ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব,
১. শরীয়তের বিধান হলো
জন্মদিন (Birthday) পালন করা এবং এ উপলক্ষে কাউকে হ্যাপি বার্থডে বলে উইশ (wish)
করা বা গিফট লেনদেন করা। কারণ তা অমুসলিমদের
সংস্কৃতি। আর ইসলামে অমুসলিমদের অনুসরণ-অনুকরণ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ-চাই তা ইবাদতের
ক্ষেত্রে হোক অথবা আচার-আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, রীতি-নীতি বা কৃষ্টি-কালচারের ক্ষেত্রে হোক। কেননা হাদিসে
এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন:
مَنْ
تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
“যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে,
সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।” [সুনানে
আবু দাউদ, অধ্যায়:
পোশাক-পরিচ্ছেদ হা/৪০৩১-]
সাহাবী আবু সাঈদ রা.
থেকে বর্ণিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لَتَتَّبِعُنَّ سَنَنَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حذو القذة
بالقذة حَتَّى لَوْ دخلوا جُحْرَ ضَبٍّ لَدخلتتُمُوهُ قالوا: يَا رسول الله
الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى. قَالَ: فَمَنْ؟»
‘‘তোমরা অবশ্যই পূর্ববর্তী উম্মতদের অভ্যাস ও রীতি-নীতির ঠিক
ঐ রকম অনুসরণ করবে, যেমন
এক তীরের ফলা অন্য এক তীরের ফলার সমান হয়। অর্থাৎ তোমরা পদে পদে তাদের অনুসরণ করে চলবে।
এমনকি তারা যদি শাণ্ডা (মরুভূমিতে বসবাসকারী গুই সাপের ন্যায় এক ধরণের জন্তু বিশেষ)
এর গর্তে প্রবেশ করে থাকে, তাহলে
তোমরাও সেখানে প্রবেশ করবে।”
সাহাবীগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল! পূর্ববর্তী উম্মত দ্বারা
আপনি কি ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বোঝাচ্ছেন?
তিনি বললেন: তবে আর কারা?
[বুখারী, অধ্যায়: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী: ”তোমরা
অবশ্যই পূর্ববর্তী লোকদের রীতি-নীতির অনুসরণ করবে।” তবে বুখারীর বর্ণনায় حذو القذة بالقذة – এই শব্দসমূহ নেই। তার স্থলে شبرا
بشبر وذراعا بذراع
শব্দগুলো রয়েছে। অর্থাৎ এক হাতের বিঘত
যেমন অন্য হাতের বিঘতের সমান হয় এবং এক হাতের বাহু অন্য হাতের বাহুর সমান হয়।]
যা হোক, ইসলামে যেহেতু জন্ম-মৃত্যু দিবস পালন করার অস্তিত্ব নেই সেহেতু
অমুসলিমদের সাদৃশ্য অবলম্বনে জন্মদিবস (Birth Day) পালন করার সুযোগ নাই।
★সুতরাং এ উপলক্ষে কাউকে হ্যাপি বার্থডে বলে উইশ (wish)
করা, শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো,
গিফট দেয়া,
কেক কাটা,
মোমবাতি জ্বালানো বা ফুঁ দিয়ে নিভানো,
বিশেষ খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা,
জন্ম দিনের পার্টি করা সবই হারাম। তবে
কোন কারনে বার্থডে উপলক্ষে কোন হাদিয়া বা গিফট গ্রহন করলে তা গরিব মিসকিনকে ছওয়াবের
নিয়ত ছাড়া দান করে দিতে হবে।
২. https://ifatwa.info/9991/ ফতোয়াতে উল্লেখ
রয়েছেঃ
শরীয়তের বিধান হলো কোন মুসলিমের জন্য কুফরী আচার অনুষ্ঠানের
প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করা কিংবা এ উপলক্ষে অন্যকে বোনাস প্রদান,বোনাস গ্রহন,অফার গ্রহন করা হারাম। কেননা আল্লাহ তাআলা কুফরীর প্রতি সন্তুষ্ট
নন।
তিনি বলেন: “যদি তোমরা
কুফরী কর তবে (জেনে রাখ) আল্লাহ্ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। আর তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য
কুফরী পছন্দ করেন না। এবং যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও; তবে (জেনে রাখ) তিনি তোমাদের জন্য সেটাই পছন্দ করেন।”[সূরা
যুমার, আয়াত:
৭]
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَبْدِ
اللهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ:: ”
الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ
করেছেন, ব্যক্তি
[কিয়ামতের দিন] তার সাতে থাকবে যাকে সে মোহাব্বত করে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৭১৮, বুখারী, হাদীস নং-৬১৬৮, ৫৮১৬}
عَنِ ابْنِ
عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ
تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে
ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি উক্ত নাজায়েয উৎসব ও বেহুদা কাজের বিপরীতে প্রদত্ব ডিসকাউন্ট
দেওয়া কোনো মুসলমানের জন্য জায়েয হবে না এবং গ্রহণ করাও জায়েয হবে না। হ্যা,
কোনো অমুসলিম কম্পানি কর্তৃক ডিসকাউন্ট
গ্রহণ করতে কোনো বাধা নেই। এসম্পর্কে আরো জানুন: https://ifatwa.info/66139/