আলাদা ফজিলত বলতে এতটুকু যে,রোযাদার অবস্থায় ইন্তেকাল করলে, আশা করা যায়, আল্লাহ তাকে মাফ করে দিবেন।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন রমজন প্রবেশ করে— জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। আর জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩২৭৭; মুসলিম, হাদিস : ১০৭৯)
রোযাদার অবস্থায় ইন্তেকাল করলে, আশা করা যায়, আল্লাহ তাকে মাফ করে দেবেন। কিন্তু রমযান মাসে কবরের আযাব মাফ- এমন কোনো কথা পাওয়া যায় না।
সম্ভবত একটি বিষয় থেকে মানুষের মাঝে এ ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। হাদীস শরীফে এসেছে-
إِذَا كَانَتْ أَوّلُ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ، صُفِّدَتِ الشّيَاطِينُ، وَمَرَدَةُ الْجِنِّ، وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ النّارِ، فَلَمْ يُفْتَحْ مِنْهَا بَابٌ، وَفُتِحَتْ أَبْوَابُ الْجَنّةِ، فَلَمْ يُغْلَقْ مِنْهَا بَابٌ، وَنَادَى مُنَادٍ: يَا بَاغِيَ الْخَيْرِ أَقْبِلْ، وَيَا بَاغِيَ الشّرِّ أَقْصِرْ، وَلِلهِ عُتَقَاءُ مِنَ النّارِ، وَذَلِكَ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ.
যখন রমযানের প্রথম রাতের আগমন ঘটে, তখন দুষ্ট জিন ও শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, (সারা মাস) একটি দরজাও খোলা হয় না এবং জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, (সারা মাস) একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না। একজন ঘোষক ঘোষণা করতে থাকে- হে কল্যাণের প্রত্যাশী! আরো অগ্রসর হও। হে অকল্যাণের যাত্রী! ক্ষান্ত হও। আর আল্লাহ তাআলা এ মাসের প্রতি রাতে অসংখ্য মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৬৪২; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ১৮৮৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ১৫৩২
এ বর্ণনার ‘জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়’- এখান থেকে হয়ত কারো মাঝে এ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে যে, তাহলে রমযানে কবরের আযাবও বন্ধ থাকে।
রমযানে জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ থাকে, প্রতি রাতে আল্লাহ বহু মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন এবং রোযাদার অবস্থায় ইন্তেকাল করলে আশা করা যায় আল্লাহ তাআলা মাফ করে দেবেন এবং জান্নাতে দাখেল করবেন- এগুলো সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু রমযানে কবরের আযাব মাফ থাকে- এমন কোনো কথা পাওয়া যায় না।