আসসালামু আলাইকুম। আমি, একজন চিকিৎসক। ক্যারিয়ার চলাকালীন অবস্থায়, আমার স্বামীর সাথে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। বিয়ের পর থেকেই আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা কম। ও কোন কথাই আমার সাথে শেয়ার করে না। কথায় কথায় শুধু রাগ দেখায়। কথা কোন কথাই একদম বলতে চায় না,। শুরুতে আমার দ্বীনের জ্ঞান ছিল না, আস্তে আস্তে আলহামদুলিল্লাহ এসেছে। গত সাত মাস আগে, আমার কোর্সের একটা পরীক্ষা ছিল, সেটার জন্য, পড়াশোনা করতে চাই কিন্তু বিভিন্ন সময় আমার স্বামীর, খোঁচা দিয়ে কথা, অল্প কথাতেই রাগারাগি, কথা বলা বন্ধ হওয়া, এসব দেখে, আমার মনটা এত খারাপ হয়, ইস্তেখারা শুরু করি কোর্স বাদ দিব কিনা। ইস্তেখারা করতে থাকে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারি নাই মনটা খুব অস্থির থাকে। স্বামীকে জিজ্ঞেস করলে সে কোন কথার উত্তর দেয় না। কোর্স ছেড়ে দিবো কিনা নাকি কন্টিনিউ করবো কিছুই বলেনা।এত বেশি অবহেলা অবজ্ঞা পাচ্ছি , সবরের চেষ্টা করছি । কিন্তু পাচ্ছিনা একেবারে। কোন বিষয় জিজ্ঞেস করলে, ঠিকঠাক উত্তরও দেয় না। কিন্তু উনি ওনার ফ্যামিলির সবার সাথে খুব ভালো। বাইরের সবার সাথে ও খুব ভালো। আমার প্রতিটা কথায় খুব বিরক্ত হয়। ইস্তেখারা করতে করতে, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না মন শান্ত হচ্ছিল না, স্বপ্ন দেখছিলাম না। এদিকে বাবার ফ্যামিলি থেকে চাপ আসে পরীক্ষা দিতে হবে,,শশুর ফ্যামিলি থেকে, এবং স্বামীর থেকেও চাপ আসে,আমার সিদ্ধান্ত আমার , কিন্তু কোন বিষয়ের জন্য আমার ফ্যামিলি যেন তাকে দোষারোপ না করে, এই মানসিক অবস্থা নিয়েই ইস্তেখারা চলতে থাকে, আর, ইচ্ছা ছিল না, তবুও পরীক্ষাটা দিতে হয়। পরীক্ষা দেয়া এবং পরীক্ষার পরবর্তী পুরোটা সময়, আল্লাহর কাছে এত কান্নাকাটি করেই যে আল্লাহ আমার জন্য যেটা ভালো সেটা দিয়ে দেন, কিন্তু পরীক্ষায় পাস আসে। আমার স্বামী, ও আমার থেকে একটা ছোট ডিগ্রি করতেছে, ওর মনটা আমার রেজাল্টের পরে একটু খারাপ দেখি। ও মাঝেমধ্যেই আমাকে বলতো, আমি তার জীবনটাকে জাহান্নাম বানিয়ে দিচ্ছি। আমার জন্য তার দুনিয়ার জিন্দেগী কাটতেছে না। কিন্তু শায়খ, এক আল্লাহর সাক্ষী, আমি সব সময়ই চেষ্টায় থাকি যেন সে কষ্ট না পায়, তার খেদমত করার চেষ্টা করি, কিন্তু আমি বুঝিও না কোন কথায় সে কষ্ট পেয়ে যায় রিয়াক্ট করে, রাগ করে বসে থাকে, কথা বন্ধ করে বসে থাকে,আমার পাঁচ বছরের বাচ্চাটা আছে , ওর সাথেও মাঝেমধ্যে রাগ দেখায়। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আল্লাহর কাছে দোয়া করছি আল্লাহ যেন আমাকে স্বামীর জন্য চক্ষু শীতলকারীনি বানায় দেন,
১.উনি যে আমাকে,বলেন আমার জন্য তার জীবন জাহান্নাম, এর জন্য কি আল্লাহর কাছে আমাকে জবাব দিহি করতে হবে । কারণ আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি, ভয়ে ভয়ে কথা বলি, তাকে আমি প্রচন্ড ভয় পাই কোন কথাতে রাগ করে বসে থাকে, মাঝেমধ্যে খুব কষ্ট দিয়ে কথা বলে, অনেক বেশি ইগনোর করে অবজ্ঞা করে অবহেলা করে, তবুও সবর করার চেষ্টা করি। উনার এই কথার জন্য আল্লাহ কি আমাকে জাহান্নামে নিবেন?উনি কি চায় এটাও বলবে না
২.আমি টানা ইস্তেখারা করতে থাকি, এখনো করছি, রেজাল্ট আসার পর ও মন শান্ত হচ্ছে না। আমিতো রেজাল্ট এর আগে দোয়া করেছিলাম আল্লাহ যেটা আমার জন্য দুনিয়া আখেরাতের জন্য ভালো মনে করেন সেটা যেন করেন । কিন্তু রেজাল্ট হওয়ার পরেও মন শান্ত হচ্ছে না। আমি বুঝতেছিনা আল্লাহ তায়ালা আমার দোয়া কবুল করছেন কিনা। আমি অনেক বেশি গুনাহগার কিনা। ভাবে কথা বললে উনি অন্য ভাবে বোঝে।খুব কান্না করি, খুব পেরেশানিতে আছি । এ অবস্থায় কোর্স কন্টিনিউ করলেও, আবার সংসারে অশান্তির তৈরি হবে না, (আসলে উনি বলেন উনি আমার কোর্সের বিপক্ষে না, কিন্তু এই রিলেটেড কোন প্রশ্ন করলে, যেহেতু উনি ও ডাক্তার, বা কোন বিষয়ের মতামত জানতে চাইলে, কোন কাগজপত্রের কাজ করে দিতে বললে, বলেন উনি পারবেন না, উনি এসব কিছু জানেন না, আমার যা ইচ্ছা আমি যেন তাই করি, একবার উনি আমাকে বললেন উনি আমার জন্য দাইউস হতেও রাজি আছেন)। এসব মানসিকভাবে আমাকে খুব দুর্বল করে দিচ্ছে। মন প্রায় সময় খারাপ থাকে। কোর্সের ক্ষেত্রে, দুই বছর পার হয়েছে, আরো তিন বছর আছে। উনি করছে চান্স পাওয়ার আগে বলেছিলেন,বেবি নিয়ে , ছোট কোন কোর্স করতে। দিনের জ্ঞান না থাকায়, তখন এই বড় কোর্সটাতে জয়েন করি। এ অবস্থায় আসলে বুঝতেছিনা উনি মনে মনে কি চাচ্ছেন। উনার এই ব্যবহারও নিতে পারছি না। কোর্সটাতেও আরো অনেক বেশি প্রেসার। এমত অবস্থায়, ইস্তেখারা করে আল্লাহর কাছে সিদ্ধান্ত জানতে চাচ্ছিলাম, কিছুই বুঝতেছিনা। মনে অশান্ত অবস্থা থাকছেই। এদিকে নতুন করে তিন বছরের প্রিপারেশন নেয়ার জন্য নতুন করে, ডিউটি শুরু করে দিতে হবে। শায়খ, আমি আল্লাহকে, ভয় করছি, আল্লাহর কাছে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে, দুনিয়াতেও অশান্তি তে থাকছি। আখেরাতেও শাস্তি পেতে হবে, স্বামীকে দেওয়া অজান্তে কষ্টের জন্য। আমি এমতাবস্থায় কি করব? কোনভাবে আমার স্বামীর সাথে আলোচনা করা সম্ভব না,
৩.এমতাবস্থায়, ইস্তেখারা করে কোন ডিসিশন এ আসতে পারছি না, বাঁ ইস্তেখারা করার পরেও মনটা অশান্ত কেন?ইস্তেখারার রেজাল্ট আমি জানি , হয় স্বপ্নে দেখা হবে, নয়তো, কাজ সহজ হয়ে যাবে, অথবা মন ওই দিকে ঝুঁকে যাবে.। বুঝতে পারছি না, মনের অবস্থা ও কাজের সহজ হওয়ার মধ্যে মিল নেই। ঈমানের পারদ যখন বেশি থাকে, তখন মনে হয় সাহাবীওয়ালা জিন্দেগি যাপন করব, যাই হয়ে যাক না কেন, সবকিছু ছেড়ে দিয়ে, ফাতেমা রাঃ এর মত হওয়ার চেষ্টা করব। আবার পারো যখন নেমে যায়, তখন দুনিয়াবী কিছুটা হলেও চিন্তা মাথায় ভর করে।
৪.আমার কোর্সটাতে,(যেহেতু শুধু মেয়েদের সেবা দেয়ার জন্য)কিন্তু অনেক বেশি গীবত , অনেক বেশি দুনিয়াবী আলোচনা, অনেক হিংসা, অহংকার এগুলির প্রাধান্য অনেক বেশি। শায়খ, এই অবস্থায় আসলে, আমি আর কি করতে পারি? আমার স্বামী বলছে কোর্স ছেড়ে দিলেও যে সব ঠিক হবে তার কোন ঠিক নাই। তার আমার সাথে ভালো ব্যবহার করা সম্ভব না, আমাকে দেখলেই নাকি তার খারাপ ব্যবহার চলে আসে।সংসার সেপারেশনের কথা বারবার বলে, ভয় হচ্ছে তিন বছরের কোর্সে যদি আরো বেশি, অবস্থা খারাপ হয়ে যায় /নাও যেতে পারে এসব চিন্তা মাথায় আসছে,আবার অন্যদিকে , কোর্সের পাস করা এবং এর পরের কাজগুলো সহজ হয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছি না কি করব? ইস্তেখারাতে আমি কখনোই সিদ্ধান্ত আসতে পারি না? আসলে আমি অনেকদিন ইস্তেখারা করছি, নরমালি কত দিন ইস্তেখারা করার নিয়ম? টানা সাত দিনও করে দেখছি. আল্লাহ আমাকে মাফ করুন। উল্লেখ্য আমার স্বামী ও দ্বীনদার। আমার স্বামী আর কোন সন্তান নিতেও চায় না। যদিও সে কোর্সের আগে চেয়েছিল। এমতাবস্থায়, কোন দিকে আগানো উচিত? দয়া করে জানাবেন
.