আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
35 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (2 points)
আমরা ৭ জন মিলে ২০ লাখ টাকায় একটি জমি ক্রয় করেছি। এক্ষেত্রে ১ লাখ টাকা করে একেকটি শেয়ার রাখা হয়েছে। কেউ কেউ একাধিক শেয়ারও কিনেছেন। মোটকথা ২০ লাখ টাকা আমরা ৭ জন মিলে কমবেশ করে দিয়েছি।কিন্তু দৌড়াদৌড়ি করছি শুধু আমরা দুইজন।এখন আল্লাহ চাইলে কোন জমিটা যদি লাভে বিক্রি করতে পারি তাহলে লাভটা কি এভাবে নিতে পারব?
যথা: যা লাভ হবে সেটার ১৫% আমরা দুজন নিব। (বা ২০% বা ২৫% এমন কোনো ফিক্সড পারসেন্টিজ যেটা আমরা সবাই মিলে বসে চুক্তি করে ঠিক করে নিব)। (যেহেতু খাটাখাটুনি আমরা করতেছি,অন্যরা শুধু টাকা দিচ্ছে)। আর বাকী লাভ যা থাকবে সেটা শেয়ার প্রতি হিসেবে ভাগ করব।
একটু ব্যাখ্যা করে যদি বলি,২০ লাখ টাকা দিয়ে একটি জমি কিনলাম। শেয়ার ধরলাম ২০টি।
আমরা ৭ জনে মিলে একাধিক শেয়ার কিনে ২০ লাখ টাকা জমিয়ে জমিটা কিনলাম,এবং ৩০ লাখ টাকা বিক্রি করে দিলাম। এবার ১০ লাখ লাভ যে হল তার ১৫%  হিসেবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আমরা দুজন রাখব। আর বাকী ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ২০ ভাগ করে (যেহেতু ২০ টা শেয়ার) প্রতি শেয়ারে ৪২ হাজার ৫০০টাকা  করে লাভ দিব।
এভাবে যদি ভাগ করি তাহলে কি শরীয়ত সম্মত হবে?
শরীয়ত সম্মত হলে তো আলহামদুলিল্লাহ। অন্যথায় শরয়ী পন্থা কি হবে সেটি জানিয়ে বাধিত করবেন। জাযাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (68,040 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/53453/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুদারাবার ক্ষেত্রে শরীয়তের উসুল হলো যাহা লাভ হবে,তাহা শতকরা হারে উভয়ের মাঝে বন্টন করার চুক্তি করতে হবে। কোনো নির্দিষ্ট টাকার চুক্তি করা যাবেনা,লোকসান হলে আগে লাভের টাকা থেকে সেটা পূরন করা হবে,অতঃপর মূলধন থেকে পূরন করা হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

بَاب الشَّرِكَةِ وَالْمُضَارَبَةِ

حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اشْتَرَكْتُ أَنَا وَسَعْدٌ، وَعَمَّارٌ، يَوْمَ بَدْرٍ فِيمَا نُصِيبُ فَلَمْ أَجِئْ أَنَا وَلاَ عَمَّارٌ بِشَىْءٍ وَجَاءَ سَعْدٌ بِرَجُلَيْنِ .

শারীকাত (অংশিদারী) ও মুদারাবা ব্যবসা

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন সাদ (রাঃ) , আম্মার (রাঃ) ও আমি গানীমাতের মালের ব্যাপারে অংশীদার হই (এই মর্মে যে, আমরা যা পাবো তা তিনজনে ভাগ করে নিবো)। আম্মার ও আমি কিছুই আনতে পারিনি। অবশ্য সাদ (রাঃ) দু’জন যুদ্ধবন্দী নিয়ে আসেন। (নাসায়ী ৪৬৯৭, আবূ দাউদ ৩৩৮৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/১৯৪, ইরওয়া ১৪৭৪)

 مَالِك وَجْهُ الْقِرَاضِ الْمَعْرُوفِ الْجَائِزِ أَنْ يَأْخُذَ الرَّجُلُ الْمَالَ مِنْ صَاحِبِهِ عَلَى أَنْ يَعْمَلَ فِيهِ وَلَا ضَمَانَ عَلَيْهِ وَنَفَقَةُ الْعَامِلِ فِي الْمَالِ فِي سَفَرِهِ مِنْ طَعَامِهِ وَكِسْوَتِهِ وَمَا يُصْلِحُهُ بِالْمَعْرُوفِ بِقَدْرِ الْمَالِ إِذَا شَخَصَ فِي الْمَالِ إِذَا كَانَ الْمَالُ يَحْمِلُ ذَلِكَ فَإِنْ كَانَ مُقِيمًا فِي أَهْلِهِ فَلَا نَفَقَةَ لَهُ مِنْ الْمَالِ وَلَا كِسْوَةَ قَالَ مَالِك وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يُعِينَ الْمُتَقَارِضَانِ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا صَاحِبَهُ عَلَى وَجْهِ الْمَعْرُوفِ إِذَا صَحَّ ذَلِكَ مِنْهُمَا قَالَ مَالِك وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يَشْتَرِيَ رَبُّ الْمَالِ مِمَّنْ قَارَضَهُ بَعْضَ مَا يَشْتَرِي مِنْ السِّلَعِ إِذَا كَانَ ذَلِكَ صَحِيحًا عَلَى غَيْرِ شَرْطٍ قَالَ مَالِك فِيمَنْ دَفَعَ إِلَى رَجُلٍ وَإِلَى غُلَامٍ لَهُ مَالًا قِرَاضًا يَعْمَلَانِ فِيهِ جَمِيعًا إِنَّ ذَلِكَ جَائِزٌ لَا بَأْسَ بِهِ لِأَنَّ الرِّبْحَ مَالٌ لِغُلَامِهِ لَا يَكُونُ الرِّبْحُ لِلسَّيِّدِ حَتَّى يَنْتَزِعَهُ مِنْهُ وَهُوَ بِمَنْزِلَةِ غَيْرِهِ مِنْ كَسْبِهِ

মালিক (রহঃ) বলেনঃ মুযারাবাত বা শরীকী কারবার এইভাবে বৈধ যে, কেহ কাহারও নিকট হইতে এই শর্তে টাকা নেয় যে, সে শ্রম ও মেহনত করিবে। ক্ষতি হইলে সে দায়ী থাকিবে না। সফরে খাওয়া-দাওয়া এবং বহন খরচ ও অন্যান্য বৈধ খরচ ঐ মাল হইতে নিয়ম মাফিক ব্যয় করা হইবে মূলধন অনুযায়ী। অবশ্য অর্থ গ্রহণকারী আবাসে থাকিলে মূলধন হইতে ব্যয় করিতে পারবে না।

মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি অর্থ গ্রহণকারী অর্থদাতাকে, অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারীকে তাহার শ্রমের পরিমাণ মতো কোন শর্ত ব্যতীত সাহায্য করে তবে তাহাতে কোন ক্ষতি নাই। যদি অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারী হইতে শর্ত ব্যতীত কোন বস্তু খরিদ করে তবে ইহাতেও কোন ক্ষতি নাই।

মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে এবং স্বীয় দাসকে শরীকী কারবারের জন্য অর্থ দেয় এবং এই শর্ত করে যে, উভয়ই ইহাতে কাজ করিবে, তবে তাহা জায়েয আছে। কারণ নির্ধারিত লভ্যাংশের মালিক ক্রীতদাস হইবে, তাহার প্রভু উহা ছিনাইয়া লইতে পরিবে না, এই মালের স্বত্বাধিকারী ক্রীতদাসই থাকিবে। (মুয়াত্তা মালিক ১৩৮৯)

বিস্তারিত জানুনঃ   https://ifatwa.info/6362/

যৌথ ব্যবসার ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি শ্রম দেবে না, তার জন্য মূলধনের হাড়ের চেয়ে কম মুনাফা নির্ধারণ করা জায়েজ আছে। এ ক্ষেত্রে এমন হবে, যে ব্যক্তি শ্রম দিচ্ছে সে সেই শ্রমের বিনিময়ে অতিরিক্ত মুনাফা গ্রহণ করছে। আর অন্যজন যেহেতু কোনো শ্রম দিচ্ছে না, তাই সে একটু কম মুনাফা নিচ্ছে। (বাদায়েউস সানায়ে : ৬/৬৩)

যৌথ কারবারের ক্ষেত্রে যদি এমন হয়ে থাকে যে একজন ব্যবসায় সময় দেয়, অন্যজন দেয় না; তাহলে তাকে পুঁজি অপেক্ষা বেশি মুনাফা দেওয়া জায়েজ আছে।

যেমনখালেদ ও রাশেদ উভয়ে ১০ হাজার টাকা করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু শ্রম শুধু খালেদ দিয়ে থাকে। তাহলে এ ক্ষেত্রে খালের দুই-তৃতীয়াংশ, আর রাশেদ এক-তৃতীয়াংশ এই শর্তে লভ্যাংশ বণ্টন করা জায়েজ আছে। (বাদায়েউস সানায়ে : ৬/৬৩)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে শ্রমদাতা হিসেবে আপনাদের দুজনের জন্য লভ্যাংশ থেকে পারসেন্টিজ নির্ধারণ করে মুনাফা নেওয়া জায়েয আছে। তবে পারসেন্টিজ অবশ্যই সকল শেয়ার হোল্ডারের অনুমতিক্রমে ও সন্তুষ্টিচিত্তে তা নির্ধারিত হতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...