ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
জবাব,
بسم الله
الرحمن الرحيم
প্রিয় প্রশ্নকারী
ভাই, বিয়ে-শাদি আকীকা কিংবা এ জাতীয় কোনো বৈধ অনুষ্ঠানে কেউ যদি আমন্ত্রিত হয় তখন সেখানে
কোনো উপহারসহ উপস্থিত হওয়া নিষেধ নয়। কেননা, উপহার প্রদান এবং অন্যের আনন্দে শরিক হওয়া মৌলিকভাবে
এ দুটোই ইসলামসমর্থিত; বরং এ দুটি বিষয় ইসলামে কাঙ্ক্ষিতও।
রাসুলুল্লাহ
ﷺ বলেছেন,
تَهَادَوْا
فَإِنَّ الْهَدِيَّةَ تُذْهِبُ وَغَرَ الصَّدْرِ
তোমরা পরস্পরে
হাদিয়া বিনিময় করো। এর দ্বারা অন্তরের সঙ্কীর্ণতা ও হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয়ে যায়। (মুসনাদে
আহমদ ৯২৫০)
অপর হাদীসে
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
حَقّ
الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ خَمْسٌ رَدّ السّلاَمِ وَعِيَادَةُ الْمَرِيضِ
وَاتِّبَاعُ الْجَنَائِزِ وَإِجَابَةُ الدّعْوَةِ وَتَشْمِيتُ الْعَاطِسِ.
এক মুসলমানের
ওপর আরেক মুসলমানের পাঁচটি অধিকার- ১. সালামের জবাব দেওয়া,
২. অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া,
৩. জানাযায় শরিক হওয়া,
৪. দাওয়াত করলে তা রক্ষা করা,
৫. হাঁচির জবাবে দুআ পড়া। (সহীহ বুখারী
১২৪০)
সুতরাং সামাজিক
চাপ নয়; হাদিয়া আদান-প্রদান হওয়া উচিত খুশি মনে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে।
দুই. কিন্তু
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমরা এই সুন্দর ও স্বাভাবিক বিষয়টিকে একপ্রকার সামাজিক বাধ্যবাধকতা বানিয়ে ফেলেছি।
এ বাধ্যবাধকতা দুই দিক থেকেই। যিনি আমন্ত্রিত, তিনি ভাবেন-একটি মানসম্মত উপহার ছাড়া সেখানে যাওয়া
যাবে না। আবার যারা আমন্ত্রক, তারা অতিথিদের বরণ করার তুলনায় উপহার গ্রহণের প্রতিই অধিক মনোযোগী
হয়ে থাকেন। উপহার গ্রহণের জন্য থাকে ভিন্ন ব্যবস্থাপনা। এবং সেটাও অনেকটা এমনভাবে,
যেন চক্ষুলজ্জার কারণে হলেও কেউ উপহার
প্রদান না করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে না পারেন। যেন এটাই এখন সামাজিকতা। অথচ জাতীয়
সামাজিকতা পরিত্যাজ্য। কেননা, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
أَلَا لا
يَحِلُّ مالُ امرِىءٍ إلا بِطِيبِ نفسٍ منه
খবরদার! একজন
মুসলমানের যে কোনো জিনিস তার মনের সন্তুষ্টি ছাড়া অপর মুসলমানের জন্য হালাল নয়। (সহিহ
আলজামি’ ৭৬৬২) (সংগৃহীত)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রথমত যে বিয়ে
বাড়িতে গান বাজানো হয়, গায়ে
হলুদের মতো অনুষ্ঠান করা হয়, ওই বাড়িতে দাওয়াত খেতে না যাওয়াই উত্তম হবে। এবং ঐ সমস্ত শরীয়ত
বিরোধী কাজে শরীক হওয়া কখনো জায়েয হবে না। শরীয়ত বিরোধী কাজে শরীক হওয়া ব্যতিত দাওয়াত
খেতে যাওয়া জায়েয হলেও দাওয়াত না খাওয়াই উত্তম হবে।
২য়ত আপনার স্বামীর আর্থিক দিকে বিবেচনায় শুধুমাত্র সামাজিকতা
রক্ষার নামে সেখানে না যাওয়া উচিত। কারণ সাধারণত প্রশ্নে উল্লেখিত সকল কাজ
কু-প্রথার অন্তর্ভুক্ত, এতে
সন্তুষ্টি চিত্তে টাকা দেয়না। তাই এটি জায়েজ নেই।