আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
السلام عليكم ورحمة الله و بركاته

১) আমার বান্ধবীর বাবা নওমুসলিম। তাই তার দাদার বাড়ির সবাই হিন্দু। কিছুদিন আগে আমরা জানতে পেরেছি, মুসলিম নারীদের কাফির নারীদের সামনে পর্দা ওয়াজিব। সেইখান থেকে আমাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে, এটা কি তার পরিবারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে? যেমন তার দাদি চাচি চাচাতো বোনেরা, তারাও তো কাফির নারী। সেখান থেকে মনে আরোও একটি প্রশ্ন এসেছে, তার কাফির মাহরাম যারা, তাদের সামনে তার বেশভূষা কেমন হবে? তাদের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কটা কেমন হবে যদি একটু বুঝিয়ে বলতেন..

(বান্ধবীর বাবা মুসলিম হওয়ার পর বিবাহ করেছিলেন অর্থাৎ আমার বান্ধবীর মা-বাবা তার পরিবার সবাই মুসলিম)

২) আমি একবার মান্নত করেছিলাম যে কিছু রোজা রাখব, কিন্তু ঠিক কতটি রোজা মান্নত করেছিলাম, তা মনে নেই। এখন যদি আমি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখি এবং মনে মনে নিয়ত করি যে প্রথমে আমার মান্নতের রোজাগুলো আদায় হবে, তারপর থেকে এগুলো সুন্নত হিসেবে গণ্য হবে- যেহেতু সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা সুন্নত- তাহলে কি তা সঠিক হবে?

৩) আমাদের এক হিন্দু মেয়ে ব্যাচমেটের বিয়ে। তাই বিয়েতে ওকে সবাই মিলে শাড়ি কিনে দিতে চাচ্ছে। এই উপহার দেওয়ার মধ্যে শরিক হওয়া কি আমাদের জন্য জায়েজ হবে? শাড়ি দেওয়া কি জায়েয হবে? কী দেয়া উচিৎ? বিবাহে অংশগ্রহণ করা জায়েয হবে?

৪) আমি কোনো একজনকে অনেক হেল্প করলাম। নিজের নোটস দিলাম, রুটিন দিলাম, অনেক বেনিফিসিয়াল লেকচার দিলাম। কিন্তু সেই মানুষ টা যদি চান্স বা চাকরী পাওয়ার পর আমাকে সম্পূর্ণ ভুলে গেলো, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো না, অহংকারী হয়ে গেলো। তাহলে এটা কি কষ্টদায়ক না?

*আল্লাহ কি তাকে এর জন্য কিছু বলবেন না?

*পরবর্তীতে আবারও আল্লাহর জন্য হিংসামুক্ত অন্তর নিয়ে হেল্প করা উচিৎ? তাদের স্বপ্ন ছোঁয়াতে তাদের সাহায্য করা যাবে? করা উচিত? কি করা উচিত এই অবস্থায় আমার?

1 Answer

0 votes
by (592,410 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/61356/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
অমুসলিম মেয়েদের সামনে মুসলিম নারীদের পর্দা করতে হবে কিনা,সেই ব্যপারে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ পাওয়া যায়।
কেহ কেহ বলেছেন যে যদিও তাদের সামনে মুসলিম নারীদের পর্দা করা ফরজ নয়,তবে কম আয কম মুসতাহাব অবশ্যই।
তাই তাদের সামনে পর্দা করাই উচিত।  
কিতাবুন নাওয়াজেল ৬/৩৫
      
কেহ কেহ বলেছেন যে প্রত্যেক গাইরে মাহরাম পুরুষের প্রত্যেক গাইরে মাহরাম স্ত্রীলোকের সামনে যে পরিমাণ পর্দা করা ফরজ, কাফির-ফাসিক মেয়েলোক হতেও মুমিন মেয়েদের সে পরিমাণ পর্দা করা ওয়াজিব।

সুতরাং হিন্দু বা খৃষ্টান মেয়েলোক বা যেকোনো বেদ্বীন বা বেপর্দা মেয়ে হতেও পর্দানশীন নারীর পর্দা করা ওয়াজিব। তাদের সামনে কেবলমাত্র মুখমণ্ডল, হাতের পাতা ও পায়ের পাতা ব্যতীত শরীরের কোনো অংশ খোলা রাখা জায়েজ নয়।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক তথা নিজেদের (মুসলিম) মহিলাগন, অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩১}

لا یحل للمسلمۃ أن تنکشف بین یدي یہودیۃ أو نصرانیۃ أو مشرکۃ إلا أن تکون أمۃ لہا۔ (شامي ۹؍۵۳۴ زکریا)
কোনো মুসলিমা মহিলার জন্য অমুসলিম মহিলার সামনে বেপর্দা হওয়া জায়েয নেই।
  
وقال ابن حجرؒ: الأصح تحریم نظرہا إلی ما لا یبدو في المہنۃ من مسلمۃ غیر سیدتہا ومحرمہا ودخول الذمیات علی أمہات المؤمنین الوارد في الأحادیث الصحیحۃ دلیل لحل نظرہا منہا ما یبدو في المہنۃ، وقال الإمام الرازي: المذہب أنہا کالمسلمۃ والمراد بنسائہن جمیع النساء وقول السلف محمول علی الاستحباب وہٰذا القول أرفق بالناس الیوم فإنہ لا یکاد یمکن احتجاب المسلمات عن الذمیات۔ (روح المعاني ۱۸؍۲۱۱ أشرفیۃ، معارف القرآن ۶؍۴۰۴)
যথা সম্ভব এটাকে আমরা মুসতাহাব বলতে পারি।
তাই তাদের সামনে পর্দা করাই জরুরি।   

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
যেহেতু ওই সমস্ত মহিলারা তার নিকটতম আত্মীয়, তাই তাদের সামনে পর্দা করা আবশ্যক হবে না এবং মাহরাম পুরুষরা যেহেতু মাহরাম, তাদের সামনেও পর্দা করতে হবে না।

(০২)
আপনি তিনটি রোজা মান্নতের আদায় করবেন। এরপর থেকে সুন্নত রোজা আদায় করবেন। এক রোজার মধ্যে এভাবে দু ধরনের রোজার নিয়ত করবেন না।

(০৩)
যেহেতু সে ওই শাড়ি পরিধান করে বেপর্দা চলাফেরা করবে, গায়রে মাহারামদের সামনে যাবে, তাই শাড়ি দেওয়া আপনাদের জন্য জায়েজ হবে না। কারণ এক্ষেত্রে হারাম কাজে সহযোগিতার গুনাহ আপনাদের হবে।

এক্ষেত্রে আপনারা চাইলে ডিনার সেট,ড্রেসিং টেবিল,আলমারী,ওয়ারড্রব ইত্যাদি ঘরের ব্যবহারিক পণ্য দিতে পারেন।

তার বিবাহে শরীয়াহ বিরোধী কোনো কাজ না করতে হলে ও পূর্ণ পর্দার পরিবেশ পেলে যাওয়া জায়েজ হবে।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
এটা কষ্টদায়ক বিষয়। 

সে অহংকার করলে আল্লাহর সামনে তাকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। 

*পরবর্তীতে আবারও হেল্প করতে চাইলে সেটি আপনার ব্যপার।
শরীয়ত আপনাকে বাধ্য করবেনা।

তাদের বৈধ কোনো স্বপ্ন ছোঁয়াতে তাদের সাহায্য করা যাবে।
সেটি একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার শরীয়তে দৃষ্টিকোণ হতে সেটি আপনার উপর আবশ্যক নয়।
চাইলে সাহায্য করতে পারেন চাইলে সাহায্য নাও করতে পারেন,উহা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 318 views
...