আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
400 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)

1. শিয়া আর কাদিয়ানীরা কি কাফের নাকি বাতিল ফেরকা ? বাতিল ফেরকা কাদের বলা হয় ?

 2. আল্লাহ হাজির-নাজির বলতে কি বুঝানো হয়েছে এবং এ ধরনের আকীদা রাখাটা কি সঠিক ?এটা দ্বারা কি সর্বত্র বিরাজমান বুঝায় ?

3. আবু লাহাবের স্ত্রী নবীজির (সাঃ) কি ক্ষতি করেছিলেন যার জন্য আল্লাহ তাকেও কাফের ঘোষণা করেছে ?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর আক্বিদায় বিশ্বাসীরা সমস্ত মুসলমানদের ঐক্যমত্বে কাফের।

তাদেত দাবি যে মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী আল্লাহর নবি।
,
অথচ ইসলামের মৌলিক আকীদা হলোঃ

আল্লাহ তাআলা মানব জাতির যোগ্যতা ও উপযোগিতা হিসাবে কালক্রমে তাদের বিভিন্ন শরীয়ত দিয়েছেন।আর এর পূর্ণতা ও পরিসমাপ্তি বিধান করেছেন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে।দ্বীনের পূর্ণাঙ্গতা লাভের পর যেহেতু এতে কোনোরূপ সংযোজন ও বিয়োজনের প্রয়োজন বা অবকাশ নেই তাইমানবজাতির জন্য নতুন শরীয়তেরও প্রয়োজন নেই। সুতরাং আল্লাহ তাআলা নবী-রাসূল প্রেরণের ধারাচিরতরের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা ইসলামের অন্যতম মৌলিক বিশ্বাস। 

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনেবলেছেন, 
(অর্থ) ‘‘আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণতা দান করেছি, আর আমি তোমাদের জন্য আমারনেয়ামতকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি এবং দ্বীন হিসেবে ইসলামকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছি।’’ (সূরামায়েদা : ৩) 

পবিত্র কুরআনে অন্যত্র বলা হয়েছে, (অর্থ) ‘‘মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যকার কোনো বয়স্ক পুরুষেরপিতা নন, তবে তিনি আল্লাহর রাসূল এবং সর্বশেষ নবী।’’-সূরা আহযাব : ৪০

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অন্যান্য নবীর মুকাবিলায় আমাকে ছয়টি বিষয় দ্বারাবৈশিষ্ট্যমন্ডিত করা হয়েছে, ১. আমাকে অল্প কথায় বেশি ভাবপ্রকাশের যোগ্যতা দেওয়া হয়েছে, ২. আমাকেগাম্ভীর্যজনিত প্রতাপ-প্রতিপত্তি দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে, ৩. আমার জন্য গণীমতের মাল হালাল করে দেওয়াহয়েছে, ৪. সমগ্র ভূপৃষ্ঠকে আমার জন্য নামায পড়ার উপযোগী জায়গা ও পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ হিসেবেস্থির করা হয়েছে, ৫. আমাকে সমগ্র সৃষ্টি জগতের রাসূলরূপে প্রেরণ করা হয়েছে, ৬. আমার দ্বারা নবীদেরসিলসিলার পরিসমাপ্তি ঘটানো হয়েছে।’’ (সহীহ মুসলিম, মাসাজিদ, হাদীস : ৫২৩)

অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমার ও নবীদের উদাহরণ এমনএকটি প্রাসাদ, যা খুব সুন্দর করে নির্মাণ করা হয়েছে, তবে তাতে একটি ইটের জায়গা খালি রেখে দেওয়াহয়েছে। দর্শকবৃন্দ সে ঘর ঘুরে ফিরে দেখে, আর ঘরটির সুন্দর নির্মাণ সত্ত্বেও সেই একটি ইটের খালি জায়গাদেখে আশ্চর্য বোধ করে (যে, এতে একটি ইটের জায়গা কেন খালি রইল!) আমি সেই একটি ইটের খালিজায়গা পূর্ণ করেছি। আমার দ্বারা সেই প্রসাদের নির্মাণ পরিসমাপ্ত হয়েছে, আর আমার দ্বারা রাসূলদেরসিলসিলা পরিসমাপ্ত করা হয়েছে।’’ অপর এক রেওয়ায়াতে বলা হয়েছে, ‘‘আমি হলাম সেই খালি জায়গারপরিপূরক ইটখানি। আর আমি হলাম সর্বশেষ নবী।’’ (সহীহ বুখারী ১/৫০১; সহীহ মুসলিম, ২/২৪৮) 

অন্য একহাদীসে বলা হয়েছে, ‘‘বনী ইসরাঈলের নবীগণ তাঁদের কর্মকান্ডে নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনা দান করতেন।যখন তাদের এক নবী দুনিয়া থেকে বিদায় নিতেন, তাঁর জায়গায় আর একজন নবী অধিষ্ঠিত হতেন। কিন্তুআমার পরে কোনো নবী আসবেন না। তবে আমার পরে খলীফা হবে এবং তারা সংখ্যায় অনেক হবে।’’-সহীহমুসলিম, ইমারা, হাদীস : ১৮৪২; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৫৮৭

এরূপ অগণিত কুরআনের আয়াত ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ইসলামের অন্যতম মৌলিক আকীদা এই যে, হযরতমুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানব জাতির হেদায়াতের জন্য প্রেরিত সর্বশেষ নবী। তাঁর পর আর কোনো নবী প্রেরিত হবেন না।

কাদিয়ানীদের আকীদা সম্পর্কে জানুনঃ 
,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী অধিকাংশ শিয়ারাই কাফের।
.
শিয়াদের কুফরী আকীদা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদার খেলাফ হওয়াই বাতিল ফিরকা বলা হয়।

আকীদা গুলো বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(০২)
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০৩)
সুরা লাহাবের ০৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَّ امۡرَاَتُهٗ ؕ حَمَّالَۃَ الۡحَطَبِ ۚ﴿۴﴾

আর তার স্ত্রী লাকড়ি বহনকারী
(এবং তার স্ত্রীও; যে ইন্ধন বহনকারিণী।)
,
আবু লাহাবের স্ত্রীর নাম ছিল “আরওয়া”। সে ছিল আবু সুফিয়ানের বোন ও হরব ইবনে উমাইয়্যার কন্যা। তাকে “উম্মে জামীল” বলা হত। আবু লাহাবের ন্যায় তার স্ত্রীও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি বিদ্বেষী ছিল। সে এ ব্যাপারে তার স্বামীকে সাহায্য করত। আয়াতে ব্যক্ত করা হয়েছে যে, এই হতভাগিনীও তার স্বামীর সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। এক বর্ণনায় এসেছে, এ মহিলা যখন শুনতে পেল যে, আল্লাহ তা'আলা তার ও তার স্বামীর ব্যাপারে আয়াত নাযিল করে অপমানিত করেছেন সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বসা ছিলেন।

তার সাথে ছিলেন আবু বকর। তখন আবু বকর বললেন, আপনি যদি একটু সরে যেতেন তা হলে ভাল হতো যাতে করে এ মহিলা আপনাকে কোন কষ্ট না দিতে পারে। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমার ও তার মাঝে বাধার সৃষ্টি করা হবে। ইত্যবসরে মহিলা এসে আবু বকরকে জিজ্ঞেস করল, আবু বকর! তোমার সাথী আমাদের বদনামী করে কবিতা বলেছে? তিনি জবাবে বললেন, এ ঘরের (কাবার) রবের শপথ, তিনি কোন কবিতা বলেননি এবং তার মুখ দিয়ে তা বেরও হয়নি। তখন মহিলা বলল, তুমি সত্য বলেছ। তারপর মহিলা চলে গেলে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, সে কি আপনাকে দেখেনি? রাসূল বললেন, মহিলা ফিরে যাওয়া পর্যন্ত একজন ফেরেশতা আমাকে তার থেকে আড়াল করে রাখছিল। [মুসনাদে আবি ইয়া'লা: ২৫, ২৩৫৮, মুসনাদে বাযযার: ২৯৪] [ইবন কাসীর]
,
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামকে কষ্ট দেয়ার জন্যে আবু লাহাব পত্নী পরোক্ষ নিন্দাকার্যের সাথেও জড়িত ছিল। অধিকাংশ তাফসীরবিদ এখানে এ তাফসীরই করেছেন।

এই নারী বন থেকে কন্টকযুক্ত লাকড়ি চয়ন করে আনত এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দেয়ার জন্যে তার পথে বিছিয়ে রাখত।

কোন কোন মুফাসসির বলেন, সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দরিদ্র বলে উপহাস করত। পরিণামে আল্লাহ এ মহিলাকে লাকড়ি আহরণকারী বলে অপমানজনক উপাধী দিয়ে উপহাস করেছেন। আবার সাঈদ ইবনে জুবাইর বলেন, আয়াতের অর্থ “গোনাহের বোঝা বহনকারিনী”। [কুরতুবী, ইবন কাসীর]

কিছু সংখ্যক উলামা বলেন, এই মেয়েটি কাঁটার ঝাড় এনে মহানবী (সাঃ)-এর চলার পথে রেখে দিত। (যাতে তিনি কাঁটাবিদ্ধ হয়ে কষ্ট পান।) 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...