আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
বিয়ের এক বছর একসাথে থাকার পরও স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে কোনো প্রকার শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। এক বছর পর পারিবারিকভাবে জানাজানি হলে মেয়ের পরিবার ছেলেকে পাঁচ মাসের সময় দেয়। উল্লেখ্য ছেলের যাবতীয় মেডিকেল রিপোর্ট পজিটিভ কিন্তু তাও সে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী নয়। ছেলে ডাক্তারি ট্রিটমেন্টও নিতে চায় না কারণ তার কথা সে ফিট এবং তার কোনো সমস্যা নেই, সময় দিলে ঠিক হয়ে যাবে। পরবর্তী পাঁচ মাসের মধ্যেও কোনো পরিবর্তন হয় না দেখে মেয়ের পরিবার মেয়েকে আর দিবেনা বলে জানিয়ে দেয়। কিন্তু ছেলে আপোষে রাজি হয়না। হয় তাকে আরও সময় দিতে বলে না হয় মেয়ে পক্ষ থেকে ডিবোর্স লেটার পাঠাতে বলে। এমতাবস্থায় মেয়ের পরিবার উপায় না দেখে উকিলের মাধ্যমে মেয়েকে ডিবোর্স লেটারে সাইন করায়। যা তিনমাস পর কার্যকর হবে বলে উকিল জানায়। মেয়ে মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছে।  তার মনে হচ্ছে আরও একটু সময় দিলে হয়ত ঠিক হওয়া সম্ভব হতেও পারে। আবার না-ও হতে পারে। সে এ ব্যাপারে স্বীদ্ধান্তহীনতায় ভোগছে যেহেতু ছেলের মেডিকেল রিপোর্ট পজিটিভ আবারও তার মধ্যে কোনো আগ্রহও নেই। এমন কেন হচ্ছে আল্লাহ-ই ভালো জানেন। যদি সে তার স্বামীর সাথে বনিবনা করতে চায় তাহলে কি শারয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভব?

ছেলের বয়স-২৯

মেয়ের বয়স-২২

1 Answer

0 votes
by (592,410 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক খুবই মারাত্মক একটি বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

رجل قال لامرأتہ خذي طلاقک، فقالت: أخذت، یقع الطلاق۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الطلاق / الفصل الثاني في إیقاع الطلاق ۱؍۳۵۹)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার তালাক গ্রহন করো।
স্ত্রী যদি বলে যে গ্রহন করলাম,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।    

বিস্তারিত জানুনঃ- 
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই ডিভোর্স লেটারে আসলে কি লেখা ছিলো?

সেখানে কি স্বামীকে তালাক দেওয়ার কথা লেখা ছিল? নাকি স্ত্রী নিজে নিজেকে তালাক দিচ্ছে এমন কথা লেখা ছিল? যদি স্বামীকে তালাক দেওয়ার কথা লিখে থাকে, সে ক্ষেত্রে তো উক্ত তালাক পতিত হয়নি।

তারা নির্দ্বিধায় পুনরায় ও ঘর সংসার করে যেতে পারবে।

আর যদি স্বামী প্রদত্ত ক্ষমতা বলে স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক দিয়েছে, এমন কথা লেখা থাকে সেক্ষেত্রে তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।

তবে এক্ষেত্রে স্বামী যদি তার নিয়তের মধ্যে  তিন তালাক উদ্দেশ্য না করে থাকে,সেক্ষেত্রে এক তালাক পতিত হবে।

এমতাবস্থায় তারা পুনরায় নতুন ভাবে বিবাহ পরিয়ে নিয়ে ঘর সংসার করতে পারবে।

আর যদি স্বামী তার নিয়তের মধ্যে  তিন তালাক উদ্দেশ্য করে থাকে,আর সেই ডিভোর্স লেটারে স্ত্রী নিজের উপর তিন তালাক প্রদান করেছে এমন কথা লেখা থাকে, সেক্ষেত্রে তিন তালাক পতিত হবে।

এমতাবস্থায় শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত ঐ স্বামীকে বিবাহ করার কোনো সুযোগ নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...