আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম।
 মুহতারাম উস্তায, একটি বিষয়ে জানা আমার খুবই প্রয়োজন। আমার কি করনীয় একটু পরামর্শ দেন প্লিজ। আমি একজন বিবাহিতা নারী। সাধ্যমত দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করি, পরিপূর্ণ পর্দা করার চেষ্টা করি। আমার হাসবেন্ড আলহামদুলিল্লাহ অনেক পরহেজগার একজন মানুষ। হালাল রিজিকের ব্যাপারে তিনি খুবই শক্ত। আমার প্রতি তিনি খুবই দায়িত্বশীল ও যত্নশীল আলহামদুলিল্লাহ এবং আমাদের সম্পর্ক আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো। বিয়ের বয়স ১১ মাস চলতেছে। সমস্যা হলো আমার আব্বুকে নিয়ে। আব্বু দ্বীনের ব্যাপারে খুবই উদাসীন, সম্পূর্ণ দুনিয়ামুখী একজন মানুষ, কোনো কিছু সহজে মানতে চাননা,  আমার বিয়ের আগে নামাজ ও পড়তো না। এখন জামাই এর কথা শুনে নামাজ পড়ে। আগে সুদী লেনদেন এর সাথে জড়িত থাকলেও এখন জামাই এর কথায় বাদ দিয়েছে সেগুলো, কিন্তু ব্যাংকে ডিপিএস আছে এখনো। আব্বু স্টক ব্যবসা করে (পাশাপাশি পরিবহন ট্রাক এর হালাল ব্যবসা আছে) । ধান, পাট, গম এগুলো কিনে রাখে তারপর ৪/৫/৬ মাস বা কখনো এর কম বেশি সময়ে রেখে দাম একটু বাড়লে বিক্রি করে দেয়। কখনো ৩০০ মণ কখনো ৫০০ মণ এরকম কিনে। সামনে নাকি ১০০০ মণ কিনবে বলতেছে। রিসেন্টলি ধান কিনতেছে, জৈষ্ঠ্য মাসের আগে নাকি বিক্রি করে দিবে।
১/এখন আমার প্রশ্ন হলো আমার আব্বুর এই উপার্জন কি হালাল হবে ?
আমার হাসবেন্ড একদমই চাননা যে শ্বশুর এই ব্যবসা করুক। আমি ও মন থেকে চাই না আব্বু স্টক ব্যবসা করুক। অনেক বার করে মানা করেছে এই ব্যবসা বাদ দেওয়ার জন্য। বিয়ের পাকা কথা হওয়ার আগে বলেছিল বাদ দিতে। আমার আব্বু নাকি বলেছিল আমি খোঁজ নিয়ে যদি দেখি হারাম তাহলে বাদ দিবো। কিন্তু আব্বু কোন এক হুজুরের কাছে শুনেছে যে এটা হারাম নয়, তাই আর বাদ দিবে না। আমার হাসবেন্ড এখন বলে যে আমার বউ বাচ্চাকে আমি হারাম খেতে দিবো না। আব্বু যদি স্টক ব্যবসা টা কনটিনিউ করে তাহলে তিনি আমাকে আমার বাবার বাড়ি আসতে দিবেন না আর। তিনি দ্বীনের ব্যাপারে খুবই শক্ত আলহামদুলিল্লাহ, এবং আমি খুবই পছন্দ করি এটা।

 ২/এখন তিনি যদি আমাকে আমার বাবার বাড়ি আসতে না দেন, এমতাবস্থায় শরীয়ার দৃষ্টিতে আমার কী করনীয় ? কিভাবে চললে আল্লাহ পাক আমার উপর বেশি সন্তুষ্ট থাকবেন ?

৩/ বাবা মায়ের বাড়িতে যদি আসতে না দেয় তাহলে কি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে ? সেক্ষেত্রে কীভাবে বাবা মায়ের হক আদায় করবো ?

৪/বা স্বামীর অনুমতি নিয়ে যদি বাবার বাড়িতে এসে থাকি তাহলে কি আমার বাবার হারাম উপার্জন খেয়ে আমি বা আমার বাচ্চা কি গুনাহগার হবো? (আমি গর্ভবতী, সন্তান প্রসবের সময় চলে আসছে) মেহেরবানী করে জানাবেন।

৫/ আমার বাবা মা যদি আমাদেরকে / আমার সন্তানদের কোন উপহার দেয় তাহলে সেটা গ্রহণ করা কি জায়েজ হবে?

সবগুলো প্রশ্নের ক্ষেত্রে কোন পন্থায় চললে আল্লাহ পাক আমার উপর বেশি খুশি থাকবেন মেহেরবানী করে জানাবেন।
লেখা দীর্ঘ হওয়ার জন্য আফওয়ান।

1 Answer

0 votes
by (584,400 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/7334/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

এহতেকার বা সিন্ডিকেট/গোদামজাত  চার মাযহাব মতে হারাম।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻭَﻳَﺼُﺪُّﻭﻥَ ﻋَﻦ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺟَﻌَﻠْﻨَﺎﻩُ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ ﺳَﻮَﺍﺀ ﺍﻟْﻌَﺎﻛِﻒُ ﻓِﻴﻪِ ﻭَﺍﻟْﺒَﺎﺩِ ﻭَﻣَﻦ ﻳُﺮِﺩْ ﻓِﻴﻪِ ﺑِﺈِﻟْﺤَﺎﺩٍ ﺑِﻈُﻠْﻢٍ ﻧُﺬِﻗْﻪُ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏٍ ﺃَﻟِﻴﻢٍ

যারা কুফর করে ও আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই মসজিদে হারাম থেকে বাধা দেয়যাকে আমি প্রস্তুত করেছি স্থানীয় ও বহিরাগত সকল মানুষের জন্যে সমভাবে এবং যে মসজিদে হারামে অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী কাজ করার ইচ্ছা করেআমি তাদেরকে যন্ত্রানাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাব। সূরা হজ্ব-২৫


উক্ত আয়াতে ইলহাদের ব্যখায় উলামায়ে কেরাম নিম্নোক্ত হাদীস পেশ করে বলেন যে ইলহাদ তখনই হবে যখন এহতেকার পাওয়া যাবে।

হযরত ইয়া'লা ইবনে উমাইয়্যা থেকে বর্ণিত,

عَنْ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ أَنَّ الرَّسُول صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَال: احْتِكَارُ الطَّعَامِ فِي الْحَرَمِ إِلْحَادٌ فِيهِ. عون المعبود رقم الحديث ٢٠٢٠

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- হারাম শরীফে খাদ্যকে গোদামজাত করণ ধর্মদ্রোহের শামিল।


হযরত উমর রাযি থেকে বর্ণিত

ﻋﻦ ﻋﻤﺮ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ، ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻗﺎﻝ : " ﺍﻟﺠﺎﻟﺐ ﻣﺮﺯﻭﻕ ﻭﺍﻟﻤﺤﺘﻜﺮ ﻣﻠﻌﻮﻥ " . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ، ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻣﻲ

ব্যবসায়ী রিযিকপ্রাপ্ত এবং সিন্ডিকেটকারী অভিশপ্ত।  মিশকাত-২৮৯৩


হযরত মা'মার ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত

عَنْ مَعْمَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ قَال: قَال رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنِ احْتَكَرَ فَهُوَ خَاطِئٌ

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- যে মূল্যবৃদ্ধির জন্য গোদামজাত করল সে গোনাহগার। সহীহ মুসলিম-১৬০৫


এহতেকার কাকে বলেসে সম্পর্কে সম্পর্কে  চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ

"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়(২/৯৪) " বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।নিম্নে তার চুম্বকাংশ তুলে ধরছি....

أَمَّا فِي الشَّرْعِ فَقَدْ عَرَّفَهُ الْحَنَفِيَّةُ بِأَنَّهُ: اشْتِرَاءُ طَعَامٍ وَنَحْوِهِ وَحَبْسُهُ إِلَى الْغَلاَءِ.

পরিভাষায় এহতেকার বলা হয়,

খাদ্য বা খাদ্য জাতীয় বস্তুকে খরিদ করে মূল্য বৃদ্ধি পর্যন্ত মওজুদ রাখা।


কোন কোন জিনিষে এহতেকার হবে সে সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়ইমাম মালিক ও আবু ইউসুফ রাহ বলেন,

الثَّانِي: أَنَّ الاِحْتِكَارَ يَجْرِي فِي كُل مَا يَحْتَاجُهُ النَّاسُ، وَيَتَضَرَّرُونَ مِنْ حَبْسِهِ، مِنْ قُوتٍ وَإِدَامٍ وَلِبَاسٍ وَغَيْرِ ذَلِكَ. وَهَذَا مَا ذَهَبَ إِلَيْهِ الْمَالِكِيَّةُ وَأَبُو يُوسُفَ مِنَ الْحَنَفِيَّةِ

ভাবার্থ- প্রত্যেক ঐ জিনিষ যা সিন্ডিকেট করে রাখলে জনসাধারণ ভুগান্তিতে পড়বে। চায় তা খাদ্য হোক বা পোষাক হোক বা অন্য কিছু হোক।


এহতেকার হারাম হওয়ার হেকমত হল,

الْحِكْمَةُ فِي تَحْرِيمِ الاِحْتِكَارِ:

٦ - يَتَّفِقُ الْفُقَهَاءُ عَلَى أَنَّ الْحِكْمَةَ فِي تَحْرِيمِ الاِحْتِكَارِ رَفْعُ الضَّرَرِ عَنْ عَامَّةِ النَّاسِ. وَلِذَا فَقَدْ أَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّهُ لَوِ احْتَكَرَ إِنْسَانٌ شَيْئًا، وَاضْطُرَّ النَّاسُ إِلَيْهِ،وَلَمْ يَجِدُوا غَيْرَهُ، أُجْبِرَ عَلَى بَيْعِهِ - عَلَى مَا سَيَأْتِي بَيَانُهُ - دَفْعًا لِلضَّرَرِ عَنِ النَّاسِ، وَتَعَاوُنًا عَلَى حُصُول الْعَيْشِ (١) . وَهَذَا مَا يُسْتَفَادُ مِمَّا نُقِل عَنْ مَالِكٍ مِنْ أَنَّ رَفْعَ الضَّرَرِ عَنِ النَّاسِ هُوَ الْقَصْدُ مِنَ التَّحْرِيمِ، إِذْ قَال: إِنْ كَانَ ذَلِكَ لاَ يَضُرُّ بِالسُّوقِ فَلاَ بَأْسَ (٢) وَهُوَ مَا يُفِيدُهُ كَلاَمُ الْجَمِيعِ (٣) .

ফুকাহায়ে কিরাম একমত যে,এহতেকার হারাম হওয়ার হেকমত হলজনসাধারণকে ভুগান্তি থেকে রক্ষা করা। এজন্য ফুকাহায়ে কিরাম একমত যে,যদি কোনো মানুষ কোনো জিনিষ গোদামজাত করে নেয়আর লোকজন সে জিনিষের প্রতি মুখাপেক্ষী থাকে,তারা অন্য কারো থেকে ক্রয় করতে পারে নাতাহলে ঐ ব্যক্তিকে সাধারণ বাজার মূল্যর উপর বিক্রি করতে বাধ্য করা হবে।জনসাধারণকে ভুগান্তি থেকে বাঁচাতে এবং সাধারণ জীবনাচরণ ফিরিয়ে আনতে।

এটা ইমাম মালিক রাহ এর উক্তি থেকে স্পষ্টই বু্ঝা যায় যেতিনি বলেছে 'এহতেকার হারাম হওয়ার মূল উদ্দেশ্যই হল জনসাধারণ কে কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়া। কিন্তু যদি এহতেকারে ধরুণ জনসাধারণের কষ্ট না হয়তাহলে তাতে কোনো সমস্যা নাই। সমস্ত ফুকাহায়ে কেরামদের মূল উদ্দেশ্যই হল জনসাধারণকে মুক্তি দেয়া।


এহতেকারে শাখাপ্রশাখা গত কিছু আলোচনা,

وَقَدْ صَوَّرَهُ ابْنُ الْقَيِّمِ بِقَوْلِهِ: أَنْ يَلْزَمَ النَّاسَ أَلاَّ يَبِيعَ الطَّعَامَ أَوْ غَيْرَهُ مِنَ الأْصْنَافِ إِلاَّ نَاسٌ مَعْرُوفُونَ، فَلاَ تُبَاعُ تِلْكَ السِّلَعُ إِلاَّ لَهُمْ، ثُمَّ يَبِيعُونَهَا هُمْ بِمَا يُرِيدُونَ. فَهَذَا مِنَ الْبَغْيِ فِي الأْرْضِ وَالْفَسَادِ بِلاَ تَرَدُّدٍ فِي ذَلِكَ عِنْدَ أَحَدٍ مِنَ الْعُلَمَاءِ. وَيَجِبُ التَّسْعِيرُ عَلَيْهِمْ، وَأَنْ يَبِيعُوا وَيَشْتَرُوا بِقِيمَةِ الْمِثْل مَنْعًا لِلظُّلْمِ. وَكَذَلِكَ إِيجَارُ الْحَانُوتِ عَلَى الطَّرِيقِ أَوْ فِي الْقَرْيَةِ بِأُجْرَةٍ مُعَيَّنَةٍ، عَلَى أَلاَّ يَبِيعَ أَحَدٌ غَيْرُهُ، نَوْعٌ مِنْ أَخْذِ أَمْوَال النَّاسِ قَهْرًا وَأَكْلِهَا بِالْبَاطِل، وَهُوَ حَرَامٌ عَلَى الْمُؤَجِّرِ وَالْمُسْتَأْجِرِ-

ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহএহতেকার এর শাখাপ্রশাখাগত আলোচনা করতে যেয়ে তার একটি পদ্ধতি এরূপ বর্ণনা করেন যে,মানুষের উপর অত্যাবশ্যকীয় করে দেয়া যে,উক্ত খাদ্য বা এজাতীয় অন্যান্য জিনিষ নির্দিষ্ট সংখ্যক কিছু লোক (ডিলার) ছাড়া অন্য কেউ বিক্রি করতে পারবে না। সুতরাং উক্ত জিনিষকে শুধুমাত্র ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গের (ডিলারদের) নিকটই বিক্রি করা হয়। আর তারা যেভাবে ইচ্ছা মূল্যনির্ণয় পূর্বক বিক্রি করে। এটা নিঃসন্দেহে যমিনে বিশৃঙ্খলা ও ফাসাদ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। তাদেরকে সহজ সাধারণ বাজারমূল্য  নির্ধারণ ও মুক্তভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য বাধ্য করা মুসলমানদের উপর ওয়াজিব।

ঠিক তেমনিভাবে রাস্তার ধারে বা গ্রামে নির্দিষ্ট ভাড়ার বিনিময়ে কোনো দোকান ঐ শর্তে ভাড়া দেয়া ও নেয়া যে,সে ব্যতীত আর কেউ বিক্রয় করতে পারবে না। এটা মানুষের মালকে অন্যায়ভাবে জোড়করে করে আত্মসাৎ করা ও বাতিল ত্বরিকায় উপার্জন করার নামান্তর। এক্ষেত্রে দোকান ভাড়ায় প্রদানকারী ও ভাড়াটি উভয় ই গোনাহগার হবেন। আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ 2/94


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,


ঐজিনিসগুলো স্টক করার কারণে যদি বাজারে কোনো প্রভাব পড়ে এবং মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে গোদামজাত করা হয় তাহলে তা নাজায়েয ও হারাম হবে। তবে যদি কারো গোদামজাত করণের দ্বারা বাজারে তেমন কোনো প্রভাব না পড়েতাহলে উনি এমন কোনো মালকে গোদামজাত করতে পারবেন এবং যতদিন ইচ্ছা করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার আব্বুর এই উপার্জন হালাল।  

এখানে মাসয়ালা মূলত দুটি।
একটি হলো, এভাবে স্টক ব্যবসা করা জায়েজ হচ্ছে কিনা?
দুই নাম্বার হলো, এখান থেকে আপনার বাবার যে উপার্জন হচ্ছে, সেটি হালাল কিনা।

এক, ধান, পাট, গম এই জিনিসগুলো স্টক করার কারণে যদি বাজারে কোনো প্রভাব পড়ে এবং মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে গুদামজাত করা হয়, তাহলে তা নাজায়েয ও হারাম হবে। তবে যদি আপনার বাবার গুদামজাত করণের দ্বারা বাজারে তেমন কোনো প্রভাব না পড়ে, তাহলে উনি এমন কোনো মালকে গোদামজাত করতে পারবেন এবং যতদিন ইচ্ছা করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।

দুই, এক্ষেত্রে আপনার বাবার ওই জিনিসগুলো গুদামজাত করা জায়েজ পদ্ধতিতেই হোক বা নাজায়েজ পদ্ধতিতেই হোক তিনি যেহেতু তার হালাল পণ্য বিক্রি করেই টাকা নিচ্ছেন,আর তার মূলধন হালাল ছিলো, সুতরাং নাজায়েজ পদ্ধতিতে গুদামজাত করলেও তার অধিকাংশ উপার্জন হালাল হবে।

https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,

فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن  كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع

যদি এমন কেউ কাউকে কিছু হাদিয়া দেয়,যার অধিকাংশ সম্পত্তি হালাল,তাহলে সেই মালকে গ্রহণ করা নাজায়েয নয়।তবে যদি সে জানতে পারে যে,দাতা হারাম থেকে দিচ্ছে তাহলে এমতাবস্থায় সেটা জায়েয হবে না।আর যদি তার মালের অধিকাংশই হারাম থাকে,তাহলে এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।এমন ব্যক্তির ওখানে আহার করাও যাবে না, যতক্ষণ না সে হালাল খাবারের সংবাদ দিচ্ছে বা এটা বলছে যে,সে ধার করে নিয়ে এসে আহার করাচ্ছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২)

(০২)
উপরোক্ত মাসয়ালা আপনার স্বামীকে বুঝালে আশা করি আপনার স্বামী আপনাকে আপনার বাবার বাসায় যেতে দিবে।

বাবার বাসায় যেতে বাধা দেওয়া এটা আপনার প্রতি অবিচার।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৩)
সেক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত ফোনে কথাবার্তা বলবেন,মাঝেমধ্যে আপনার বাবা মা আপনাকে দেখে যাবে। এতে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবেনা। সেক্ষেত্রে বাবা মায়ের সাথে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখবেন,তাদের সুখ দুখে পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করবেন। 
আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হলে আপনার মালিকানায় টাকা থাকলে আর্থিক সহায়তা করবেন।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার আব্বুর উপার্জন হালাল।  

সুতরাং আপনি যদি বাবার বাড়িতে এসে থাকেন, তাহলে আপনার বাবার উপার্জন খেয়ে আপনি বা আমার বাচ্চা গুনাহগার হবেননা।

(০৫)
আপনার বাবা মা যদি আপনাদেরকে / আপনার সন্তানদের কোন উপহার দেয় তাহলে সেটা গ্রহণ করা  জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...