ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব:-
https://ifatwa.info/52273/
নং ফাতাওয়ায়
আমরা বলেছি যে, শরীয়তের বিধান মতে নামাজের শেষ বৈঠকে দরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাছুরা পড়া সুন্নাত। আর সুন্নাত ছেড়ে দেওয়ার দ্বারা নামাজ
হয়ে যায়,
সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব
হয়না। কিন্তু ছওয়াব কিছুটা কম হয়।
যদি কেহ ইচ্ছাকৃত
ভাবে জেনে বুঝে সুন্নাত ছেড়ে দেয় বা সুন্নাত দেওয়াকে নিজের অভ্যাস বানায়, তাহলে সে গুনাহগার হবে।
হাদীস শরীফে
এসেছেঃ
أَخْبَرَنَا
هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدَةَ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ
زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، أَنَّ عَائِشَةَ، قَالَتْ
كُنَّا نُعِدُّ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سِوَاكَهُ وَطَهُورَهُ
فَيَبْعَثُهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لِمَا شَاءَ أَنْ يَبْعَثَهُ مِنَ اللَّيْلِ
فَيَسْتَاكُ وَيَتَوَضَّأُ وَيُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لاَ يَجْلِسُ فِيهِنَّ
إِلاَّ عِنْدَ الثَّامِنَةِ وَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيُصَلِّي عَلَى نَبِيِّهِ صلى
الله عليه وسلم وَيَدْعُو بَيْنَهُنَّ وَلاَ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا ثُمَّ يُصَلِّي
التَّاسِعَةَ وَيَقْعُدُ وَذَكَرَ كَلِمَةً نَحْوَهَا وَيَحْمَدُ اللَّهَ
وَيُصَلِّي عَلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم وَيَدْعُو ثُمَّ يُسَلِّمُ
تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ وَهُوَ قَاعِدٌ .
হারুন ইবনু
ইসহাক (রহঃ) ... সা'দ ইবনু হিশাম (রাঃ)
থেকে বর্ণিত যে, আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য মিসওয়াক
এবং উযুর পানি তৈরী করে রাখতাম। রাত্রের যে অংশে তাকে জাগ্রত করার আল্লাহ তা'আলার ইচ্ছা তিনি সে অংশে তাকে জাগ্রত করে দিতেন। (জাগ্রত হয়ে)
তিনি মিসওয়াক এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন ও নয় রাকআত সালাত আদায় করতেন। শুধুমাত্র
অষ্টম রাকআতে বসতেন এবং আল্লাহর প্রশংসা ও নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর
উপর দরুদ পাঠ করতেন এবং দোয়া করতেন, সালাম ফিরাতেন। অতঃপর নবম রাকআত আদায় করতেন এবং বসে যেতেন অনুরূপভাবে আল্লাহর যিকর
করতেন,
তার প্রশংসা করতেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর উপর দরুদ পাঠ করতেন ও দোয়া করতেন। তারপর এমনভাবে সালাম ফিরাতেন যা আমরা শুনতে পেতাম।
অতঃপর বসা অবস্থায় দু’রাকআত সালাত আদায় করতেন। [ ইবনে মাজাহ ১১৯১, মুসলিম,নাসায়ী ১৭২৩]
শেষ বৈঠকে তাশাহুদ
দুইবার পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। (আল-মুহিতুল বুরহানি : ২/৩১৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/১৭৭; ফাতাওয়া খানিয়া : ১/১২১; ফাতহুল কাদির : ১/৪৩৯)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে
বর্ণিত রয়েছে,
ولو كرره في
القعدة الثانية فلا سهو عليه، كذا في التبيين.
যদি কেউ দ্বিতীয়/শেষ বৈঠকে তাশাহুদকে
দুইবার পড়ে নেয়, তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু আসবে না।
(১/১২৭)
ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ
ইবনে
হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে
এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ،
وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد
زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال
تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم
অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি
মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না
করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি
তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে
এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক
পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে
পৌঁছাবে।
এর
সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি
বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا
قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্
পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ
عَلَى الْوَسْوَسَة
‘সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি
শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)
ইবনে
হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ،
وإن كان في النفس من التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে
সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি
মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা
১/১৪৯)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
জ্বী আপনার
নামাজ হয়ে গেছে, কোন সমস্যা হবে না। তবে ইচ্ছকৃত ভাবে
নামাজের শেষ বৈঠকে কোন দোয়া বা দরুদ একাধিক বার পড়া মাকরুহ।
প্রশ্নেল্লিখিত
সমস্যাগুলি হওয়ার মূল কারণ হলো ওয়াসওয়াসা । ওয়াসওয়াসা আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। সে
চায় মানুষকে পেরেশান ও অস্থির করে রাখতে যাতে সে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে মাশগুল
থাকতে না পারে। বিধায় এমন পরিস্থিতিতে আপনি হতাশ হবেন না। বরং ওয়াসওয়াসা থেকে
বাঁচতে উপরে উল্লেখিত আমলগুলি করুন এবং মানসিক রোগের কোন ভালো চিকিৎসকের নিকট
চিকিৎসা করুন।