আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in সাওম (Fasting) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায

১।আমার সন্তানের বয়স আজ ৪১দিন।আমার নেফাসের রক্ত এখনো ভালো হয়নি।কিন্তু ৪০দিন পার হওয়াতে নামাজ শুরু করেছি আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমি রোজা করতে চাচ্চিলাম।আমার বাচ্চা বুকের দুধই খাচ্ছে শুধু আলহামদুলিল্লাহ। বাচ্চা ১ঘন্টা দুধ খেতে দেরি করলে শক্ত হয়ে যায় আর আমার জামা ও ভিজে যায়। এখন বাচ্চা যেহেতু যথেষ্ট দুদ পাচ্ছে তাই রোজা রাখতে চাচ্ছিলাম। এতে কি বাচ্চার হক নষ্ট  হবে?

২। রোজা রেখে দেয়ার পর যদি দুধ না পায়(আল্লাহ ভরসা) বাচ্চার কষ্ট হয়  তখন কি রোজা ভেঙে ফেলার অবকাশ আছে?

৩।আমি আজ ফতোয়া পড়ার সময় জেনেছি যে সমলিঙ্গের মানুষ একসঙ্গে ঘুমানো শর্তসাপেক্ষে জায়েজ। বিপরীত লিঙ্গ আলাদা তোষক/লেপ নিলেও উচিত না।৷

আমার সন্তান প্রসবের পর আমার শাশুড়ী আমার স্বামীকে আমাদের রুমে ২রাত থাকতে দেননি। আমার সাথে আমার আম্মু ছিল। ঐ দুই রাত আমার স্বামী আমার শাশুড়ির সাথে এক বিছানাতে ছিল আলাদা কম্বলে। শাশুড়ির আলাদা রুম আছে কিন্তু আমার পাশের রুমে আমার প্রয়োজন হবে ভেবে ছিলেন। এমন শোয়াতে কি গোনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (598,170 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/18730/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
সুরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

مَنۡ کَانَ مَرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَ لَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَ لِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَ لِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾

রমাদান মাস, এতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হেদায়াতের জন্য এবং হিদায়তের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে। তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ চান এবং তোমাদের জন্য কষ্ট চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূর্ণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন সে জন্য তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

★গর্ভবতী নারী যদি নিজের স্বাস্থ্যহানি বা সন্তানের স্বাস্থ্যহানির আশংকায় রোজা না রাখে, তাহলে এক্ষেত্রে বিধান হচ্ছে- গর্ভবতী নারীর দুইটি অবস্থার কোন একটি হতে পারে:

১. শারীরিকভাবে শক্তিশালী ও কর্মোদ্যমী হওয়া, রোজা রাখতে কষ্ট না হওয়া, গর্ভস্থিত সন্তানের উপর কোন প্রভাব না পড়া- এ নারীর উপর রোজা রাখা ফরজ। যেহেতু রোজা ছেড়ে দেয়ারজন্য তার কোন ওজর নেই।

২. গর্ভবতী নারী রোজা রাখতে সক্ষম না হওয়া: গর্ভ ধারণের কাঠিন্যের কারণে অথবা তার শারীরিক দুর্বলতার কারণে অথবা অন্য যে কোন কারণে। এ অবস্থায় এ নারী রোজা রাখবে না। বিশেষতঃ যদি তার গর্ভস্থিত সন্তানের ক্ষতির আশংকা করে সেক্ষেত্রে রোজা ছেড়ে দেয়া তার উপর ফরজ। যদি সে রোজা ছেড়ে দেয় তাহলে অন্য ওজরগ্রস্ত ব্যক্তিদের যে হুকুম তার ক্ষেত্রেও একই হুকুম হবে তথা পরবর্তীতে এ রোজাগুলো কাযা পালন করা তার উপর ফরজ। 

অর্থাৎ সন্তান প্রসব ও নিফাস থেকে পবিত্র হওয়ার পর এ রোজাগুলো কাযা পালন করা তার উপর ফরজ। তবে কখনো হতে পারে গর্ভধারণের ওজর থেকে সে মুক্ত হয়েছে ঠিক; কিন্তু নতুন একটি ওজরগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, অর্থাৎ দুগ্ধপান করানোর ওজর। দুগ্ধপানকারিনী নারী পানাহার করার মুখাপেক্ষী হয়ে পড়তে পারে; বিশেষতঃ গ্রীষ্মের দীর্ঘতর ও উত্তপ্ত দিনগুলোতে। এ দিনগুলোতে এমন নারী তার সন্তানকে বুকের দুধ পান করানোর জন্য রোজা ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এমতাবস্থায় আমরা সে নারীকে বলব: আপনি রোজা ছেড়ে দিন। এ ওজর দূর হওয়ার পর আপনি এ রোজাগুলো কাযা পালন করবেন।”
(ফাতাওয়াস সিয়াম পৃষ্ঠা-১৬২)
,
“গর্ভবতী ও দুগ্ধপানকারিনী নারীর ব্যাপারে ইমাম আহমাদ ও সুনান সংকলকগণের গ্রন্থে সহিহ সনদে আনাস বিন মালিক আল-কাবী এর বর্ণিত হাদিস নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি এ দুই প্রকারের নারীকে রোজা ছেড়ে দেয়ার অবকাশ দিয়েছেন এবং এদেরকে মুসাফিরের পর্যায়ে গণ্য করেছেন। অতএব, জানা গেল যে, এরা মুসাফিরের মত রোজা না-রেখে পরবর্তীতে কাযা পালন করবে। আলেমগণ উল্লেখ করেছেন যে, রোগীর অনুরূপ কষ্ট না হলে অথবা সন্তানের স্বাস্থ্যহানির আশংকা না থাকলে এ দুই শ্রেণীর নারীগণ রোজা ছেড়েদিবে না। 
(মাজমুউল ফাতাওয়া ১৫/২২৪)
,
আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে রোযা রাখলে আপনার বাচ্চার হক নষ্ট হবেনা।
এক্ষেত্রে ইফতার ও সাহরীর সময় আপনি পুষ্টিকর খাবার খাবেন,দুধ খাবেন,যাতে বাচ্চার দুধের ঘাটতি না হয়।
কষ্টকর হলে সেক্ষেত্রে রোযা নাও রাখতে পারেন।

(০২)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ওযরের কারনে আপনার জন্য রোযা ফেলার অবকাশ রয়েছে।। এক্ষেত্রে পরে কাজা আদায় করতে হবে। কাফফারা আবশ্যক হবেনা। 
আপনার মারাত্নক আকারে অনেক কষ্ট হলে বা বাচ্চার স্বাস্থ্যহানির আশংকা থাকলে রোযা ছেড়ে দিতে পারবেন। নতুবা ছেড়ে দেয়া জায়েজ হবেনা। 
,
«وَعَوَارِضُ الصَّوْمِ الَّتِي قَدْ يُغْتَفَرْ ... لِلْمَرْءِ فِيهَا الْفِطْرُ تِسْعٌ تُسْتَطَرْ

حَبَلٌ وَإِرْضَاعٌ وَإِكْرَاهُ سَفَرْ ... مَرَضٌ جِهَادٌ جُوعُهُ عَطَشٌ كِبَرْ» - «حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» 2/ 421)

নয়টি কারণে রোযা না রাখার অুনমোদন রয়েছে, গর্ভ,দুগ্ধপান,জোড়জবরদস্তী,সফর,অসুস্থতা,জিহাদ,অনাহার,পিপাসা,বৃদ্ধ( রদ্দুল মুহতার-২/৪২১)

(০৩)
এমন শোয়া কোনোভাবেই জায়েজ নেই।
এতে উভয়ের গুনাহ হয়েছে।

আল্লাহর কাছে খালেস দিলে তওবা করতে হবে। 
ভবিষ্যতে আর কোনোভাবেই এভাবে একই রুমে ঘুমাবেনা,বলে আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ হতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 39 views
0 votes
1 answer 241 views
...