পশু পালন, বর্গা, মুদারাবা, মুরাবাহা বিনিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ।
পূর্বের প্রশ্নের উত্তরের (পূর্বের প্রশ্ন) ভিত্তিতে "মুফতী ওলি উল্লাহ" উস্তাদের কাছে জানতে চাই
বর্গা শর্তে :
আপনি যে উত্তম বর্গা পদ্ধতিটি বর্ণনা করেছেন তা বর্গা গ্রহণকারীর কাছে উত্তম হবে বলে মনে হয় না। কারণ যারা বর্গা নেয় তাদের সাধারণত পশু কেনার সামর্থ্য থাকে না, যেখানে পশুর অর্ধেক মূল্য প্রথমেই পরিশোধ করতে হবে। এই জন্যই বর্গা গ্রহণকারীর কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
---
এই ভাবে হবে কিনা -
আপনার মতে, পশুর মূল্য নির্ধারণ করলাম ৫০ হাজার টাকা।
বর্গা গ্রহণকারীর নিকট বিক্রি করলাম। অর্ধেক মূল্য এখন না নিয়ে , বর্গা গ্রহণকারীর সুবিধাজনক সময় যেমন, বিক্রির সময় সম্পূর্ণ টাকা নিলাম।
এরপর লাভ (বাছুর, দুধ কিংবা এর সমপরিমাণ টাকা ) ২জনে ভাগ করে নিলাম। পশুপালন খরচও ২জনের।
এটি আমার প্রশ্নে উল্লেখিত বর্ণনার মতো। শুধু খরচ ২ জনের সমান
১. এটি কি জায়েজ হলো? না হলে কারণ ?
পারিশ্রমিক শর্তে :
একটা নির্দিষ্ট সময় যেমন একটি গাভী লালন পালন, এরপর বাচ্চা প্রসব পরবর্তী বিক্রি পর্যন্ত।
উভয়ের সন্তুষ্টিতে পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা হলো। যেমন মাসে ৩০০-৫০০ টাকা কিংবা পুরো সময়ে ৩০০০-৫০০০ টাকা।
পশু খাদ্য আমার (খাদ্য সে কিনবে , খাদ্যের টাকা পশু বিক্রির সময় পরিশোধ হবে) এবং লোকসান হলেও আমার। কিন্তু তার কোনো লোকসান নেই, আছে শুধু লাভ
শ্রমিক যদি স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে নিজের কিংবা অন্যের ক্ষেত থেকে ঘাস কিংবা অন্য কিছু খাওয়ায় তা তার মূল্য আমি দিতে বাধ্য নই।
শ্রমিক যদি স্বেচ্ছায় অন্যের ক্ষেত থেকে ঘাস কিংবা অন্য কিছু খাওয়ায়। আর তার মধ্যে ক্ষেতের মালিকের সম্মতি নেই তাহলে এই হারাম খাদ্যের জন্য পশুর মালিক দায়ী থাকিবে না।
আমি চাইলে তার সমান মুনাফা লাভ করার পর অতিরিক্ত মুনাফা আবার ২ জনের মধ্যে ভাগ করে নিতে পারি। এক্ষেত্রে ২ জনের সমান মুনাফা হবে।
এটি ঐচ্ছিক। এটি নির্ভর করবে সফলতার হার, লাভের পরিমাণ, অতিরিক্ত শ্রম, কেনা খাদ্য ছাড়া আর কোনো খাদ্য সে স্বেচ্ছায় খাইয়েছে কিনা ইত্যাদির উপর।
---------------
আমার মতে এই (আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৩৯৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩৮) ফাওয়ার চেয়ে আমার পদ্ধতি আরও উত্তম। কারণ শ্রমিক উভয়ের সন্তুষ্টিতে পারিশ্রমিক পাবে। আবার শ্রম বিবেচনায় পারিশ্রমিক + অতিরিক্ত পাচ্ছে।
২. এটি কি জায়েজ হলো? না হলে কারণ ? অথবা জায়েজ হতে সংশোধন প্রয়োজন ?
৩. মুদারাবা (Mudaraba) ইসলামিক বিনিয়োগ পদ্ধতি।
আমি বিনিয়োগকারী (রাব-উল-মাল) মূলধন প্রদান করবো এবং অন্যজন (মুদারিব) সেই মূলধন ব্যবহার করে ব্যবসা পরিচালনা করবে । হতে পারে সে পশুপালন করবে কিংবা অন্য কোনো ব্যবসা যেখানে ২জনের সম্মতি আছে।
মুনাফা:
মূলধন + খরচ বাদে মুনাফা একটি পূর্বনির্ধারিত %(ফিক্সড এমাউন্ট নয় ) অনুযায়ী ভাগ হবে।
যদি ব্যবসায় ক্ষতি হয়, তাহলে আমি বিনিয়োগকারী পুরো ক্ষতির দায় বহন করব। (যদি মুদারিব কোনো গাফিলতি বা প্রতারণা না করে)।
ক্ষতি ভাগাভাগি:
ক্ষতির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আমি বিনিয়োগকারী মূলধন হারাবো।
মুদারিব তার শ্রমের বিনিময়ে কিছুই পাবে না, তাকে ক্ষতির দায় বহন করতে হবে না, যদি না তার গাফিলতি বা প্রতারণার কারণে ক্ষতি হয়।
এটি কি ঠিক আছে নাকি সংশোধন কিংবা সংযজন প্রয়োজন ?
৪. মুরাবাহা (Murabaha) পদ্ধতি
আমার পণ্য/দোকান নেই ,টাকা আছে
অন্যের পণ্য প্রয়োজন কিন্তু টাকা নেই।
এখন আমি নগদ টাকায় তাকে পণ্য কিনে দিলাম।
উভয়ের সম্মতিতে পণ্যের মুনাফা নির্ধারণ করা হলো।
এরপর উভয়ের সম্মতিতে কিস্তিতে কিংবা এককালীন সময়ে সে মুনাফাসহ পণ্যের মূল্য পরিশোধ করলো।
বর্ণিত পদ্ধতি জায়েজ হলো কিনা