আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
61 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আস্সালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহ উস্তাদ।

আমি কিছুতেই দ্বীনের পথে লেগে থাকতে পারছিনা নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করার ১০-১৫পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করি গুনাহ করবোনা বিনয়ী হবো। কিন্তু ১০/১৫দিন পর আমি মানসিক ভাবে কোন শক্তি পাইনা, কিছুই ভালো লাগেনা তখন, শুধু নামাজ টা পড়ি তখন। এর পর আল্লাহ আবার বুঝদেন আবার শুরু করি তারপর সেম এমনটাই হয়। কুরআনের সাথের তো মোটেও লেগে থাকতে পারছিনা তাদাব্বুর এ, আল্লাহ বুঝিয়ে দেন আয়াত গুলো কিন্তু তাও আমার কাছে খুব কঠিন লাগে বসার আগের মনে হয় পারবোনা অনেক খাটনি, এমন করে কিছুদিন জোর করে বসি এর পর মাস চলে যায় কুরআনে পড়া হয়না। আমি এর জন্য খুব বেশি ডিপ্রেশন এ থাকি। আগের মতো হয়ে যাচ্ছি। এগুলা থেকে পড়ে যা আমল করতাম মনে হয় আমি তো মুনাফিক তাই আর আমল করবোনা।নেক সহবতের সাথের থেকেও কাজ হচ্ছেনা আমি কি করবো উস্তাদ?৪বছর যাবৎ আমার এই অবস্থা আমার জীবণ কী এভাবে কেটে যাবে এই চিন্তায় আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি।বান্দা কী কঠিন কোন গুনাহ করে ফফেললে যার জন্য এই শাস্তি পাওয়া লাগে? আমি ১. ৫বছর মতো অত্যাধিক ওয়াওয়াসা রোগে ভুগতাম এর পর থেকে এমন হচ্ছ। আমি হেফাজতের আমল করি তাও ধরে রাখতে পারছিনা ইসলাম প্র্যাক্টিস।এটা কী আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার জন্য পরীক্ষা?

২)আমি বিনয়ী হওয়ার চেষ্টা করলে আমার উপর সবাই জুলুম করা শুরু করে দেয়, কাজে, কথা-বার্তায়, তখন আমি রেগে গিয়ে খারাপ ব্যবহার করার ফেলি। এক্ষেত্রে বিনয়ী হওয়ার পর নিজের দিক তাও ঠিক রাখার জন্য কী করতে পারি যেন তারা এমন না করে? বিনয়ী হয়ে যদি আমি আমার হকের ক্ষেত্রে ছাড় না দেই, মাঝে মাঝে এর জন্য কড়া হই টা কী বিনয়ের খেলাফ হবে?

৩)পিতা-মাতা যদি অন্যায় করে আমাদের সাথে অনেক ভালো ভাবে বুঝিয়েও যদি কাজ না হয় তখন কী তাদের সাথে কড়া হয়ে কথা বলা যাবে? আর না গেলে কী এই বিষয় এ এড়িয়ে যাওয়া যাবে তাদের আমরা কষ্ট পাচ্ছি বোঝানোর জন্য?

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, 

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ 

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল ﷺ উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

★সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করবেন।

রাসূলুল্লাহ্ ﷺ দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَن زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا

হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক। (মুসলিম ২৭২২)
সুতরাং আপনিও দোয়াটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

নেককারদের সোহবত গ্রহণ করুন। তাদের সাথে বেশি উঠাবসা করুন।

দাওয়াত তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হতে পারেন,মাহরামের সাথে মাস্তুরাত জামাতে যেতে পারেন।

এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে। 

 আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

অধিকহারে ইস্তেগফার করুন। প্রয়োজনে এর জন্য প্রত্যেক নামাজের পর একটা নিয়ম করে নিন। যেমন, প্রত্যেক নামাজের পর ৫০/১০০/২০০ বার أسْتَغْفِرُ اللهَ   অথবা أسْتَغْفِرُ اللهَ وَأتُوبُ إلَيهِ অথবা  اللَّهُمَّ اغْفِرْ لي পড়ার নিয়ম করে নিতে পারেন। 

★কখনো একাকী নিভৃতে থাকবেন না। কেননা একাকীত্ব গোনাহ চিন্তা করার কারণ হতে পারে। আপনার সময়কে উপকারী বিষয়ে ব্যয় করতে সচেষ্ট হোন। ঈমান ও ইসলামের পরিবেশে সময় ব্যয় করুন।

আপনাকে বেশি পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার ও শোনার পরামর্শ দিচ্ছি। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا

আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়। (সূরা আনফাল ২)

অনুরূপভাবে আমরা আপনাকে বুঝে বুঝে নবীদের কাহিনী, সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। 

★অধিকহারে আল্লাহর যিকির করুন। কেননা, দুর্বল ঈমানের সুস্থতার জন্য যিকির খুবই উপকারী। আল্লাহর যিকির অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করে। মুমিনের অন্তর যিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। (সূরা রা’দ ২৮)

আরো জানুনঃ- 

(০২)
এক্ষেত্রে আপনি তাদেরকে বুঝাবেন।
পাশাপাশি আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন।
বিনয়ী হয়ে যদি আপনি আপনার হকের ক্ষেত্রে ছাড় না দেন, মাঝে মাঝে এর জন্য কড়া হোন,সেক্ষেত্রে তাহা বিনয়ের খেলাফ হবেনা। 
তবে অতিরঞ্জন করবেননা।
শরীয়াহ খেলাফ কিছু করবেননা।

বড়দের সাথে কড়া কথা বলা যাবেনা।

(০৩)
নম্রতার সাথে বিষয়টি হ্যান্ডেল করতে হবে।

তাদের সাথে কড়া হয়ে কথা বলা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...