আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (27 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,
১. একটু আগেই এখানকার অন্যান্য ফতোয়া থেকে জানতে পারলাম যে গর্ভাবস্থায়ও সালাতে দাঁড়ানোর দরুন গর্ভের ক্ষতি না হলে প্রতি রাকাতে দাঁড়ানো বাধ্যতামূলক, নতুবা নামাজ শুদ্ধ হবে না। আমি আগে জানতাম ফরজ বা ওয়াজিব নামাজের প্রথম রাকাত কিংবা অন্তত তাকবীরে তাহরীমাটুকু দাঁড়ানো বাধ্যতামূলক। এজন্য আমার পুরো গর্ভাবস্থার প্রায় বেশিরভাগ সময় আমি ফরজ আর ওয়াজিবেও প্রথম রাকাতে দাঁড়িয়ে এরপর বসে গিয়েছি। কখনো কোমরে ব্যথার জন্য উঠ-বসের কষ্টে, কখনো ক্লান্তিতে, কখনোবা আলসেমিতে। আমি এখন গর্ভাবস্থার শেষ দিকে। এখন যে জানতে পারছি প্রতি রাকাতেই দাঁড়ানো বাধ্যতামূলক, তাহলে বিগত এত মাস ধরে আমার কোনো নামাজই কবুল হয়নি! ইয়া আল্লাহ, কী ভয়ঙ্কর! এখন আমার করণীয় কী? এখন উপায় কী? তাই বলে সব নামাজই কি বৃথা গেল আমার? আল্লাহ ক্ষমা করে দিন আমায়।

২. আমার গর্ভাবস্থার শেষ দিক হওয়া সত্ত্বেও রোজা রাখতে পারছি আলহামদুলিল্লাহ (যদিও ক্ষুধা লাগে, কিন্তু শুয়ে বসে দিন পার করলে পারছি)। তবে প্রসববেদনা শুরু হলে তখন তো প্রসবের জন্য শক্তি সঞ্চয় করতে ভারী খাবার আর পানি খাওয়ার প্রয়োজন হয়। আমার প্রসববেদনা শুরু হলে কি তখন আমি রোজা ভেঙে ফেলতে পারব?

৩. আমার সন্তান ভূমিষ্ঠের পর আমার স্বামী তাহনীক করাবেন ইন শা আল্লাহ। দিনের বেলায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে আমার স্বামী কি তাহনীক করাতে পারবেন? তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন নিজে যেন খেজুর বা তার রস গিলে না ফেলেন, কিন্তু বাই চান্স যদি গলায় চলে যায়? আর না গেলেও চাবানোর সময় স্বাদ তো পাওয়া যায়, তাতে কোনো ক্ষতি হবে রোজার?

1 Answer

0 votes
by (72,810 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/44791/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ، فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصَّلاَةِ، فَقَالَ: «صَلِّ قَائِمًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ»

আমার একবার অর্শগেজ হয়ে গেলো।আমি এমন অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট নামায পড়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে জিজ্ঞাসা করলাম।তখন তিনি প্রতিউত্তরে বললেন,তুমি দাড়িয়ে নামায পড়বে,তারপর দাড়ানো সম্ভব না হলে বসে বসে নামায পড়বে।যদি বসেও সম্ভব না হয় তাহলে হেলান দিয়ে নামায আদায় করবে। (সহীহ বোখারী-১১১৭)

,

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

ولو كان قادرا على بعض القيام دون تمامه يؤمر بأن يقوم قدر ما يقدر

যদি কেউ নামাযে কিছু সময় কিয়াম করার পর  অক্ষম হয়ে যায়,এবং এরপর আর দাড়াতে সক্ষম না হয়,তাহলে তার জন্য হুকুম হল যে, সে নামাযে ততটুকুই দাড়াবে যতটুকু তার জন্য সম্ভব হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৬)

,

তারপর উল্লেখ করা হয়,

وإن عجز عن القيام والركوع والسجود وقدر على القعود يصلي قاعدا بإيماء ويجعل السجود أخفض من الركوع، كذا في فتاوى قاضي خان حتى لو سوى لم يصح، كذا في البحر الرائق.

যদি কেউ নামাযে কিয়াম, রুকু, সিজদা করতে অক্ষম থাকে,কিন্তু সে আবার বসে বসে পড়তে সক্ষম হয়, তাহলে তার জন্য হুকুম হল যে, সে বসে বসে ইশারায় নামায পড়বে এবং সেজদার সময় মাথাকে রুকু থেকে একটু বেশী নিচু করবে। (ফাতাওয়ায়ে কাযীখান)তবে যদি কেউ রুকু এবং সেজদার সময়ে মাথাকে সমান করে রাখে তাহলে তার নামাযই বিশুদ্ধ হবে না। (বাহরুর রায়েক্ব)

,

দুজন বিজ্ঞ মুসলমান ডাক্তার যখন থেকে রুকু সিজদা থেকে বারণ করবে, তখন থেকেই মূলত ইশারার মাধ্যমে রুকু সিজদা করা লাগবে। আর দাঁড়ানোতে যেহেতু গর্ভের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, তাই প্রতি রাকাতে দাড়াতে হবে।

এক্ষেত্রে সময় নিয়ে দাড়াতে এবং বসা লাগলেও নামাজের ক্ষতি হবেনা। এক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে রুকু সেজদার সময় চেয়ারেও বসা যাবে।

,

যখন আর দাড়িয়ে নামাজ পড়া সম্ভব না হবে,তখন বসে আদায় করবে। রুকু সেজদাহ ইশারার মাধ্যমে করবে।

আরো জানুন- https://www.ifatwa.info/1162

আরো জানুন - https://ifatwa.info/13062/

আরো জানুন - https://ifatwa.info/8484/

,

আর যদি বিজ্ঞ মুসলিম ডাক্তার রুকু সেজদাহ করতে বারন না করে,তারা যদি বিষয়টাকে গর্ভের জন্য ক্ষতিকর মনে না করে, তাহলে দাঁড়িয়ে রুকু সেজদাহ সহকারেই নামাজ আদায় করতে হবে।

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অনুমান করে ঐ নামাজগুলো কাযা আদায় করে নিতে হবে। কারণ, দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে সক্ষম ব্যক্তির জন্য দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া ফরজ। আর যেহেতু এটা ভুলবশত হয়ে গিয়েছে তাই আশা করা যায় আল্লাহর কাছে মাফ চাইলে তিনে মাফ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।

,

২. জ্বী হ্যাঁ, তখন রোজা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ হবে (বাচ্চার বা আপনার ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকলে)।

৩. জ্বী হ্যাঁ, দিনের বেলাতেও পারবেন। হালকা চাবিয়ে তাহনীক করাবেন। অত:পর থুথু ফেলবেন। যাতে করে তিনি গিলে না ফেলেন বা গলার মধ্যে চলে না যায় এ ব্যাপারে খুব সর্তক থাকবেন। চাবানোর সময় হালকা স্বাধ পাওয়াতে কোনো সমস্যা নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

No related questions found

...