আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)

আসসালামু-আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,

বিবিধ বিষয়ে কিছু প্রশ্ন ছিল, আশা করি সুন্দর করে ব্যাখ্যামূলক উত্তর দিবেন:

১) ফরজ, নফল ইত্যাদি নামাজের রুকু ও সিজদার তাসবীহ এর পর এবং দুয়া মাসুরার জায়গায় নিম্নোক্ত দোয়াগুলো কি করা যাবে? একসাথেই একাধিক ?

রাব্বির হামহুমা .....

রাব্বানা আতীনা ফিদ্দুনিয়া

আল্লাহুম্মাকফিনী বি হালালীকা .

রাব্বি ইন্নি লিমা আনঝালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিন ফাকির

ইত্যাদি, মোটকথা কুরআন ও হাদিসের যেই কোনো দোয়া কি করা যাবে ?


২) নামাজের বাহিরে দুনিয়াবি দুয়ার ক্ষেত্রে কি এমন দুয়া করা যাবে -

হে আল্লাহ, আমাকে বরকতময় হাজার কোটি টাকা দিন

হে আল্লাহ, আমাকে বরকতময় একটি টয়োটা হেরিয়ার মডেল এর গাড়ি দিন

হে আল্লাহ, আমার ছেলেকে দ্বিতীয় ইলিয়াসজী (তাবলীগের বাণী) বানিয়ে দিন।

 

৩)  আমি শুনেছিলাম, গোসল এর ফরজ আদায় করে গোসল করলে শরীর পাক হয়ে যায়, ওযু করার দরকার নেই। তারপরও যদি কেউ ওযু করে নেয় আলাদাভাবে, তাহলে নাকি পানি অপচয় এর গুনাহ হবে।  তাহলে কি আমার শোনা কথাটি ঠিক নয় ?

ওযু থাকার পরও ওযু প্রয়োজন এমন ইবাদত না করে পুনরায় ওযু করলে কি গুনাহ হবে না ? অপচয় এর ? 

 

৪) এই বইটির ব্যাপারে একটু বলুন। দাম্পত্য জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে এই বইটি লিখেছেন মুফতি ইবনে আদাম কাউসারী। উনি মুফতী তাকী উসমানী দা:বা: এর খাস শাগরেদ, ইংল্যান্ড-এ থাকেন।

দাম্পত্য রসায়ন

লেখক : মুহাম্মাদ বিন আদাম কাউসারি,  প্রকাশনী : কালান্তর প্রকাশনী

Short intro about the book:

https://tinyurl.com/book-fam

বিষয়বস্তু খুবই সেনসিটিভ কিন্তু অবশ্যই উপকারী, স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্যই। এই বিষয়ে বাংলা ভাষায় উল্লেখযোগ্য আর কোনো কিতাব আছে কি না, আমার জানা নেই।

 

৫) যারা বিভিন্ন ধরণের খেলা খেলে, প্রতিযোগিতামূলক - ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস ইত্যাদি। যদি সতর ঢেকেও খেলে, নামাজের সময় নামাজও পড়ে ওয়াক্তের মধ্যে - তবে কি এইসব খেলা থেকে যেই উপার্জন হয়, যেমন ম্যাচ-মানি, স্পনসরশিপ মানি, প্রতিষ্ঠান, ক্লাব, সরকার এর পক্ষ থেকে অর্থ, বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে অর্জিত অর্থ ইত্যাদি কি জায়েজ হবে ? এই টাকা দিয়ে অনেকে আবার বিভিন্ন সেবামূলক কাজও করে যেমন গরিবদের দান করে, মসজিদ, মাদ্রাসায় দান করে ইত্যাদি। এইসব দানও কি কবুল হবে ? এইসব অর্থ জেনেবুঝে মসজিদ, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কি নেওয়া জায়েজ হবে ?

1 Answer

0 votes
by (584,400 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلِّمْنِي دُعَاءً أَدْعُو بِهِ فِي صَلَاتِي قَالَ: «قُلْ اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عنْدك وارحمني إِنَّك أَنْت الغفور الرَّحِيم»

আবূ বকর আস্ সিদ্দীক্ব (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট নিবেদন জানালাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন একটি দু’আ বলে দিন যা আমি সালাতে (তাশাহুদের পর) পড়ব। উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ দুআ পড়বে,

’’আল্লা-হুমা ইন্নী যলামতু নাফসী যুলমান কাসীরা। ওয়ালা- ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা- আনতা। ফাগফিরলী মাগফিরাতাম্ মিন ’ইনদিকা ওয়ারহামনী। ইন্নাকা আনতাল গফূরুর রহীম।’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আমার নাফসের উপর অনেক যুলম করেছি। তুমি ছাড়া গুনাহ মাফ করার কেউ নেই। অতএব আমাকে তোমার পক্ষ থেকে মাফ করে দাও। আমার ওপর রহম কর। তুমিই ক্ষমাকারী ও রহমতকারী।)।
(বুখারী ৭৩৮৮, মুসলিম ২৭০৫, নাসায়ী ১৩০২, তিরমিযী ৩৫৩১, ইবনু মাজাহ্ ৩৮৩৫, আহমাদ ৮.মিশকাত ৯৪২।)

الدر المختار مع رد المحتار
 (523/1، ط: دار الفکر)
(ودعا)...
(بالأدعیۃ المذکورۃ فی القرآن والسنۃ. لا بما یشبه کلام الناس).
সারমর্মঃ-
নামাজের শেষ বৈঠকে কুরআন হাদীসে বর্ণিত দোয়া পাঠ করতে হবে। মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য পূর্ণ বাক্যে দোয়া করা যাবেনা।

ফরজ সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দুরুদে ইবরাহিম, দোয়া মাসুরা পড়ার পড় আরবীতে কুরআনে উল্লেখিত যেকোনো দোয়া পড়া যাবে।
এতে কোনো সমস্যা নেই।   
,
তবে মাসনুন দোয়া, কুরআন হাদীসের দোয়া,বা আরবীতে মাসনুন দোয়ার অনুরুপ দোয়া ব্যতিত কোনো দোয়া করা যাবেনা। কোনো দুনিয়াবি দোয়া করা যাবেনা। 
,
শরীয়তের বিধান হলো দুনিয়াবি দোয়া করলে নামাজ ভেঙে যায়।

দুনিয়াবি দোয়াঃ যেটা মানুষের কাছে থেকেও পাওয়া যায়,যেমন হে আল্লাহ আমাকে কাপড় দাও,বিবাহ দাও,এক লক্ষ টাকা দাও ইত্যাদি। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১০৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন

إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ»

নিশ্চয় এ নামায; এতে মানুষের মুখে প্রচলিত কথা বলা উচিত নয়। নিশ্চয় এটি তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন তিলাওয়াতের স্থান। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৩৭] 

قال العلامۃ التہانوي تحتہ: دل الحدیث علی أنہ لا یجوز في الصلاۃ شيء من کلام الناس، فتفرع علیہ أن الدعاء أیضاً إذا کان یشبہ کلامہم لا یجوز، وہو قول أبي حنیفۃ وأصحابہ وطاؤس وإبراہیم النخعي۔ (کذا في فتح الباري ۲؍۲۶۶، إعلاء السنن ۳؍۱۷۲ رقم: ۸۹۳ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
থানবি রহঃ বলেন উক্ত হাদীস দালালত করে যে নামাজের ভিতর দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা জায়েজ নেই।সুতরাং দুনিয়াবি দোয়া যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে,সেটি বলাও জায়েজ নেই।    

আরো জানুনঃ- 

ফরজ,সুন্নত,নফল যেকোনো নামাজের ক্ষেত্রে আত্তাহিয়াতু, দরুদ,দোয়ায়ে মাসূরার পর  আপনি কুরআন হাদিসে বর্ণিত দোয়া পড়ে কেউ যদি একাধিক মুনাজাত মূলক দোয়া পাঠ করতে চায়,সেক্ষেত্রে পারবে। এর কোনো লিমিট নেই।

তবে শর্ত হলো কুরআন হাদীসে বর্ণিত দোয়া হতে হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ফরজ, নফল ইত্যাদি নামাজের রুকু ও সিজদার তাসবীহ এর পর এবং দুয়া মাসুরার জায়গায় উপরোক্ত দোয়াগুলো করা যাবে।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
হ্যাঁ, এভাবে দুয়া করা যাবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে আমরা মূল মাসয়ালা জেনে নেইঃ-

গোসলের পূর্বে ওযু করা মাসনূন, এটা  হাদিস থেকে সাব্যস্ত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আমল এবং গোসলের পরে ওযু না করা প্রমাণিত, তাই সুন্নাত পদ্ধতি হল আগে ওযু করা। গোসলের পরে নয়।

কেউ যদি গোসলের পরপরই ওযু করে তবে তা মাকরূহ এবং কেউ যদি কোনো ইবাদত না করে কিছুক্ষণ পর ওযু করে তবে তা মাকরূহ নয়, বরং তা অবশ্যই সুন্নাতের পরিপন্থী।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
যতদূর জেনেছি,তাতে উক্ত বইয়ে শরীয়াহ বিরোধী কোনো লেখা নেই।
সুতরাং উক্ত বই পড়া যাবে।

আপনার দৃষ্টিতে শরীয়াহ বিরোধী কোনো কিছু পেলে জানাবেন,অসঙ্গত কোনো স্থান পেলে সেই স্থান পাশ কাটিয়ে যাবেন।

(০৫)
প্রশ্নে উল্লেখিত অর্থ হারাম।

বিস্তারিত জানুনঃ-  https://ifatwa.info/14063/

গরিব মিসকিন এবং মাদ্রাসার লিল্লাহ ফান্ডে উক্ত যাকাত দেওয়া যাবে, তবে মসজিদে উক্ত টাকা দেওয়া যাবে না।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (3 points)
২ নং প্রশ্নের উত্তরের ব্যাপারে আরও একটু বিশদ বিশ্লেষণ জানতে চাচ্ছি:

ঐদিন পাকিস্তানের জনপ্রিয় আলেম 'মুফতী তারিক মাস'উদ' এর একটি বয়ানে শুনলাম, উলামায়ে কেরাম নাকি ধন/সম্পদ/মাল চেয়ে দোয়া করতে নিরুৎসাহিত করেছেন। 

এই ব্যাপারে আপনাদের মতামত জানাবেন। 
আমি আরো ভেবেছিলাম, সবাইকে বলবো, এইভাবে দোয়া করতে।
কারণ, মুসলমান যখন দ্বীনদার হবে ও আল্লাহর কাছে বরকতময় কোটি টাকা চাইবে, তাহলে উক্ত মুসলমান এর দ্বারা অসংখ্য গরিব মুসলমান, এমনকি অমুসলমানও উপকৃত হবে, যদি আল্লাহ সত্যি সত্যি দোয়া কবুল করে ঐ মুসলমানকে বরকতময় কোটি টাকা দেন। 

একটু সুন্দর করে ব্যাখ্যা করবেন প্লিজ। 
একটা হচ্ছে: এমন দোয়া করা যাবে। 
আর একটা হচ্ছে: এমন দোয়া না করা উত্তম। 

কোনটা ?  

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...