আসসালামুয়ালাইকুম। আমি একজন বিবাহিতা। বিয়ের বয়স সাত বছর। একজন কন্যা সন্তান আছে ৫+ বছর। বিয়ের শুরু থেকে ই আমার স্বামীর সাথে আমার বোঝাপড়াটা হয়ে ওঠেনি। যত সময় যাচ্ছে সমস্যা বেড়েই যাচ্ছে। আমি উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য (এমবিবিএস এরপর) পাঁচ বছরের একটা কোর্স আছি। আমার স্বামী ও প্রচন্ড দ্বীনদার এবং একজন চিকিৎসক। আমিও চেষ্টা করি আলহামদুলিল্লাহ.।বিয়ের শুরু থেকেই, আমি কখনোই আমার স্বামীকে বুঝতে পারতাম না। সে কি চাইত কি চায় না।। অনেক কথা সে নিজের ভিতরে চাপিয়ে রাখত।ইদানিং সমস্যাটা বেড়েই যাচ্ছে । কোন কারণ নাই, ঝগড়া লেগে কথা বলা বন্ধ । অথবা খুব ছোট্ট কারণ, হঠাৎ করে কি হয়েছে কথা বলা বন্ধ। এমন করেই চলছে। খুব রাগ দেখায়, প্রচন্ড কষ্ট দিয়ে কথা বলে, প্রশ্ন করলে উত্তর দেয় না, দিলেও হ্যাঁ বা না এর মধ্যে শেষ। আমি খুব সহজ-সরল একটা মেয়ে। অনেক সময় অনেক কিছু, তার ফ্যামিলির মানুষদের কাছে শেয়ার করে। আমার সব দোষ ত্রুটি। এতে আমার খুব খারাপ লাগে। কোন বিষয়ে ডিসকাশন করেনা আমার সাথে। ভয়ে থাকি কোন বিষয়ে হঠাৎ করে কষ্ট পেয়ে যায়। এভাবেই চলছে। প্রচন্ড ইগনোর টাইপের কথাবার্তা, রাগ দেখানো, মুখ ভার করে থাকা, সব সময় আমার কথাতে বিরক্তি প্রকাশ করা, এগুলো তো আছেই। মাঝেমধ্যে বলে, আমি তার জীবনটা জাহান্নাম বানিয়ে দিয়েছি। খুব কষ্ট পাই তখন। আর কোন বেবি ও কখনো নিতে চায় না। প্রায় সময়ই, ছোটখাটো বিষয় ডিভোর্সের কথা পর্যন্ত চলে যায়। পারছি না এসব নিতে। বাইরে এসে প্রচন্ড হাসিখুশি। সবার সাথে মিশুক। এমনকি তার পরিবারের সাথেও। এভাবে, দিনের পর দিন কষ্ট পেয়ে, আমারও কথা বন্ধ হয়ে যায়। তার সাথে কথা বলার মত কিছুই খুঁজে পাই না, আমার সবকিছুতেই দোষ খুঁজে পায়। খুব হতাশ লাগে।
শায়খ, আমার প্রশ্ন হল,
১,সে আমাকে, তার জীবনটাকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলছি এ কথা বলে, এক্ষেত্রে আমি কি করতে পারি? সমস্ত সব কিছু তাকে জিজ্ঞেস করেছি, তার সাথে কোন আলোচনা করাই সম্ভব না। আমার সাথে সে কোন কথাই বলতে চায় না।এক্ষেত্রে আমি কি জাহান্নামে হব যেকোনো সময় মারা গেলে?
২।প্রচন্ড কষ্ট পেয়ে তার কথাতে, অনেক সময় ফরজ নামাজে,শুরু থেকেই, কান্না করতে থাকি, নামাজের মধ্যেই চাইতে থাকি, যেন সব ঠিক হয়, ফরজ নামাজে তো দুনিয়াবী জিনিস চাইতে হয় না, সে ক্ষেত্রে আমার নামাজ কি হবে না/অথবা এভাবে চাওয়া কি উচিত না /কান্নাকাটি করা.?আসলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না।
৩।বিয়ের আগে আমার বাবা, আমাকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে দেওয়ার শর্তে, বিয়ে দেন। আমার আমার স্বামী, প্রথমে রাজি না থাকলেও পরে রাজি হন। কিন্তু তিনি বলেন আমার পড়াশোনার বিষয়ে উনার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু মনের এই অবস্থায়, কনফিডেন্স একেবারেই কমে গেছে। বারবার ঝগড়াঝাটি দেখতে দেখতে, নিজেও আর পারিনা। মাঝে মাঝে বলে, তোমার জন্য আমি দাইউস হতে রাজি আছি। ক্যারিয়ার বাদ দিব ওই কথা বললে, আমার পরিবারের সাথে কথা বলে,যাতে করে কেউ তাকে দোষ না দিতে পারে, তার জন্য ক্যারিয়ার নষ্ট হচ্ছে। আমি আসলে শান্তিপূর্ণ জীবন চাই। দুনিয়ার জিন্দেগি তো সব না, এই অবস্থায়, পাঁচ বছরের কোর্সে চান্স পাওয়ার আগে, সে আমাকে ছোট দুই বছরের কোর্স করতে বলে। তখন বুঝি নাই। এইজন্য তার পক্ষ থেকে, কথা হলো সে আমাকে ক্যারিয়ারের কোন সাহায্য করবে না। আমি তার কথা শুনি না। আমি সেটার জন্য সরি ও বলছি। আগে যে ভুল করে ফেলেছি, এখন আর করতে চাই না। এখন কিভাবে সংশোধন করব? কিন্তু উনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ।
আমি যে আগে ভুল করে ফেলেছি, তার কথা না শুনে সেটা আমি পরে বুঝতে পারছি। আমি যে আগে তার কথা শুনি নাই, সেটার জন্য কি আল্লাহর কাছে, স্বামীর অবাধ্য হিসেবে, শাস্তি পেতে হবে? তখন আসলে বুঝি নাই। না বুঝেই কাজটা করেছিলাম।
সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনায়, আল্লার কাছে মাফ চাচ্ছি। এমতাবস্থায় কি করা উচিত?আখিরাতের শাস্তির ভয় করছি