আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
42 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (4 points)
السلام عليكم و رحمة الله

মাইজভান্ডার দরবার শরীফে যে এত আয়োজন হয়।সেটা কি বিদআত??তাছাড়া চট্টগ্রামে বিভিন্ন ইসলামি অনুষ্ঠানে যেমন নবীর জন্মদিন উপলক্ষে আলোকসজ্জা করে যে আয়োজন হয় এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত বলুন। আর সঠিক পদ্ধতি কোনটি সেটাও জানতে চাচ্ছি।

আর কেউ বিদআতে লিপ্ত হয়ে থাকলে তাকে কি বলে এসব থেকে সতর্ক করা যায়? পরামর্শ চাচ্ছি

1 Answer

0 votes
by (591,570 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
বর্তমানে যেই মাইজভান্ডার দরবার আছে তা সহীহ নয়। ভ্রান্ত।
ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক অনেক কিছু রয়েছে। 

মাইজভান্ডারীদের মতেঃ
ক) তরীকত শরীয়ত থেকে ভিন্ন একটি বিষয়।
খ) বিশেষ ব্যক্তিবর্গের জন্য শরীয়তের অনুসরণ করা জরুরী নয়।
গ) বিশেষ ব্যক্তিবর্গের জন্যে নামায, রোযা ও অন্যান্য ইবাদত পালন করা অপরিহার্য নয়।
ঘ) বিশেষ ব্যক্তিবর্গের শরীয়ত ও কুরআন-হাদীস এবং সাধারণ মানুষের শরীয়ত ও কুরআন-হাদীস থেকে ভিন্ন।
ঙ) সাধারণ মানুষের জন্যে শরীয়তে মুহাম্মদীর অনুসরণও আবশ্যক নয়, বরং নিজের ইচ্ছেমত যে কোন ধর্মের অনুসরণ করলেই আখেরাতে মুক্তি পাওয়া যাবে।
( মাইজভান্ডারীর পীরের লেখা “বেলায়েতে মোতলাকা” গ্রন্থের ১৬, ১১৮, ১১৯-১২০ নং পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য।)

★সেখানে কবরকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান করা হয়।
যাহা শরীয়তে নিষিদ্ধ।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

عن أبى هريرة قال قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- « لا تجعلوا بيوتكم قبورا ولا تجعلوا قبرى عيدا وصلوا على فإن صلاتكم تبلغنى حيث كنتم (سنن ابى داود-كتاب المناسك، باب زيارة القبور، رقم الحديث-2044)

 “তোমরা স্বীয় ঘরকে কবর বানিয়োনা। (অর্থাৎ কবরের ন্যায় ইবাদত-নামায, তেলাওয়াত ও যিকির ইত্যাদি বিহীন করনা।) এবং আমার কবরে উৎসব করোনা।(অর্থাৎ বার্ষিক, মাসিক বা সাপ্তাহিক কোন আসরের আয়োজন করনা। তবে হ্যাঁ আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। নিশ্চয় তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছে থাকে।(আল্লাহ তায়ালার ফেরেশতারা পৌঁছিয়ে দেন।)” (সুনানে আবু দাউদ: হাদিস নং-২০৪৪)

হাদীসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার আল্লামা মুনাভী রহঃ এই হাদীসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন-
قال المناوي ويؤخذ منه أن اجتماع العامة في بعض أضرحة الأولياء في يوم أو شهر مخصوص من السنة ويقولون هذا يوم مولد الشيخ ويأكلون ويشربون وربما يرقصون فيه منهي عنه شرعا وعلى ولي الشرع ردعهم على ذلك وإنكاره عليهم وإبطاله (عون المعبود-كتاب المناسك باب زيارة القبور-6/23)
 “এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, সাধারণ মানুষ যারা বছরের কোন নির্দিষ্ট মাসে বা দিনে (উরসের নামে) ওলীদের মাযারে একত্রিত হয় এবং বলে-আজ পীর সাহেবের জন্ম বার্ষিকী (মৃত্যু বার্ষিকী), সেখানে তারা পানাহারেরও আয়োজন করে, আবার নাচ গানেরও ব্যবস্থা করে থাকে, এ সবগুলিই শরীয়ত পরিপন্থী ও গর্হিত কাজ। এ সব কাজ প্রশাসনের প্রতিরোধ করা জরুরী। (আউনুল মা’বুদ-৬/২৩)

★সেখানে কবরের সামনে বাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়,যাহা হারাম।

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
عن ابن عباس قال : لعن رسول الله صلى الله عليه و سلم زائرات القبور والمتخذين عليها المساجد والسرج (سنن الترمذى- أبواب الصلاة عن رسول الله صلى الله عليه و سلم ، باب ما جاء في كراهية أن يتخذ على القبر مسجدا-2/136)

 “হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিশম্পাত করেছেন (বেপর্দা) কবর যিয়ারতকারীনী মহিলাদের উপর, এবং সেসব লোকদের উপর যারা কবরকে মসজিদ বানায় (কবরকে সেজদা করে) এবং সেখানে বাতি প্রজ্জ্বলিত করে। (জামি তিরমীযী-২/১৩৬)

★আল্লাহ ছাড়া কারো নামে মান্নত বা কুরবানী করা যায়না। কারণ মান্নত ও কুরবানী হচ্ছে ইবাদত। আর ইবাদত আল্লাহ ছাড়া কারা জন্য করা জায়েজ নয়। 
আর সেখানে পীরের নামে,মাযারের নামে মান্নত করা হয়।

মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

قُلْ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (162) لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَاْ أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ (163) (سورة الأنعام-162-163)

 “আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও আমার মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই। তাঁর কোন অংশিদার নেই। আমি তা-ই করতে আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম আনুগত্যশীল। (সূরা আনআম-১৬২-১৬৩)

★সেখানে মাজারে সেজদাহ করা হয়
অথচ আল্লাহ ছাড়া কাউকে সেজদা করা সুষ্পষ্ট হারাম।

মাজারে শিরক সম্পর্কে আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
মাইজভান্ডার দরবারে যে আয়োজন হয়,এর অধিকাংশই শিরক ও নাজায়েজ কাজ।

সুতরাং সেখানে যাওয়া কোনো মুসলিমের জন্য জায়েজ নেই।

প্রচলিত পদ্ধতিতে মিলাদুন্নাবী সাঃ পালন করা বিদয়াত।

রাসুল সাঃ বলেন-

وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.

আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)

আরেক হাদীসে আছে-
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত
عن أمِّ المؤمنين أم عبدالله عائشةَ رضي الله عنها قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ((من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رَدٌّ))؛ [رواه البخاري ومسلم]، 

‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...