বাসায় যাবেন তখন আগে আপনার নওগাঁ এর পরে সান্তাহার তারপর বগুড়া।

 তো আপনি যদি নওগাঁ আপনার শহরের উপর দিয়েই সান্তাহারে ট্রেনে যান সে ক্ষেত্রে তো সান্তাহার গিয়ে কসরের নামাজ আদায় করতে পারবেন না।

তবে আপনার ট্রেন যদি নওগাঁ আপনার শহরের উপর দিয়ে না যায় বাহিরের শহর দিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে সরাসরি ঢাকা থেকে সান্তাহার গেলে আপনি সান্তাহার গিয়ে কসর নামাজ আদায় করবেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 135 views
...