আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।

ফজর ও মাগরিবের আযানের সময় কি দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হয়? শুনেছিলাম এসময়ে দুষ্ট জ্বীন বাহিরে ছোটাছুটি করে, তাই বাচ্চাদেরও ঘরের বাহিরে থাকতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি কী শুধু মাগরিবের বেলায়? নাকি ফজর মাগরিব দুই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য? জানালা যেন বন্ধ রাখা হয় সে বিষয়ে কি ফজর ও মাগরিব উভয় আযানের সময়েই সতর্ক থাকা উচিত না শুধু মাগরিবের সময়?

1 Answer

0 votes
by (70,170 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ كَثِيْرٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا رَفَعَهُ قَالَ خَمِّرُوْا الْآنِيَةَ وَأَوْكُوْا الأَسْقِيَةَ وَأَجِيْفُوْا الأَبْوَابَ وَاكْفِتُوْا صِبْيَانَكُمْ عِنْدَ الْعِشَاءِ فَإِنَّ لِلْجِنِّ انْتِشَارًا وَخَطْفَةً وَأَطْفِئُوْا الْمَصَابِيْحَ عِنْدَ الرُّقَادِ فَإِنَّ الْفُوَيْسِقَةَ رُبَّمَا اجْتَرَّتْ الْفَتِيْلَةَ فَأَحْرَقَتْ أَهْلَ الْبَيْتِ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ وَحَبِيْبٌ عَنْ عَطَاءٍ فَإِنَّ لِلشَّيَاطِيْنِ

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা পাত্রগুলো ঢেকে রেখো, পান করার পাত্রগুলো বন্ধ করে রেখো, ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখো আর সাঁঝের বেলায় তোমাদের বাচ্চাদেরকে ঘরে আটকে রেখো। কারণ এ সময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোন কিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। আর নিদ্রাকালে বাতিগুলো নিভিয়ে দেবে। কেননা অনেক সময় ছোট ছোট ক্ষতিকারক ইঁদুর প্রজ্জ্বলিত সলতেযুক্ত বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং গৃহবাসীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়।’ ইবনু জুরাইজ এবং হাবীব (রহ.) ‘আত্বা (রহ.) হতে ‘‘কেননা এ সময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে’’ এর স্থলে ‘‘শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে’’ বর্ণনা করেছেন। (বুখারী শরীফ ৩৩১৬.৩২৮০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩০৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৭৯)

ঘুমানোর আগে ঘর বাড়ীর দরজা বন্ধ করার সময় বিসমিল্লাহ বলা সুন্নত।

আফিয়াত ও নিরাপত্তা বড় নিআমত। সকল মানুষই জান-মাল ও সহায়-সম্পদের নিরাপত্তা কামনা করে। এর জন্য পার্থিব বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকে। বাহ্যিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ ইসলামে নিষেধ নয়; বরং তা কাম্য। কিন্তু জানা দরকার যে, প্রকৃত নিরাপত্তা আল্লাহ তাআলার হাতে। পার্থিব উপায় উপকরণ সবকিছু আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের হুকুমের অধীন।

তাই এগুলো প্রকৃত নিরাপত্তা নয়। সুন্নাহর শিক্ষা হল বান্দার সবকিছু আল্লাহ তাআলার নিকট অর্পণ করে দেয়া। আমাদের  যত শক্তিশালী প্রাচীর ও দরজাই থাক না কেন এগুলো প্রকৃত নিরাপত্তা দিতে পারবে না। নিরাপত্তা কেবল নিরাপত্তার মালিকই দিতে পারেন। তাই তার নাম নিয়ে দরজা বন্ধ করতে হবে। আল্লাহর নাম নিয়ে যে দরজা বন্ধ করল সে তো তার ঘর পরিবার পরিজনের নিরাপত্তা আল্লাহর হাতে ন্যস্ত করে দিল। সাধ্য আছে কারো এ নিরাপত্তার বুহ্য ভেদ করার!

হাদীস শরীফে দরজা বন্ধ করতে বিসমিল্লাহ বলতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রিয় নবীজী বলেন-

أَغْلِقُوا الْأَبْوَابَ، وَاذْكُرُوا اسْمَ اللهِ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَفْتَحُ بَابًا مُغْلَقًا.

তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে দরজা বন্ধ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩০৪

অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

لَا تُرْسِلُوْا فَوَاشِيَكُمْ وَصِبْيَانَكُمْ إِذَا غَابَتِ الشَّمْسُ حَتَّى تَذْهَبَ فَحْمَةُ الْعِشَاءِ فَإِنَّ الشَّيَاطِيْنَ تَنْبَعِثُ إِذَا غَابَتِ الشَّمْسُ حَتَّى تَذْهَبَ فَحْمَةُ الْعِشَاءِ.

‘তোমরা তোমাদের গৃহপালিত জন্তু এবং সন্তান-সন্ততিদেরকে সূর্যাস্তের সময় বাহির হতে দিবে না যতক্ষণ না এশার কালো অন্ধকার দূরীভূত হয়। কারণ সূর্যাস্তের পর থেকে এশার কালো অন্ধকার অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত শয়তান বিচরণ করতে থাকে’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২০১৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫১৩৭, ১৫২৫৬; ছহীহুল জামে‘, হা/৭২৭৮)।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লিখিত ছুরতে সাধারণত সন্ধ্যায় ঘরের দরজা বন্ধ রাখার কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। বিধায় সন্ধ্যায় ঘরের দরজা বন্ধ রাখা সুন্নাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...