আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (48 points)
আসসালামু আলাইকুম।আমার মা এর কি কোন মানসিক রোগ আছে কিনা জানি না,তবে উনি কেন তার নিজ সন্তানের (আমার বোন)সাথে এরকম জুলুম মূলক আচরণ করেন তার কারণ খুঁজে পাই না।কিছুদিন আগে আবার এরকম ঘটনা হয়,আমার বোনকে আমাদের বাসা থেকে চলে যেতে বলায় উনি চলে যান(বিবাহিত উনি)।এরপর থেকে মা আর বোনের যোগাযোগ বন্ধ।চোখের সামনে বোনকে জুলুমের স্বীকার হতে দেখেছি, তাদের এখন যোগাযোগ ও বন্ধ এ অবস্থায় আমি কিভাবে মায়ের সাথে স্বাভাবিক ভাবে আচরণ করি!এই চিন্তা থেকে আমিও মায়ের সাথে কথা বলা বন্ধ রেখেছি। আমার সিদ্ধান্ত হল আমার মা যখন বোন এর সাথে কথা বলবে তখন আমিও আবার স্বাভাবিক ভাবে মার সাথে কথা বলা শুরু করব।

এই অবস্থায় আমার করণীয় কি?এই জটিলতা সামলাতে কি করতে পারি আমি?

খুব কঠিন অবস্থায় আছি,দুয়ার দরখাস্ত

1 Answer

0 votes
ago by (65,250 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/54478/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

পিতা-মাতা যুলুম করলেও তাদের সাথে সদাচার করতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: مَا مِنْ مُسْلِمٍ لَهُ وَالِدَانِ مُسْلِمَانِ يُصْبِحُ إِلَيْهِمَا مُحْتَسِبًا، إِلَّا فَتْحَ لَهُ اللَّهُ بَابَيْنِ - يَعْنِي: مِنَ الْجَنَّةِ - وَإِنْ كَانَ وَاحِدًا فَوَاحِدٌ، وَإِنْ أَغْضَبَ أَحَدَهُمَا لَمْ يَرْضَ اللَّهُ عَنْهُ حَتَّى يَرْضَى عَنْهُ "، قِيلَ: وَإِنْ ظَلَمَاهُ؟ قَالَ: «وَإِنْ ظَلَمَاهُ»

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ যে কোন মুসলমানের মুসলিম পিতা-মাতা জীবিত থাকলে এবং সে ভোরবেলা সওয়াবের আশায় তাদের খোঁজ-খবর নিলে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য বেহেশতের দু’টি দরজা খুলে দেন এবং তাদের একজন থাকলে একটি দরজা। সে তাদের কোন একজনকে অসন্তুষ্ট করলে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে তাকে সন্তুষ্ট না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট হন না। বলা হলো, তারা তার উপর যুলুম করে থাকলে? তিনি বলেন, তারা তার উপর যুলুম করলেও। আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং-৭

,

যে ব্যক্তি পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় আল্লাহ তাকে অভিশাপ দেন।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ قَالَ: سُئِلَ عَلِيٌّ: هَلْ خَصَّكُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِشَيْءٍ لَمْ يَخُصَّ بِهِ النَّاسَ كَافَّةً؟ قَالَ: مَا خَصَّنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِشَيْءٍ لَمْ يَخُصَّ بِهِ النَّاسَ، إِلَّا مَا فِي قِرَابِ سَيْفِي، ثُمَّ أَخْرَجَ صَحِيفَةً، فَإِذَا فِيهَا مَكْتُوبٌ: «لَعَنَ اللَّهُ مَنْ ذَبَحَ لِغَيْرِ اللَّهِ، لَعَنَ اللَّهُ مَنْ سَرَقَ مَنَارَ الْأَرْضِ، لَعَنَ اللَّهُ مَنْ لَعَنَ وَالِدَيْهِ، لَعَنَ اللَّهُ مَنْ آوَى مُحْدِثًا»

আবু তোফাইল (র) থেকে বর্ণিতঃ আলী (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, নবী (সাঃ) কি কোন বিশেষ ব্যাপার আপনাকে বলেছেন, যা সর্বসাধারণকে বলেননি? তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) অন্য কাউকে বলেননি এমন কোন বিশেষ কথা একান্তভাবে আমাকে বলেননি। অবশ্য আমার তরবারির খাপের মধ্যে যা আছে ততটুকুই। অতঃপর তিনি একখানি লিপি বের করলেন। তাতে লেখা ছিলঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অপর কারো নামে পশু জবাই করে তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। যে ব্যক্তি জমির সীমানা চিহ্ন চুরি করে তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে অভিসম্পাত করে তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। যে ব্যক্তি বিদআতীকে আশ্রয় দেয় তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং-১৭ হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

,

মুশরিক পিতার সাথেও সদাচার করতে হবে।

عَنْ أَبِيهِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: نَزَلَتْ فِيَّ أَرْبَعُ آيَاتٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ تَعَالَى: كَانَتْ أُمِّي حَلَفَتْ أَنْ لَا تَأْكُلَ وَلَا تَشْرَبَ حَتَّى أُفَارِقَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: {وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلَى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطُعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا} [لقمان: 15] . وَالثَّانِيَةُ: أَنِّي كُنْتُ أَخَذْتُ سَيْفًا أَعْجَبَنِي، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَبْ لِي هَذَا، فَنَزَلَتْ: {يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْأَنْفَالِ} [الأنفال: 1] . وَالثَّالِثَةُ: أَنِّي مَرِضْتُ فَأَتَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أَقْسِمَ مَالِي، أَفَأُوصِي بِالنِّصْفِ؟ فَقَالَ: «لَا» ، فَقُلْتُ: الثُّلُثُ؟ فَسَكَتَ، فَكَانَ الثُّلُثُ بَعْدَهُ جَائِزًا. وَالرَّابِعَةُ: إِنِّي شَرِبْتُ الْخَمْرَ مَعَ قَوْمٍ مِنَ الْأَنْصَارِ، فَضَرَبَ رَجُلٌ مِنْهُمْ أَنْفِي بِلَحْيِ جَمَلٍ، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَنْزَلَ عَزَّ وَجَلَّ تَحْرِيمَ الْخَمْرِ

সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমার সম্পর্কে আল্লাহর কিতাবের চারটি আয়াত নাযিল হয়।

(১) আমার মা শপথ করেন যে, আমি যতক্ষণ মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে ত্যাগ না করবো ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি পানাহার করবেন না । এই প্রসঙ্গে মহামহিম আল্লাহ নাযিল করেনঃ “পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করতে চাপ দেয় যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তুমি তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস করবে” (৩১ : ১৫)।

,

(২) একখানি তরবারি আমার পছন্দ হলে আমি তা গ্রহণ করে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে এটা দান করুন। তখন নাযিল হলো, “লোকে আপনার নিকট যুদ্ধলব্ধ দ্রব্যসম্ভার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে” (৮ : ১)।

,

(৩) আমি রোগাক্রান্ত হলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে দেখতে আসেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার সম্পদ বণ্টন করে দিতে চাই। আমি কি আমার অর্ধেক সম্পত্তি সম্পর্কে ওসিয়াত করবো? তিনি বলেনঃ না। আমি বললাম, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি নিরুত্তর থাকলেন। শেষে এক-তৃতীয়াংশ ওসিয়াত করা বৈধ করা হয়।

,

(৪) আমি কতক আনসারীর সাথে মদপান করি। তাদের মধ্যকার এক ব্যক্তি উটের নীচের চোয়ালের হাড় আমার নাকের উপর ছুড়ে মারে। আমি নবী (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হলে মহামহিম আল্লাহ মদ্যপান হারাম হওয়া সংক্রান্ত আয়াত (৫ : ৯০-৯১) নাযিল করেন। আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং-২৪ হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দ্বীনের বুঝ না থাকার কারণে হয়তো আপনার মাতা এভাবে চলাফেরা করেন। তাই আপনারা তাকে আদবের সাথে বুঝাবেন। আপনার মাকে ইসলামী আহকাম শিখার জন্য উদ্বুদ্ধ করবেন বা আলেমদের ওয়াজ-নসীহত শোনার কথাও বলেবেন। দেখবেন তিনি দ্বীন পেলে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আর আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী বেশী দুআও করতে থাকুন। বাড়ীতে তালীমের ব্যবস্থাও করতে পারেন।

আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/3199/

,

উল্লেখ্য যে, আপনার মা যদি আপনার ও আপনার বোনের হক আদায় না করে এবং আপনাদের সাথে খারাপ আচরণ করে তাহলে তার গোনাহ হবে। এই কারণে আখিরাতে পাকড়াও হবে।

আর এভাবে কথা বন্ধ করে রাখবেন না। আপনার মায়ের সাথে কথা বলবেন। অন্যথায় কথা বন্ধ ও সম্পর্ক ছিন্নের গোনাহ হবে।

কথা বন্ধ রাখা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/60683/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...