আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
25 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
আসসালামু 'আলাইকুম,

১. আমি মেসে থাকি, আশেপাশে তেমন দীনদার কেউ নেই, দীর্ঘদিন দীনদার সঙ্গ খুঁজে ফিরেছি। তারপর এক আপু উঠলেন মেসে, তিনি আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষিকা, বোরকা পড়তেন, আমি ভাবলাম ইনি দীনদার হতে পারেন, তাই আমি তার সাথে একটু সময় কাটাতাম, তার রুমে যেতাম। কিন্তু দিন দিন বুঝতে পারলাম যে, তিনি মোটেও দীনদার নন, তিনি গান শোনেন, মুভি দেখেন, ছেলে কলিগ দের সাথে জমিয়ে আড্ডা ও দেন। সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট ইস্যু হলো উনি গীবত করেন এবং প্রচুর মিথ্যা বলেন। আমি আশাহত হলাম, বাইরের আবরণ টা দেখেই গলে গিয়েছিলাম। এরপর থেকে আমি ওনাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলাম ভদ্রভাবে, কম কথা বলতাম, ওনার রুমে যাওয়া বন্ধ করলাম। এগুলো করেছি শুধুমাত্র নিজেকে বাঁচাতে, কারণ ওনার স্বভাব আমার মধ্যে যাতে না আসে, গীবত থেকে দূরে থাকতে, নিজের ঈমান এর হেফাজত করতে। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় একটা মানুষ কে এড়িয়ে চলছি, আমি কি বিদ্বেষ পোষণ করছি? ( উল্লেখ্য যে, ওনাকে আমার একদম ভালো লাগে না আর, আমি নিজের মন কে বুঝাই, কিন্তু সত্যি ভালো লাগে না ) এখন আমার প্রশ্ন হলো, আমি কি ঠিক করছি?? আমার কি কিছু সংশোধোনের প্রয়োজন আছে?
২. আরেকটা ব্যাপার, প্রথম যখন ওনার সাথে মিশতাম, আমি জানতে পারি ওনার আর্থিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না আর মাদ্রাসার চাকরি করেন তার বেতন হতে সময় লাগবে। আমার সহানুভূতি জাগত এগুলো শুনে, আমি আমার সাধ্যমতো সাহায্য করার চেষ্টা করতাম, রান্না করলে বা বাসা থেকে কিছু পাঠালে, দিয়ে খেতাম। কিন্তু এটা কে উনি taken for granted নিয়ে নিয়েছেন, আমি সহানুভূতি দেখাই বলে উনি এগুলির সুযোগ নেন যা আমি বুঝতে পারি। উনি চান নিয়মিত আমি ওনাকে খাবার দেই বা খাওয়াই, কিন্তু আমায় পক্ষে তো তা সম্ভব নয়, আমি ছাত্রী মানুষ আর আমারও তো খেতে হবে কারণ আমি অসুস্থ ও বটে, হরমোনাল সমস্যায় ভুক্তভুগি। তবুও আমার সাধ্যমতো আমি দিতাম আলহামদুলিল্লাহ কিন্তু যখন থেকে বুঝতে পেরেছি উনি সুবিধা নিচ্ছেন, আমিও দেয়া অনেক কমিয়ে দিয়েছি। তবুও দেই না তা না। এখন আমার প্রশ্ন হলো, আমি যদি বুঝতে পারি কেউ আমার সহানুভূতির সুযোগ নিচ্ছে, তাকে কি সাহায্য করা উচিত? আমার কোনো ভুল ত্রুটি থাকলে আমাকে ধরিয়ে দিন, ইং শা আল্লাহ।
জাযাকুমুল্লাহু খইর

1 Answer

0 votes
by (593,100 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

বন্ধু বা সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নির্ধারণ করে এরশাদ করেছেন,

اِنَّمَا وَلِیُّکُمُ اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا الَّذِیۡنَ یُقِیۡمُوۡنَ الصَّلٰوۃَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ ہُمۡ رٰکِعُوۡنَ ﴿۵۵﴾ 

 ‘তোমাদের বন্ধু কেবল আল্লাহ, তার রাসুল ও মুমিনরা, যারা নামাজ কায়েম করে এবং জাকাত প্রদান করে বিনীত হয়ে। [সুরা আল মায়েদা: ৫৫]। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘মানুষ তার বন্ধুর দ্বীনের অনুসারী হয়। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকের দেখা উচিত যে, সে কার সাথে বন্ধুত্ব করছে।’’
(মুসনাদে আহমাদ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/ ৭৯৬৮, আবূ দাঊদ ৪৮৩৩, তিরমিযী হা/২৩৭৮)

অন্য এক হাদীসে আছে,রাসুল (ﷺ) বলেন,

مَثَلُ الْجَلِيسِ الصَّالِحِ وَالْجَلِيسِ السَّوْءِ كَمَثَلِ صَاحِبِ الْمِسْكِ وَكِيرِ الْحَدَّادِ لَا يَعْدَمُكَ مِنْ صَاحِبِ الْمِسْكِ إِمَّا تَشْتَرِيهِ أَوْ تَجِدُ رِيحَهُ وَكِيرُ الْحَدَّادِ يُحْرِقُ بَدَنَكَ أَوْ ثَوْبَكَ أَوْ تَجِدُ مِنْهُ رِيحًا خَبِيثَةً

‘‘সুসঙ্গী ও কুসঙ্গীর উপমা তো আতর-বিক্রেতা ও কামারের মত। আতর-বিক্রেতা (এর পাশে বসলে) হয় সে তোমার দেহে (বিনামূল্যে) আতর লাগিয়ে দেবে, না হয় তুমি তার নিকট থেকে তা ক্রয় করবে। তা না হলেও (অন্ততপক্ষে) তার নিকট থেকে এমনিই সুবাস পেতে থাকবে।
পক্ষান্তরে কামার (এর পাশে বসলে) হয় সে (তার আগুনের ফিনকি দ্বারা) তোমার কাপড় পুড়িয়ে ফেলবে, না হয় তার নিকট থেকে বিকট দুর্গন্ধ পাবে।’’
(বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/ ২১০১, মুসলিম,আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২৬২৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি ঠিক করছেন।
এক্ষেত্রে দেখা সাক্ষাৎ হলে কমপক্ষে সালাম বিনিময়ই যথেষ্ট।

(০২)
তাকে সাহায্য করা আপনার উপর বিন্দুমাত্র আবশ্যক নয়।

প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার ভুল হয়নি।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
দ্বীনদার সঙ্গী বেছে নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। প্রত্যেকের আমল আখলাক,চেহারা হাত পা সহ পূর্ণ পর্দা,শতভাগ গায়রে মেইনটেইন করে চলা,পুরুষদের সাথে কথাবার্তা  না বলা,৫ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত আদায় করা,পুরুষদের সাথে চ্যাটিং ইত্যাদি না করা,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গায়রে মাহরামদের সাথে কথাবার্তা ইত্যাদি না বলা, বিবিধ বিষয় গুলি জেনেই তাকে দ্বীনদার মনে করে সঙ্গী বানানোর চেষ্টা করবেন।

আশেপাশে মহিলাদের তালিম হলে ফিতনার আশংকা না থাকলে শরয়ী গণ্ডির মধ্যে থেকে সেখানে যাবেন।
পাশাপাশি মাহরাম কোনো কোনো পুরুষের এর মাধ্যমে মাস্তুরাত জামাতে যেতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...