আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আত্মীয়দের বাসায় গেলে পুরুষরা পুরুষের সঙ্গে দেখা হলে প্রথমে সালাম বিনিময় করে মুসাফা মুহানাকা ও  করে থাকে।
কিন্তু মহিলা মহিলাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ এর সময় তারা একজনের গাল অপরজনের গালের সাথে লাগিয়ে জড়িয়ে ধরে থাকে এটা কি ঠিক ( এর সুন্নাহ  পদ্ধতি কি)

ছোট বাচ্চারা রাস্তায় হাঁটার সময় নানান ধরনের প্রশ্ন করে থাকে
অনেক সময় রাস্তা ধরে পশু পাখিরা  তারা  তাদের শারীরিক চাহিদা পুরন করে থাকে  যেমন কুকুর অনেক সময় তারা তাদের শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে জট বেঁধ লেগে থাকে এমন সিচুয়েশনে ছোট বাচ্চারা প্রশ্ন করে থাকে   এটা কেন হয় ওটা কি করে তাদেরকে কিভাবে উত্তর দেওয়া যায় উত্তর না দিলে আরো বেশি প্রশ্ন করে থাকে?

জানাজার নামাজে ইমাম সাহেব সালাম ফিরানোর সময় ডান দিকে সালাম ফিরানোর পর ডান হাত নামিয়ে নেয় মুক্তাদিরা  তারপর বাম দিকে সালাম ফিরানোর পর বাম হাত নামায় এ পদ্ধতি কি সঠিক?

1 Answer

0 votes
by (64,590 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

পরস্পরের মাঝে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ইসলামের শিক্ষা। সম্পর্ক বজায় রাখতে আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করি। এরমধ্যে একে অপরের সাথে দেখা সাক্ষাৎ একটি পদ্ধতি। সাক্ষাতের সময় প্রথমেই আমরা সালাম বিনিময় করি এবং মুসাফাহা করি। এ সম্পর্কে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা একে অপরের সঙ্গে মুসাফাহা করো, এতে তোমাদের অন্তরে বিদ্যমান প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষ দূর হয়ে যাবে। একে অন্যকে হাদিয়া প্রদান করো, এতে হৃদ্যতা সৃষ্টি হবে এবং শত্রুতা ও ঘৃণা দূরীভূত হবে।’ (আবু দাউদ : ৫২১২)।

হজরত বারা বিন আযেব রা. বলেন, ‘পরিপূর্ণ অভিবাদন হল তোমার ভাইয়ের সঙ্গে তোমার মুসাফাহা করা।’-(আল-আদাবুল মুফরাদ ৯৬৭)

হাদিসে আরো বর্ণিত হয়েছে, ‘দুজন মুসলমান যখন সাক্ষাতে মুসাফাহা করে, তাদের হাতের বন্ধন মুক্ত হওয়ার আগেই দুজনের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হয়।’ -(মুসনাদে আহমাদ : ৩/১৪২)

আল্লাহর রাসুল (সা.) এবং সাহাবায়ে-কেরাম নিয়মিত মুসাফাহা করতেন। আবুল খাত্তাব কাতাদাহ রা: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আনাস রা.-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূল সা.-এর সাহাবিদের মধ্যে কি মুসাফাহা করার প্রথা ছিল। তিনি বলেন, হ্যাঁ। (বুখারি, ৬০৬৩)

আরেক হাদিসে হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা: বলেন, এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের মধ্যে থেকে কেউ তার ভাইয়ের সঙ্গে কিংবা তার বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করলে তার সামনে কি মাথানত করবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে কি তাকে জড়িয়ে ধরে চুমা দেবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে কি তার হাত ধরে তার সাথে মুসাফাহা করবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (তিরিমিজি, ২৭২৮)

নিয়ম হলো- দুই হাতে মুসাফাহা করা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, (মুসাফাহার সময়) আমার হাতটি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দুই হাতের মধ্যে ছিল। (বুখারি, হাদিস : ৫/২৩১১) আর মুসাফাহার সময় এ দোয়া পড়বে ‘ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়া লাকুম।’ মুসাফাহার পর হাত বুকে লাগানোর বিধান নেই, জরুরিও নয় বটে।

পুরুষদের মতো মহিলাদের জন্য পরস্পর মুসাফাহা করা সুন্নত। এই সুন্নতের প্রচলন এবং প্রচার-প্রসার করা উত্তম কাজ। তবে পুরুষের জন্য নিজ স্ত্রী ব্যতীত অন্য মাহরাম মহিলার সাথে মুসাফাহা থেকে বিরত থাকা ভালো। তবে কারণবশত কুমন্ত্রণা ও কুধারণা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকা অবস্থায় শুধু মাহরামদের সাথে মুসাফাহার অনুমতি থাকলেও গাইরে মাহরামের সাথে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আলফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহ ৪/২৬৬০, আদদুররুল মুখতার ৬/৩৬৭

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. নারী ও পুরুষের ময়ানাকার পদ্ধিতি একই রকম। মুয়ানাকা করার সুন্নত পদ্ধতি হলো একে অপরের ডান দিকের ঘাড়ের সঙ্গে ঘাড় মেলানো। বুকের সঙ্গে বুক মিলে গেলে কোনো সমস্যা নেই। তবে মুয়ানাকা শুধু একবার করতে হয়। তিনবার করার কথা হাদিস বা ফিকহের কোনো কিতাবে উল্লেখ নেই। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৯/৭৭)

মুয়ানাকা করার সময় এই পড়া উচিতআল্লাহুম্মা জিদ মুহাব্বাতী লিল্লাহি ওয়া রাসুলিহি। অর্থাৎ আল্লাহ আমাদের মধ্যে আল্লাহর ওয়াস্তে পরস্পর ভালোবাসা বৃদ্ধি করে দিন। (জামেউস সুনান : ১৫৯)

সুতরাং শুধু গালের সাথে গাল মেলালে সুন্নাহ আদায় হবে না।

২. এমন ছোট বয়সের বাচ্চাদেরকে হেকমতের সাথে কৌশলে বুঝিয়ে দিতে হবে অথবা তার দৃষ্টি ভিন্ন দিকে আকর্ষণ করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। তাকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। কারণ, এত ছোট বয়সে এ বিষয়গুলো তাদের বোধগম্য হবে না  এবং এগুলো তাদের সাথে এই বয়েসে শেয়ার করাও উচিত না।

৩. জানাযা নামাযে সালাম ফিরানোর সময় হাত কখন ছাড়বে- এ সম্পর্কে ফিকহবিদগণ থেকে দুই ধরনের মত রয়েছে। একটি মত হল, চতুর্থ তাকবীর বলার পর উভয় হাত ছেড়ে দিবে এবং এরপর সালাম ফিরাবে। আরেকটি মত হল, উভয় সালাম ফিরানো পর্যন্ত হাত বেঁধে রাখবে। সালাম ফিরানোর পর উভয় হাত ছেড়ে দিবে।

সুতরাং জানাযা নামাযে সালাম ফিরানোর সময় উপরোক্ত যে কোনো পদ্ধতিই অবলম্বন করা যেতে পারে।

(খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৫; আসসিআয়াহ ২/১৫৯; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ১/২৫০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৮৭-৪৮৮) আরো বিস্তারিত জানুন:- https://ifatwa.info/34502/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...