আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।

আমার ভাই একজন ডাক্তার,,তিনি একটি  ক্লিনিকে জব করেন।

তার কাছে কিছু ওষুধ কোম্পানির লোক আসে,যারা বিভিন্ন ওষুধ,

কলম প্যাডের পাশাপাশি খাবার জিনিস যেমন :খেজুর,,পোশাক, সাংসারিক জিনিস দিয়ে থাকে,তবে তিনি কোনো কোম্পানির সাথে চুক্তি বদ্ধ নন।

১.তার নেয়া খাবার,খেজুর,পোশাক,সাবান,পেস্ট,হ্যান্ডওয়াশ ইত্যাদি নেয়া জায়েজ হবে কিনা

২.তিনি মনে করেন,,আমার কাছে যে কোম্পানি গুলো আসে তাদেরও সংসার চালাতে হয়,কোম্পানির কাছে জবাবদিহিতা আছে,,আমি তাদেরকে আমার কাছে আসা বন্ধ করলাম,বাকি ডাক্তাররাও বন্ধ করল,,,এতে তাদের সংসার চলবে কিভাবে?আমা র ভাইয়ের এমন ধারণা ঠিক কিনা শরীয়াহর দিক থেকে?

৩.আমার ভাবী কি ভাইয়ের আনা এই জিনিসগুলো ব্যবহার করতে পারবে?

৪.ভাইয়া যদি ভাবীকে এমন বলে যে,এগুলো ব্যবহার না করলে নিজের টাকায় কিনে ব্যবহার করবে,, কারণ এগুলো ব্যবহার না করলে নষ্ট হবে,,আমার ভাইয়ের এমন ধারণা বা বলাটা শরীয়াহ সমর্থন করে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (70,170 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

এখানে সূরত দু’টি। যথা যদি শুধুমাত্র কোম্পানীর হাদিয়া পাওয়ায় রোগীর আরোগ্যের দিকে খেয়াল না করে হাদিয়া দেয়া কোম্পানীর ওষুধ লেখে দেয়া হয়, তাহলে এ হাদিয়া ঘুষ হিসেবে সাব্যস্ত হবে। যা পরিস্কার হারাম। এরকম করলে এরকম হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ হবে না।

হ্যাঁ, যদি এসব হাদিয়ার প্রতি লক্ষ্য না করে রোগীদের জন্য যে কোম্পানীর ওষুধ উপকারী সেই কোম্পানীর নামই লিখে দেয়া হয়, কোন কোম্পানী হাদিয়া দিল, আর কোম্পানী হাদিয়া দেয়নি, তা খেয়াল করা হয় না। বরং রোগীদের প্রয়োজন ও উপকার অনুপাতে ঔষুধ সাজেষ্ট করা হয়, তাহলে এ হাদিয়া গ্রহণে কোন সমস্যা নেই।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّاشِيَ وَالْمُرْتَشِيَ ” قَالَ يَزِيدُ: ” لَعْنَةُ اللهِ عَلَى الرَّاشِي وَالْمُرْتَشِي

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতার উপর অভিশাপ করেছেন। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৭৭৮}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১-৩: ইসলামী শরীয়তের মূলনীতি হল, একটি কাজের জন্য দুই পক্ষ থেকে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা বা সুবিধা ভোগ করা জায়েজ নয়। কেননা এর কারণে ব্যক্তি ন্যায় নিষ্ঠা বজায় রাখতে পারে না। পক্ষপাতিত্বের দায়ে দুষ্ট হয়ে যায়।

ঔষধ কোম্পানির পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপহার উপঢৌকন ও সুবিধা পেয়ে ডাক্তার সাহেব কখনো রোগীর প্রয়োজন না থাকলেও তার কোম্পানির ঔষধ রোগীকে লিখে দেন। আবার কখনো ঔষধ মানসম্মত না হলেও জেনে বুঝে তা থেকে ভালো ঔষধ বাজারে থাকা সত্ত্বেও গুনগত মানহীন ঔষধ লিখে দেন। কখনো টার্গেট ফিলাপ করার জন্য অতিরিক্ত ঔষধ লিখতে থাকেন। অপরদিকে ডক্টরের চাহিদা পূরণ করার জন্য ঔষধ কোম্পানি ঔষধের বাজারের সাথে পাল্লা দেওয়ার জন্য কম দামে ঔষধ বাজারে ছাড়ে অপরদিকে ব্যয় সংকোচনের জন্য ঔষধের মান খারাপ করে, যার ফলে রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কোনো রুগী যখন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা ফি প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসা নেয়, তখন যে কোম্পানির ঔষধ রোগীর জন্য উত্তম ও কল্যাণকর, সেই ঔষধ লিখে ব্যবস্থাপত্র দেয়া ডাক্তারের দায়িত্ব হয়ে যায়। এই দায়িত্বের বিনিময়েই মূলত ডাক্তাররা রোগী থেকে ফি নিয়ে থাকে। সুতরাং এ দায়িত্ব পালনের জন্য, ঔষধ কোম্পানি থেকে বিনিময় নেওয়া, তা যে নামেই হোক; ঘুষের অন্তর্ভুক্ত। আর ঘুষ নেয়া যেমন হারাম, তেমনি ঘুষ দেয়াও জঘন্য রকমের হারাম।

৪. আপনার ভাইয়ের জন্য এভাবে বলা মোটেও উচিত নয়। আপনি হেকমতের সাথে আপনার ভাইকে কোন একজন মুফতী সাহেবের মাধ্যমে ভালোবাসা ও হেকমত দিয়ে বিষয়টি ভালোভাবে বুঝানোর চেষ্টা করবেন। আল্লাহ চাহে তো তিনি তার ভুল বুঝতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...