আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
57 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আমি বিয়ের পর স্বামীর কাছ থেকে হাতখরচ না পাওয়ায় অনলাইনে টুকটাক ফ্রিল্যান্স করে নিজের হাতখরচ চালাতাম এবং সেখান থেকে আমার মা-বাবাকে মাঝেমাঝে হাদিয়া দিতাম।  আমার স্বামীর তেমন আগ্রহ নেই উনার নিজের অর্থ থেকে দেয়ার ব্যপারে। কিন্তু উনি আমার প্রয়োজনীয় ভরণপোষণ ঠিকঠাক ভাবেই দেন। এখন আমি ২সন্তানের জননী। ওদের হক যাতে নষ্ট না হয় এজন্য মোবাইল ফোনের কাজ গুলো ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমার ইনকাম সোর্স নেই আর স্বামীর কাছে নিজের হাতখরচের টাকা চাইলে দেননা তাই আমি উনার থেকে অনুমতি নিয়েছি মাঝে মাঝে উনার মানিব্যাগ থেকে গোপনে ২০/৫০ টাকা নিবো এতে যাতে উনি রাগ না হোন। রাজিও হয়েছেন। এখন আমি মাঝে মাঝেই এভাবে ৫০ টাকা নিয়ে খরচ করি। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই টাকা থেকে কি আমি আমার মা কে কোনো হাদিয়া দিতে পারবো? আমার স্বামী উনার পরিবারকে একটা ভালো এমাউন্ট দিচ্ছেন ঈদের কেনাকাটার জন্য। আমি আমার আম্মা আব্বাকে কিছুই দিতে না পারলে আমার মন ছোট থাকবে কারন আমি বড় সন্তান। আর যে ভাই আছে সে এখনও বাচ্চা। আমার স্বামী নিজে থেকে কিছু দিবেনা। আর আমি দিতে বললেও হয়তো খুশী হয়ে দিবেনা। আমি কি গোপনে নেয়া টাকা থেকে হাদিয়া দিলে এটা জায়েয হবে?

1 Answer

0 votes
by (72,810 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/53526/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

স্বামী যদি প্রয়োজনীয় ভরণ পোষণ আদায় না করে তাহলে স্বামীকে না জানিয়ে স্ত্রীর জন্য স্বামীর টাকা থেকে নিয়ে প্রয়োজনীয় খরচ করা জায়েজ আছে। তবে প্রয়োজন অতিরিক্ত নেয়া জায়েজ হবে না।

হাদিস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: دَخَلَتْ هِنْدٌ بِنْتُ عُتْبَةَ امْرَأَةُ أَبِي سُفْيَانَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ شَحِيحٌ، لَا يُعْطِينِي مِنَ النَّفَقَةِ مَا يَكْفِينِي وَيَكْفِي بَنِيَّ إِلَّا مَا أَخَذْتُ مِنْ مَالِهِ بِغَيْرِ عِلْمِهِ، فَهَلْ عَلَيَّ فِي ذَلِكَ مِنْ جُنَاحٍ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُذِي مِنْ مَالِهِ بِالْمَعْرُوفِ مَا يَكْفِيكِ وَيَكْفِي بَنِيكِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হিন্দা বিনত উতবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে উপস্থিত হয়ে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি। তিনি আমার এবং আমার সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় খরচাদি প্রদান করেন না। তবে আমি তার অজ্ঞাতেই তার সম্পদ থেকে প্রয়োজনীয় খরচাদি গ্রহণ করে থাকি। এতে কি আমার কোন দোষ (পাপ) হবে? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার সম্পদ থেকে তোমার ও তোমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট হয় এমন সঙ্গত পরিমাণ নিতে পার। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৭১৪, ইফাবা-৪৩২৮]

,

অন্য এক হাদিসে এসেছে-

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: قَالَتْ هِنْدٌ أُمُّ مُعَاوِيَةَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ شَحِيحٌ، فَهَلْ عَلَيَّ جُنَاحٌ أَنْ آخُذَ مِنْ مَالِهِ سِرًّا؟ قَالَ: «خُذِي أَنْتِ وَبَنُوكِ مَا يَكْفِيكِ بِالْمَعْرُوفِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মুআবিয়া (রাঃ) এর মা হিন্দ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) একজন কৃপন ব্যাক্তি। এমতাবস্থায় আমি যদি তার মাল থেকে গোপনে কিছু গ্রহন করি, তাতে কি আমার গুনাহ হবে? তিনি বললেন, তুমি তোমার ও সন্তানদের প্রয়োজনানুসারে যথাযথভাবে গ্রহন করতে পার। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২২১১,ইফাবা-২০৬৯]

,

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,

عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "

নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না। (তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)

আরো জানুন- https://www.ifatwa.info/3747

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ২০/৫০ টাকা করে নেওয়া আপনার স্বামীর অনুমতি আছে। তাই এই টাকা দিয়ে কোনো কিছু কিনে আপনার পিতা-মাতাকে হাদিয়া দিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

তবে এই জন্য আবার আপনার স্বামীর পকেট থেকে তার অনুমতি ছাড়া ২০/৫০ টাকার বেশী নেওয়া যাবে না। তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম হলো, আপনার স্বামীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নেওয়া। এভাবে বললেন যে, মাঝে মধ্যে ঐ টাকা থেকে আমার পিতা-মাতার জন্য অল্প কিছু খরচ করে ফেলি। তাহলে আপনার স্বামীও বিষয়টা স্বাভাবিক ভাবে নিলো। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...