আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায।

১) উস্তায এ পর্যন্ত যত গীবত করেছি,মানুষকে অপবাদ দিয়েছি। সবার কাছে ক্ষমা চাওয়া সম্ভব নয়। আর ক্ষমা চেয়েছিও যদিও, কিন্তু মন থেকে ক্ষমা করেছে কি না জানিনা। তাই কাফফারা স্বরুপ তো নিজের গুনাহ মাফের জন্য তাদের ভান্ডারে যেন সাওয়াব পৌছায় সেই নিয়তে দান করতে হয় তাই না? আমি এখানে নিয়ত কী রাখব?

২) আমি ঘর থেকে তেমন বের হইনা, তো এক্ষেত্রে আমি যদি আমার বাসার একটা কৌটাতে আজকেই ১০০০ টাকা রাখি, এবং নিয়ত করি যে,
রমজানের প্রথম ২০ দিন ৫০০ টাকা দান হবে প্রতি রাতে অল্প অল্প করে, আর বাকি ১০ দিন প্রতিরাতে বাকি ৫০০ টাকা থেকে অল্প অল্প করে দান হবে।

এবং নিয়ত রাখি যে ; এই রমজানের পরে কোনো এক সময় এই টাকা আমি দ্বীনের কাজে ব্যবহার করব। নিজের ব্যক্তিগত খাতে ব্যবহার করব না।
তাহলে কি উস্তায এই নিয়ত ও টাকা যে রাখতেছি, আমার গুনাহ মাফ হবে? অন্যদের নামে যে গীবত করেছিলাম তার কাফফারা হিসেবে?

৩) উস্তায এইযে রমজানের শেষ ১০ রাতে যে ৫০০ টাকা অল্প অল্প করে দান হবে এই নিয়তে আজকেই রেখে দিলাম ৫০০ টাকা একটা কৌটায়। তো তাহলে নিশ্চয়ই, শবে কদরের রাতে ও তা দান হবে। মানে কাফফারা স্বরুপ দান হবে।
কিন্তু আমি জানি শবে কদরের রাতে কোনো আমল করলে সেটা টানা ৮৩ বছর আমলের সমান হয়, বা এরকম কিছু। তাহলে সে রাতে কি আমি যেটুকু টাকা দানের নিয়ত করেছিলাম গীবতের কাফফারা স্বরুপ, সেটা ৮৩ বছর ধরে দান হওয়ার সাওয়াব হবে?

1 Answer

0 votes
by (598,170 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "إِنَّ مِنْ كَفَّارَةِ الْغِيبَةِ أَنْ تَسْتَغْفِرَ لِمَنِ اغْتَبْتَهٗ تَقُولُ: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلَهٗ. رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ الدَّعَوَاتِ الْكَبِيرِ".

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গীবতের কাফফারাহ্ হলো, গীবতকারী যার গীবত করেছে, তার জন্য মাগফিরাত প্রার্থনা করবে এবং এভাবে বলবে, হে আল্লাহ! আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করো।
(আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর লিল বায়হাক্বী ৪৭৮,মেশকাত ৪৮৭৭)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় এসেছেঃ

(إِنَّ مِنْ كَفَّارَةِ الْغِيبَةِ) গীবতের কাফফারার মধ্য হতে এটি একটি। অর্থাৎ যথাযথভাবে তাওবাহ্ করার পর গীবতের কাফফারার মধ্যে একটি হচ্ছে :

(أَنْ تَسْتَغْفِرَ لِمَنِ اغْتَبْتَهٗ) তুমি যার গীবত করেছ তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।

(تَقُولُ: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلَهٗ) এ কথা বলে, হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে ও তাকে ক্ষমা করে দাও। (এখানে বহুবচন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যদি গীবতকারী দলবদ্ধ জামা‘আত হয়, সেদিকে লক্ষ্য করে অথবা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি লক্ষ্য করে)

হাদীসের আলোকে প্রতীয়মান হয় যে, এ ধরনের ক্ষমা প্রার্থনা তখন হবে যখন গীবত তার নিকট না পৌঁছে। যদি গীবত তার কাছে পৌঁছে থাকে তাহলে অবশ্যই তার নিকট থেকে ক্ষমা চেয়ে মুক্তি নিতে হবে এভাবে : তার নিকট গিয়ে উক্ত কথা উল্লেখ করে ক্ষমা চাইবে। যদি তা করা সম্ভব না হয়, তাহলে প্রতিজ্ঞা করবে যে, যখনই তাকে পাবে তার নিকট গিয়ে ক্ষমা চাইবে। যদি সে ক্ষমা করে দেয় তাহলেই তার ওপর থেকে দায়িত্বমুক্ত হবে। আর যদি এ সমস্ত কাজ করতে অপারগ হয় গীবতকৃত ব্যক্তির মারা যাওয়ার কারণে বা তার অনুপস্থিতির কারণে সেক্ষেত্রে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং তার অনুগ্রহ ও দয়া কামনা করবে এবং প্রতিপক্ষকে নিজ দয়ায় যেন সন্তুষ্ট করে দেন সেই প্রার্থনা করবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি তাদের জন্য 
মাগফিরাত প্রার্থনা করবেন এবং এভাবে বলবেন, হে আল্লাহ! আমাকে ও তাদেরকে ক্ষমা করো।

চাইলে তাদের জন্য ঈসালে ছওয়াবও করতে পারেন,নামাজ/কুরআন তিলাওয়াত করে ছওয়াব বখশিয়ে দিতে পারেন।

(০২)
আপনি যেদিন দান করবেন,সেদিন দান করলে যেমন ছওয়াব পাওয়া যায়,সেই ছওয়াব পাবেন।

দান করলে ছগিরা গুনাহ মাফ হবে।
কবিরা গুনাহ মাফের জন্য মূলত তওবা আবশ্যক। 

(০৩)
আপনি যদি আসলেই শবে কদর পেয়ে যান,আর সেই রাতেই যদি দান করেন,সেক্ষেত্রে হাজার মাসে উক্ত টাকা দান করা সমপরিমাণ ছওয়াব আপনি পাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 125 views
...