আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
43 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি,
স্বামী নিম্নের তালাকের কাগজ পাঠিয়েছে দুইমাস আগে।এখন সে বলছে সে শুধু আইনিভাবে ডিভোর্স দিয়েছে কিন্তু মুখে তালাক বলে নি।তার কথা হলো""""""পাঠানোর সময় ছেলের থেকে মুখে বলায় সামনে সাক্ষি রেখে তারপর সাইন নেয়।কিন্তু আমার সময় এমনটা করিনি সাক্ষি রেখে বলসি আমি সুধু কাগজটা পাঠাচ্ছি আমি কোন তালাক দিচ্ছি না"""""""আর সে এও বলেছে,যে  স্ত্রীর পরিবার থেকে যাতে কোনো মামলা না দেয় এইজন্য সে এই কাগজ পাঠিয়েছে।সে নাকি উকিলকে এটাও বলেছে যে শুধুমাত্র মামলা ঠেকানোর জন্য এই কাগজ পাঠাচ্ছে কিন্তু সে তালাক দিচ্ছে না।""""

এখন কি তালাক হয়েছে?সে তালাক নামায় স্বাক্ষরও দিয়েছিল

।তালাক নামায় যা লিখা ছিল।।
১৯৬১ ইং সালের মুসলিম পারিবারিক আইন এর ৭(১) ধারামতে
"" স্বামী কর্তৃক তালাকের নোটিশ"""

যথাযথ সম্মান পুর্বক আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী... (স্বামীর নাম,পিতার নাম,মাতার নাম,ঠিকানা) জানাইতাছি যে,বিগত ৫-৫-২৩ তারিখে নিকাহ নামাহ মুলে আমার.... (স্ত্রী নাম,বাবার নামটা ,মায়ের নাম,ঠিকানা) সহিত বিবাহ হয়।বিবাহের পর হইতে উক্ত স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য,মনের মিল নাই ও বনিবনা হয় না। যাহা শরীয়তের সম্পুর্ন পরিপন্থি বিধায় অত্র ১৬-১-২৫ ইং তারিখে আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে, অন্যের বিনা প্ররোচনায় আপনি...( স্ত্রীর নাম) কে এক তালাকে বয়ায়েন প্রদান করিয়া বিবাহিত সম্পর্কে ছিন্ন করিলাম

: ২) এখন স্ত্রী ইদ্দত পালন করছে।যেহেতু ৩ মাস আগে তালাক নামা পাঠিয়েছে সে ক্ষেত্রে ইদ্দত এর দুই মাস হয়েছে। এখন আর এক মাস হয়ে গেলে অর্থাৎ ইদ্দিত শেষ হয়ে গেলে স্বামী সেই স্ত্রীকে নিতে চাইলে কি নিতে পারবে যেহেতু ১ তালাক দিয়েছিল

: ৩) ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে তো বিবাহ সম্পুর্ন বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাহলে তখন তারা একেঅপরের নন মাহরাম হয়ে যাবে না?

৪) ইদ্দত শেষে যেহেতু বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়, তখন স্বামী যদি উক্ত স্ত্রীকে নিতে চায়, কিন্তু স্ত্রী আর সেই সংসার করবে না বলে তাহলে স্বামী কি নিতে পারবে?যদি সে মুখেও বলে যে সে আবার নিতে চাইবে।

অথবা ইদ্দত শেষ হওয়ার যে ১ মাস আছে সেই ১ মাসেও যদি স্বামী উক্ত স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চায় কিন্তু স্ত্রী যেতে ইচ্ছুক নয় তখনোকি স্বামী নিতে পারবে একপক্ষের সম্মতিতে?

1 Answer

0 votes
by (604,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর এমনিতেই বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

তালাক পতিত হওয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রীকে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয়।
মুখ থেকে উচ্চারণ হয়ে গেলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।
(এক্ষেত্রে ভুলে/ঠাট্রা মূলক মুখ দিয়ে উচ্চারন হলেও তালাক হবে।)
(ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ৪৭৭
ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম ৯/৪২
আযিযুল ফাতওয়া ১/২৫২)
,   
أما رکن الطلاق فہو ہذہ اللفظۃ الصادرۃ من الزوج۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۴؍۳۷۷ رقم: ۶۴۷۱ زکریا)
সারমর্মঃ
তালাকের রুকন হলো এই শব্দ গুলো স্বামী থেকে বের হওয়া।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
তালাক শব্দ লিখার দ্বারা হয়ে যাবে।মুখে উচ্ছারণের প্রয়োজন নেই।

ﺛُﻢَّ اﻟْﻤَﺮْﺳُﻮﻣَﺔُ ﻻَ ﺗَﺨْﻠُﻮ ﺇﻣَّﺎ ﺃَﻥْ ﺃَﺭْﺳَﻞَ اﻟﻄَّﻼَﻕَ ﺑِﺄَﻥْ ﻛَﺘَﺐَ: ﺃَﻣَّﺎ ﺑَﻌْﺪُ ﻓَﺄَﻧْﺖِ ﻃَﺎﻟِﻖٌ، ﻓَﻜَﻤَﺎ ﻛَﺘَﺐَ ﻫَﺬَا ﻳَﻘَﻊُ اﻟﻄَّﻼَﻕُ ﻭَﺗَﻠْﺰَﻣُﻬَﺎ اﻟْﻌِﺪَّﺓُ ﻣِﻦْ ﻭَﻗْﺖِ اﻟْﻜِﺘَﺎﺑَﺔِ.

লিখা কয়েক ধরণের হয়ে থাকে।যদি কাগজে সে তার স্ত্রীকে এভাবে লিখে যে,
পরসমাচার!তুমি তালাক।যখনই সে তালাক শব্দ লিখবে সাথে সাথেই তালাক পতিত হয়ে যাবে।এবং লিখার সময় হতে স্ত্রীকে ইদ্দত পালন করতে হবে। 

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1213

শরীয়তের বিধান হলো জবরদস্তি মূলক তালাক নামায় দস্তখত করে নিলে তালাক পতিত হয়না।
(নিজামুল ফাতওয়া ২/৮৯,৯০.৯৪)

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে উক্ত স্ত্রীর উপর এক তালাকে বায়েন পতিত হয়েছে।

(০২)
ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে স্বামী সেই স্ত্রীকে নিতে চাইলে নতুন করে মোহরানা ধার্য করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।

(০৩) 
তালাকে বায়েনের ক্ষেত্রে ইদ্দত চলাকালীন সময়েও তারা একে অপরের নন মাহরাম।
ইদ্দতের পরেও তারা একে অপরের নন মাহরাম।

(০৪) 
স্ত্রীর এই অধিকার আছে।
এটি তার একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যপার। 

স্ত্রী তার সাথে পুনরায় বিবাহ বসতে না চাইলে সেই স্বামী তাকে কোনভাবেই জোড় করে বিবাহ করতে পারবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...