আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
383 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
ধরুন কোন মহিলার স্বামীর সাথে তালাক হয়ে গিয়েছে। তাদের একটি সন্তান আছে ও সে তার মায়ের কাছে থাকে। বাবা নির্দিষ্ট সময় পর পর দেখা করে বাচ্চার সাথে। এমতাবস্থায় ওই মহিলা যদি ইচ্ছা পোষণ করে যে সে অন্য কোন দেশে তার বাবা মা সহ চলে যাবে সেটা কি জায়েজ হবে যেহেতু বাচ্চার বাবার বাচ্চার সাথে সরাসরি নিয়মিত দেখা করার সুযোগ থাকছে না। সেই মহিলা কি অন্য কোন জেলায়ও স্থানান্তরিত হতে পারবে না? উল্লেেেখ্য সে আর বিবাহ করেনিি এবং মা বাবার সাাথে  থাকে।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান মতে তালাকের পর স্ত্রী যদি অন্যত্রে বিবাহ না বসে,এ শর্তে সন্তান ছেলে হলে ৭ বছর,মেয়ে হলে ৯ বছর পর্যন্ত তার লালন পালন স্ত্রী তথা সন্তানের মা করতে পারবে।
এটি তার হক,তবে তিনি অন্যত্রে বিবাহ বসলে তার হক আর থাকবেনা।
এ সময়ের মধ্যে তিনি যদি তার স্বামীর সাথে ঝগড়া করে দূরে চলে যায়,তাহলে সেটি মন্দ বিষয়। 
সন্তানের সাথে দেখা করতে না দেওয়া তার পিতার প্রতি জুলুম।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর সাথে ঝগড়া  না করে,এমনিতেই নিজ প্রয়োজনে অন্য কোনো জেলায় স্ত্রী স্থানান্তরিত হতে পারবে।
তবে  স্বামীর সাথে ঝগড়া করে যদি এমনটি করে,তাহলে সেটি জায়েজ নয়।
,
যেহেতু সন্তানের সাথে তার পিতার হক রয়েছে,যেটি অন্য দেশে গেলে বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে,তাই স্ত্রী তথা সন্তানের মা তাকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে পারবেনা।


আবু দাউদ শরীফের ২২৭৬ নং হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو يَعْنِي الْأَوْزَاعِيَّ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ ابْنِي هَذَا كَانَ بَطْنِي لَهُ وِعَاءً، وَثَدْيِي لَهُ سِقَاءً، وَحِجْرِي لَهُ حِوَاءً، وَإِنَّ أَبَاهُ طَلَّقَنِي، وَأَرَادَ أَنْ يَنْتَزِعَهُ مِنِّي، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنْتِ أَحَقُّ بِهِ مَا لَمْ تَنْكِحِي 

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। একদা এক মহিলা বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এই সন্তানটি আমার গর্ভজাত, সে আমার স্তনের দুধ পান করেছে এবং আমার কোল তার আশ্রয়স্থল। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। এখন সে সন্তানটিকে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি অন্যত্র বিয়ে না করা পর্যন্ত তুমিই তার অধিক হকদার।
(আহমাদ, হাকিম। ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেন: সনদ সহীহ।)

দারুল উলুম দেওবন্দ এর 19755 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে সাত বছর ছেলে সন্তান আর নয় বছর মেয়ে সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব তার মার হয়।
কিন্তু খরচ বাবার।
এর পর পিতা নিতে পারবে,যদি মায়ের কাছে সন্তানের থাকার দরুন তার আখলাক মন্দ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে,তাহলে তার আগেই তাকে তার বাবা নিতে পারবে।
মা ঝগড়া করে সন্তানকে নিয়ে অন্যত্রে চলে যাওয়া,অনেক মন্দ বিষয়। 
,
মোট কথা পিতার সাথে তার দেখা করতে না দেওয়া, এটি সন্তানের বাবার উপর জুলুম।
নয় বছর পর মেয়ে সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব তার পিতার।
,
জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের 144001200246 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে সাত বছর ছেলে সন্তানের আর নয় বছর মেয়ে সন্তানের মা তার লালন পালন করতে পারবে,খরচ দিবে তার পিতা।
,
তবে শর্ত হলো তার মা অন্যত্রে বিবাহ না বসা।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১০/১৪৩)
,
যদি বিবাহ হয়ে যায়,তাহলে তার মায়ের হক আর থাকবেনা।
যদি মা খারাপ পথে যায়,তাহলে মেয়ে সন্তানের নয় বছর পর্যন্ত সন্তানের নানি (নানি মারা গেলে সন্তানের দাদি) তার লালন পালন করতে পারবে।

ছেলে সন্তান সাত বছর আর মেয়ে সন্তান নয় বছর হওয়ার পার তার লালন পালনের দায়িত্ব তার পিতার।
এক্ষেত্রে কেউই তার হক নষ্ট করতে পারবেনা।
,
والحاضنۃ أمّا أو غیرہا أحق بہ أي بالغلام حتی یستغنی عن النساء وقدر بسبع وبہ یفتی؛ لأنہ الغالب۔ (شامي ۳؍۵۶۶ کراچی) 
সারমর্মঃ এক্ষেত্রে ফতোয়া হলো সাত বছরের উপর।
  
والأم والجدۃ أحق بہا بالصغیرۃ حتی تحیض أي تبلغ۔ (الدر المختار مع الشامي ۵؍۲۶۸ زکریا)
সারমর্মঃ
সন্তান বালেগ হওয়া পর্যন্ত তার হকদার তার মা এবং নানি দাদি।  

والأم والجدۃ لأم أو لأب أحق بہا بالصغیرۃ حتی تحیض أي تبلغ في ظاہر الروایۃ۔ (الدر المختار ۳؍۵۶۶ کراچی، شامي ۵؍۲۶۸ زکریا)
সারমর্মঃ সন্তানের হকদার তার মা এবং নানি দাদি,তার হায়েজাহ তথা বালেগ হওয়া পর্যন্ত।

والحاضنۃ یسقط حقہا بنکاح غیر محرمہ أي الصغیر۔ (الدر المختار ۳؍۵۶۵ کراچی، ۵؍۲۶۶ زکریا)
সারমর্মঃ তার বিবাহের দ্বারা তার হক সাকেত হয়ে যাবে। 

یجب علی الاب ثلاثۃ … ونفقۃ الولد۔ (شامي عن البحر ۳؍۵۶۱، شامي ۵؍۲۶۰ زکریا)
সারমর্মঃ পিতার উপরেই সন্তানের ভরনপোষণ ওয়াজিব।  
۔
প্রকাশ থাকে যে উক্ত মেয়ে সন্তানের বিবাহ পর্যন্ত তার ভরনপোষণ, যাবতীয় খরচের দায়িত্ব তার নিজ বাবা (আপনার স্বামী) এর উপরই ওয়াজিব। 
মা যদি তার ভরনপোষণ দেন, সেটা একান্তই তার প্রতি ইহসান,অনুগ্রহ হবে।
আর কিছুই নয়।
,  
نفقۃ الأولاد الصغار علی الأب لا یشارکہ فیہا أحد۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۵۶۰، کذا في الہدایۃ مع فتح القدیر ۴؍۴۱۰ دار الفکر بیروت)
ছোট বাচ্চার ভরনপোষণ তার নিজ বাবার উপর ওয়াজিব, এখানে অন্য কেউ শরীক হতে পারবেনা। 

وتجب النفقۃ علی الحرّ لطلفہ یعم الأنثی والجمع الفقیر الحرّ … أي إن لم یبلغ حد الکسب۔ (الدر المختار / باب النفقۃ، مطلب: الکلام علی نفقۃ الأقارب ۵؍۳۳۶ زکریا)

সারমর্মঃ তার বাবার উপরেই  ভরনপোষণ ওয়াজিব।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...