আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
ছেলেমেয়ের অনলাইনে পরিচয়ের দেড় মাসের মধ্যেই বিয়ে করে ফেলে। প্রথম বার বিয়ের দেড় বছর পরে তালাক হয়ে যায়। এরপর ছেলে মেয়েকে জানান যে শারীয়াহ হালালাহ র মাধ্যমে পরবর্তীতে আবার বিয়ে করা যাবে। হালালাহ তে শুরুতে ১ম স্বামী  রাজি ছিল, মেয়েকে এইভাবে যে বিয়া করা যায় এটাও উনিই জানান প্রথমে কিন্তু পরবর্তীতে  চিন্তাভাবনা করে আর রাজি হন নি। কিন্তু মেয়ে
ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজি করান। এই হালালার বছরখানেক পরে আবার ১ম স্বামী বিয়ে করেন। এইবআর বিয়ের ক্ষেত্রে প্রধানত উনার অনুশোচনা কাজ করছে যে উনার জন্য এই মেয়ে এত চেষ্টা করতেছে। কিন্তু মেয়ের কিছু ব্যবহার & মেয়েকেও দেখতে ভাল্লাগত না । কয়েক মাস পরে আবার তালাক দিয়ে দেন। এই তালাকের ক্ষেত্রে মেয়ের ফ্যামিলির সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ের ক্ষেত্রে মোহরানা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় প্রথমে মেয়ের ফ্যামিলি থেকে না করে দেয়, এরপর ছেলে তার ফ্যামিলিতে জানায় যে ওরা না করে দিছে। এর ৩-৪ দিন পরে আবার মেয়ে জানায় মোহরানায় মেয়ের ফ্যামিলি রাজি হইছে।  তখন আর ছেলের ফ্যামিলির মেনে নিচ্ছিল না। এর সাথে বেশ কিছু কারণ ছিল। যার জন্য ছেলে তালাক দেয়।ছেলের দায়ই এই ক্ষেত্রে বেশি। এই বিয়ে তালাক সবকিছুই হইছিল ছেলেমেয়ে উভয়ের ফ্যামিলি থেকে গোপনে। এখন উভয় ফ্যামিলি রাজি হয়েছে বিয়ের ব্যাপারে। কিন্তু তারা ত তালাকের বিষয় জানে না।
এই ক্ষেত্রে যেহেতু ২ বার বিয়ে করে ২ বার ই তালাক দেয়া হয়েছে, এখন আবার শরীয়াহসম্মত হালালাহ বিয়ের মাধ্যমে আরেকবার বিয়ে করতে পারবে কিনা ১ম স্বামী?

1 Answer

0 votes
by (72,810 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/55291/  নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]

,

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনটি বিষয় এমন যেগুলির যথার্থ তো যথার্থই এমনকি সেগুলোর কৌতুকের ব্যবহারও যথার্থ: বিবাহ, তালাক, রাজআত। - ইবনু মাজাহ ২০৩৯, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৮৫ ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান-গারীব।

,

https://ifatwa.info/43119/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান হলো এক বৈঠকে ৩ তালাক দেওয়া হোক, বা একাধিক বৈঠকে, এক শব্দে ৩ তালাক দেওয়া হোক বা একাধিক শব্দে ৩ তালাক দেওয়া হোক, সব ছুরতেই ৩ তালাকই পতিত হয়ে যাবে। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।     

তিন তালাক দেবার পর উক্ত মহিলা আর নিজের স্ত্রী থাকে না। পর মানুষ হয়ে যায়। এটিই অমোঘ বিধান।

,

এক্ষেত্রে সূরত একটিই বাকি আছে। তা হল, তার এই  স্ত্রীর অন্যত্র বিবাহ হতে হবে। তারপর সেই স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে হবে। এমনকি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে। তারপর উক্ত স্বামী যদি এই (সাবেক) স্ত্রীকে তালাক দেয়, তারপর ইদ্দত শেষ হয়, তাহলেই কেবল প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যক্তি  আবার উক্ত মহিলাকে বিবাহ করতে পারবে এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবেন। এছাড়া দ্বিতীয় কোন রাস্তা খোলা নেই।

,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা;যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]

,

হাদীস শরীফে এসেছে-

وقال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك

হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন- “যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২, ২/৮০৩}

,

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/3190/

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

,

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় বিস্তারিত উত্তর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিয়ের কাবিননামা, তালাকনামা নিয়ে নিকটস্ত কোনো নির্ভরযোগ্য ইফতা বিভাগে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...