Hive ফেসবুকের মতোই একটি সোশ্যাল মিডিয়া। Hive ব্যক্তি মালিকানাধীন নয় যেখানে ফেসবুক একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। ফেসবুকের যত আয় সব চলে যায় মালিকপক্ষের হাতে। Hive এর যেহেতু কোন মালিকানা নেই তাই এর আয় ব্যবহারকারীদের মাঝে বন্টন হয়।
এখানে ভাল পোস্ট শেয়ার করলে অন্যরা ফেসবুকের মতোই লাইক পেতে পারে, ফ্রেন্ড হতে পারে। ব্লকচেইনে কোন মালিক ছাড়া প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টোকেন (hive) তৈরি হয়। এটি একটি ডিজিটাল মুদ্রা যা ক্রিপ্টোকারেন্সি। এই টোকেনগুলো যারা লাইক দিচ্ছে এবং যারা পোস্ট করছে তাদের সবার মাঝে বিতরণ হয় একটা নিয়মে। যার পোস্টে বেশি লাইক সে বেশি টোকেন পাবে। আবার যার ওয়ালেটে বেশি পরিমাণ টোকেন আছে তার লাইকের মূল্য বেশি।
যেহেতু এই টোকেন (hive) সারা বিশ্বব্যাপী সবাই আয় করছে তাই এটির ব্যবহার রয়েছে bitcoin এর মতই। প্রায় সব দেশেই এটি ভাঙিয়ে টাকা, ডলার বা জিনিসপত্র কেনা যায়।
প্রশ্ন ০১ঃ এখানে কাজ করা হালাল হবে কিনা? অর্থাৎ লেখালেখি করে আয় করা। ভাল পোস্ট লিখলে এখানে ভালো লাইক পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এভাবে আয় করার সুযোগ আছে কি না?
প্রশ্ন ০২ঃ যদি পোস্ট লিখে আয় করা হালাল হয়ে থাকে তাহলে টোকেন কিনে বা কোনভাবে অর্জন করে অন্যদের পোস্টে লাইক দিয়ে আয় করা হালাল হবে কি না কারণ এখানে যার যত বেশি টোকেন তার লাইকের ভ্যালু বা আয় তত বেশি।
প্রশ্ন ০৩ঃ যারা সময় দিতে পারে না তাদের জন্য এখানে আরেকটি অপশন রয়েছে। এখানে টোকেন অন্যদেরকে দিয়েও আয় করা যায়। যাদের সময় নেই তারা তাদের টোকেন অন্যদেরকে ব্যবহার করতে দিবে যা দিয়ে অন্যরা কারো পোস্টে লাইক দিবে ও আয় করবে। চুক্তি মোতাবেক সেই আয়ের একটা অংশ যিনি ধার দিয়েছিলেন তাকে দিয়ে দিবে। সবসময় আয় হবে ঠিকই তবে এখানে রিস্ক ফেক্টর হচ্ছে সময়ে সময়ে মার্কেটে টোকেনের দাম বাড়ে ও কমে।
প্রশ্ন ০৪ঃ যদি প্রশ্ন ৩ হালাল হয় তাহলে আরেকটি প্রশ্ন আছে। যাকে টোকেন ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে সে অন্য সবার থেকে ধার নিয়ে একসাথে অনেক টোকেন জমিয়ে সবার পোস্টে বড় লাইক দেয়ার সুযোগ আছে। যদিও এটা আনলিমিটেড না। লিমিট আছে। অর্থাৎ আমার কাছে যে টোকেন আছে সেটি আমি আরেকজনকে দিব, সে তার সহ অন্যদের টোকেন মিলিয়ে আমাকে এবং অন্যদের পোস্টে দিনে একবার বড় ভোট দিতে পারবে। এতে আমাদের সবার পোস্টের আয় বাড়বে। এই বিষয়টি হালাল হবে কিনা?
দ্রষ্টব্যঃ ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে আমার জানামতে ধারনা হচ্ছে, কোন কাজের পেমেন্ট হিসেবে ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডলার বা অন্য কোন মুদ্রা অর্জন করলে সেটি ব্যবহার করা জায়েজ। তবে ক্রিপ্টো বা অন্য কোন মুদ্রা কেনাবেচা করে আয় করা (Forex Trading) জায়েজ নয়। এক মুদ্রা কিনে বিশেষ করে লোন করে লিবারেজে কিনে বিক্রি করা জায়েজ নয় কারন কারেন্সি বা মুদ্রা কেনা বেচা করার জন্য নয়। (আল্লাহ ভালো জানেন)।
এক্ষেত্রে বলা বাহুল্য যে, বর্তমান কাগজের বা ডিজিটার মুদ্রা যেমন ডলার, টাকা, বিকাশ, নগদ ইত্যাদি তৈরি করতে ব্যাকাপ হিসেবে কোন স্বর্ন রাখা হয় না। সারা বিশ্বে সবই হচ্ছে এখন পেপার মুদ্রা। সরকার, ব্যাংক বা সংস্থা মন চাইলেই এগুলো বানাতে পারে। তাই ক্রিপ্টোকারেন্সিও ডলারের মত জায়েজ মনে করে উপরের ৪ প্রশ্নের ফতোয়া দিলেও হবে। অথবা ক্রিপ্টো হারাম হয়ে থাকলে সেটির কারন সহ ফতোয়া দিলে ভাল হয়। জাযাকাল্লাহ।