আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
মুহতারাম,

আমার পরিস্থিতি খুব নাজুক।

আমার সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে, বাচ্চাও ইন শা আল্লাহ চলে আসছে খুব শীঘ্রই আলহামদুলিল্লাহ। আমার বিয়ের সময় আম্মুর দ্বিতীয় বিয়ের কথা গোপন রাখা হয়েছিল পাশাপাশি তাকে ভিন্ন পরিচয়ে( বলা যায় স্রেফ মিথ্যা )আনাও হয়েছিল বিয়ের কথাবার্তার জন্য। আমার বিয়ের দিন সৎবাবা পাত্র পক্ষের সাথে সমস্যা করেছিল। এমনকি ডিবির হুমকি দেখিয়ে মামা শ্বশুর তাকে ভয় দেখাতে বাধ্য হয়।তখন থেকেই আমার স্বামীর নজরে আসে লোকটা আসলে কে।
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আমার সত্য স্বামী ঘটনা জেনে যায়। তখন থেকে তার খারাপ ধারণা আমাদের উপর। কেন এরকম প্রতারণা করা হল তার জন্য সে রাগান্বিত।তবে আমার জন্য সবর করছে। আসলে আমার পক্ষের কোন পুরুষ অভিভাবক ছিলনা বলা যায়, বিয়ে মোটামুটি ঠিক হয়ার দিন এক আপন চাচা আসে আর এক প্রতিবেশী আঙ্কেল আসে। আর কেউ নেই। এজন্য আমার আম্মু তার উপর নির্ভরশীল। আমি আমার চিন্তায় ব্যস্ত ছিলাম। নিজের নানা ত্রুটি বিচ্যুতি ইত্যাদি নিয়ে কিভাবে বিয়ে করব না করব সব মিলিয়ে চিন্তিত ছিলাম। আর এ বিষয়টি যে একদম গুনাহের কাজ হয়ে গেল টেরই পেলাম না। এখন আফসোস হয় কেন বুঝতে পারলাম না আগে, কেন সব চাহাতের সাথে সাথে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইলাম না ঐ লোকটা বিয়ের মধ্যে না থাকুক এটা নিয়ে।
বিয়ের সময় আমি শুধু শুনেছি আম্মু তার পরিচয় দিয়েছে তার কাজিন এক ভাই, আমাদের দেখাশোনা করে মাঝে মাঝে। আর বিয়ের পর শুনলাম  ছেলেদের বাসায় গিয়ে শশুর যখন জানতে চায় লোকটার পরিচয় কি আম্মু বলল নাকি ওদের চাচা,তার মামাতো ভাই। শুনে শশুর বলে তাহলে তো ওদের মামা হওয়ার কথা!

 লোকটা আসলে আমাদের দূর সম্পর্কেরো কোন চাচা বা মামা নয়।
আর লোকটা আসলে  দ্বীনি না তার উপর তার সিফাত ,আখলাক সুবিধার না, ফ্রেন্ড সার্কেল খারাপ,আগেও নাকি মহিলাদের সাথে কথা বলেছিল ফেসবুকে। আমরা দুই সহোদর এর সাফারার। আম্মুও তার হাতে মারধর সহ অনেক খারাপ ব্যবহারের শিকার হয়েছে কিন্তু দিন শেষে তার স্বামী বলে আর তারা যেহেতু পছন্দ করেই গোপনে বিয়ে করেছে তাই সহ্য করে যাচ্ছে। মাঝখানে লোকটার প্রথম ওয়াইফ আমাদের উপর অনেক ভয়ানক একশন নেয়।পুলিশি হুমকি ধামকির মধ্যে রাখে। আম্মু আর আঙ্কেল এর মধ্যে কাগজ এ সাইন করিয়ে ডিভোর্সো করায়। পরে সালাফি মতে যেহেতু এক বৈঠকে একটা তালাক হয় এজন্য আম্মু আবার আঙ্কেল এর সাথে সংসার করা শুরু করে। তবে জীবনের ঝুঁকি এড়াতে আমরা ভিনদেশে যাই সপরিবারে,আমাকে আমার বোন কে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে আম্মু নিয়ে যায়।
যাইহোক বর্তমান হালত হচ্ছে আম্মু লোকটাকে সামাজিক ভাবে স্বামী পরিচয় দিতে পারছে না এখনো। তাদের সম্পর্ক টা গোপন অনেকাংশে যদিও বিয়ের কয়েক বছর পার হয়ে গেছে ,আমি নিজেও জানি না আম্মু রা ঠিক কবে বিয়ে করেছে।লোকটা তার আগের ঘরের দুই বাচ্চা সহ পুরোপুরি আর্থিকভাবে আম্মুর উপরে নির্ভরশীল। বেকার এবং কাজ করতেও তেমন চায়না বরং তার একটা আক্রোশ আমার আম্মুর প্রতি কেন তার সাথে বিয়ে হল তার আগের সাজানো সংসার নষ্ট হল এজন্য হিংসা তক মনোভাব থেকে হোক বা প্রতিশোধ এর থেকে হোক বসে খেতে চায়।আম্মু যেহেতু ব্যাংক এ জব করত(বর্তমান এ করেনা), আমাদের নিজেদের বাসা আছে সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল লোকটাও বিয়ের জন্য আগ্রহী হয়। আর আম্মুর প্রয়োজন ছিল একটা পুরুষের। তো আল্লাহ তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন। আমাদের দুই বোনকে মরহুম বাবা যে বাসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সে বাসায়ই থাকে। বিয়ের পর আমি যখন এখানে আসি আমাকে আম্মু তার সাথে একসাথে সবাই মিলে খেতে বলে। আমি কোনভাবে এড়িয়ে যাই। বিয়ের আগে অপছন্দ সত্ত্বেও একসাথে খেতাম কিন্তু এখন যেহেতু আমি বাধ্য না আমি তাই আর বসিনা শুধু সালাম আর কুশল বিনিময় করে চলে আসি সামনে যাইনা সাবধানে যাই। আমার স্বামী লোকটার সম্পর্কে জেনে আরো বেশি চিন্তিত। আমি বাসায় গেলে সাবধানে থাকতে বলে। সহজে আসতে দিতে চায়না। সে আগেই বলে রেখেছে ঐ লোক এর সামনে আমাকে যেন না নেয়া হয়।সে আমার দিকের অভিভাবক হীনতা নিয়ে অনেকটা অস্বস্তি বোধ করে। এদিকে আম্মু চেয়েছিল মেয়ের জামাই এর সাথে স্বামীর স্বাভাবিক সম্পর্ক থাকবে। এগুলো জানান না জানান কোন বিষয় না এরকম মনে করে আম্মু। কেন আমার স্বামী পুরো বিষয়টা নিয়ে অসন্তুষ্ট সেটার জন্য আম্মু গোসসা করে। আম্মু নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তার স্বামীকে আমাদের সামনে ভালো তুলে ধরতে চেষ্টা করে এবং আমাদের সাথে লোকটার আরো স্বাভাবিক সম্পর্ক আনতে চায়। লোকটা যত অন্যায় করুক বা ক্ষতি করুক আম্মু তা নিয়ে চিন্তিত না, বরং আমরা যারা লোকটা থেকে আম্মুকে সাবধান করি তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ করতে চাইছি এটা মনে করে।  এককথায় আম্মুকে লোকটা ভালো না বাসলে বাসুক আম্মু জোর করে হলেও তার সাথে থাকবে কারণ তার কারনে তার মানসম্মান নষ্ট হয়েছে, সামাজিক ভাবে হেয় হয়েছে, আর্থিকভাবে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছে।
মুহতারাম ধৈর্য্য ধরে পুরো প্রেক্ষাপট পড়ার জন্য আপনাকে শুকরিয়া, আমার আসলে ঐ লোকের সাথে কেমন সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত আমি জানতে চাই..

1 Answer

0 votes
ago by (616,530 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "
তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে।(সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নামায এবং ধৈর্য্যর মাধ্যমে পরিস্থিতির মুকাবেলা করুন। স্বামীকে সবকিছু খুলে বলে, তাকে জিজ্ঞাসা করেন, সে কি ক্ষমা করবে? এভাবে বললে তার দিল নরম হবে ইনশাআল্লাহ । স্বামীর জন্য ও নিজ মা ও বোনদের জন্য দু',আ করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (16 points)
জাযাকাললাহ খ ইর 
মুহতারাম , সৎবাবার সাথে কতটুকু সম্পর্ক রাখা উচিত এটি যদি নির্দেশনা দিতেন..

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...