আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
19 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)

আমি একটি পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাই:

ধরা যাক, একজন ব্যক্তির স্ত্রীর অনৈতিক কাজ এর কারণে স্ত্রীকে বাবার বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং স্বামী ১ সপ্তাহ পর স্ত্রীর প্রতি প্রথম তালাক দিয়েছে, নিশ্চিত জেনে, যে, স্ত্রী পবিত্র অবস্থায় আছে। স্বামী জানে না বা নিশ্চিত নয় যে, স্ত্রীর এর পরের মাসিক কখন শুরু হবে, অর্থাৎ, স্ত্রীর পবিত্র (তোহর) অবস্থায় থাকা বা না থাকার বিষয়ে তার কোনো তথ্য নেই। এই অবস্থায় দ্বিতীয় তালাক কীভাবে দেওয়া উচিত?

এছাড়া, যদি প্রথম তালাক দেওয়ার পর স্ত্রী মাসিক শুরু করে, এবং কয়েকদিন পর মাসিক শেষ হয়, তাহলে কি দ্বিতীয় তালাক ওই মাসিকের শেষ হওয়ার পর দেওয়া যাবে, তাতে কোনো সমস্যা হবে না?

এখন, দ্বিতীয় তালাক দিতে গিয়ে যদি দেরি হয়ে যায় এবং এমন একদিন দ্বিতীয় তালাক দেওয়া হয়, যেদিন স্ত্রীর মাসিকের পরবর্তী দিন শুরু হয়ে গিয়েছে, কিন্তু স্বামী নিশ্চিত হতে পারেনি স্ত্রীর তোহর অবস্থার বিষয়ে, এবং শুধু লজ্জার কারণে বা অন্য কোনো কারণে স্ত্রীর তোহর অবস্থার বিষয়টি জানার চেষ্টা করা হয়নি, তাহলে, এই তালাকটি কার্যকর হবে কি না এবং গুনাহ হবে কি না?

এখন, যদি দ্বিতীয় তালাক দেওয়া হয়ে যায়, তাহলে তৃতীয় তালাক কখন দেওয়া যাবে? কিছুদিন পর কি দেওয়া যাবে বা খুব কম সময়ে তৃতীয় তালাক দেওয়া যাবে কিনা?

 

1 Answer

0 votes
by (64,500 points)

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/183/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

তালাক আল্লাহর কাছে অত্যান্ত অপছন্দনীয় একটি জিনিষ।যেমন হাদিসের মধ্যে বর্ণিত আছে,

ابغض الحلال عند اللّٰه الطلاق

অর্থ- হালাল জিনিষ সমূহের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম হালাল জিনিষ হল আল্লাহর কাছে তলাক।

,

যখন একজন স্বামী তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দিল,তখন সে চুরান্ত পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। অন্য দিকে শরীয়ত তাকে তালাক দেওয়ার জন্য অত্যান্ত নির্ভুল ও সতর্কতামূলক পদ্ধতি বলে দিয়েছে।যাতে ভবিষ্যতে শরমিন্দা না হয় এবং আফসোস না করতে হয়।

,

তালাক দেয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হচ্ছে.......

প্রতি এমন তুহুরে টান্ডা মাথায় এক তালাক দেয়া, যে তুহরে এখন পর্যস্ত সহবাস বা মিলন হয়নি।

,

প্রথম শর্ত তুহরে তালাক দেয়া। প্রশ্ন হচ্ছে কেন? উত্তরঃ- যাতে করে উক্ত সন্দেহ দূরবিত হয়ে যায় যে, স্বামী হায়েয (সিরিয়াল, যা প্রাকৃতিগতভাবে এই সময় মহিলার কাছে যাওয়ার আগ্রহ কমে যায়, বিকৃতমস্তিষ্ক হলে ভিন্ন কথা ) এর কারণে স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ হ্রাসের ধরুন তালাক দিচ্ছে, বরং এ কথা বদ্ধমূল হয়ে যায় যে, স্বামী বাস্তবিক শরয়ী  প্রয়োজনেই তালাক দিচ্ছে।

,

দ্বিতীয় শর্ত এমন তুহরে তালাক দেয়া যাতে সহবাস হয় নাই ।প্রশ্ন হচ্ছে তবে কেন? উত্তরঃ- সোজা, এ কারনে শর্ত করা হয়েছে, যাতে করে ঐ সন্দেহ ও দূর হয়ে যায়, যে একবার সহবাসের ধরুন আগ্রহ কমে যাওয়ায়  স্বামী এখন তালাক দিচ্ছে।

,

তৃতীয় কথা হচ্ছে, শরীয়ত বলছে একসাথে এক তুহুরে তিন তালাক না দিয়ে বরং প্রতি তুহুরে এক তালাক দিতে,একারনে যে স্বামী স্ত্রীকে প্রতি তুহুরে তুহুরে এমন এক সময় তালাক দিবে যখন তারও স্ত্রী মিলনের চাহিদা থাকবে, সুতরাং এ চাহিদা  বিবেচনায় হয়তো সে তালাক থেকে বিরত থাকবে, এবং তালাকের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে স্ত্রীর প্রয়োজন বুঝতে পারবে।

,

কিন্তু এতকিছুর পরও যখন সে উক্ত স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছে, তার মানে  এটাই বুঝা যাচ্ছে যে, সে এখন আর ঐমহিলাকে জীবন সাথী হিসেবে চাচ্ছে না। হয়তো বাস্তবতায় মহিলাই নির্দোষ হতে পারে, এক্ষেত্রে সমস্ত গুনাহ স্বামীরই হবে, এবং শেষ বিচারে তাকেই জবাবদিহি করতে হবে।

,

এত কঠিন ধাপ পার হওয়ার পর যখন স্বামী ঐ স্ত্রীকে তালাক প্রদান করবে,তখন স্বামী-স্ত্রী একজন অন্যজনের জন্য চিরস্থায়ী হারাম হয়ে যাবে, তাদের আর একসাথে বসবাস কখনো হালাল হবেনা। তবে হ্যাঁ ঘটনাক্রমে যদি ঐ মহিলার অন্য কোথাও বিয়ে হয়, এবং সেই স্বামী মারা যায়,অথবা সেই স্বামী তাকে তালাক দিয়ে দেয়,আর প্রথম স্বামীর সাথে সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি হয়,এবং আল্লাহ তা'য়ালা কর্তৃত নির্ধিরিত সীমারেখা লঙ্গনের আসংকা না থাকে তাহলে এমতাবস্তায় আবার তারা দু-জন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

,

তবে টাকার বিনিময়ে দ্বিতীয় কোনো স্বামী খোজ করে তার কাছে বিয়ে বসা,কিছুক্ষণ পর তার কাছ থেকে তালাক নিয়ে আবার প্রথম স্বামীর কাছে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে না, এ পদ্ধতি সম্পূর্ণ হারামওঅবৈধ ।

,

ইসলাম ঐ তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে এ পরামর্শ দিচ্ছে যে, এখন যেহেতু ঐ স্বামীর সাথে আপনার বসবাস হারাম, তাই আপনি অন্য কোথাও বিয়ে করে নেন, বিশেষ করে সে যখন আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সাথে আবার বসবাস কখনো সুখকর হবে না। তাই আপনার জন্য উচিৎ অন্য কোথাও বিয়ে করা নেয়া, কেননা সম্পর্কে একবার ফাঠল ধরলে তা আর কখনো নিরঙ্কুশভাবে জোড়া লাগবেনা, পরবর্তীতে সমস্যা লেগেই থাকবে।তাছাড়া আপনি কেন এমন এক ব্যক্তির কাছে আবার চলে যাবেন, যে আপনাকে কিছুকাল পূর্বে লাঞ্চনার সাথে ছুড়ে মেরেছিল, আপনার প্রতি একটুও রহম করে নি। আপনার কি মান-অভিমান, লাজ-লজ্জা বলতে কিছু নেই?????

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

,

একজন স্বামীর সাধারণত তার স্ত্রীর মাসিকের দিন শুরু ও শেষ হওয়ার তারিখ সম্পর্কে জানা থাকে। তাই তিনি সেই অনুযায়ী (শরীয়ত সম্মত কারণে) তালাক দিতে পারেন।

উল্লেখ্য যে, কোনো মহিলা যদি অনৈতিক বা যিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত থাকে তাহলে তার স্বামীর জন্য অধিকার আছে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেওয়া। সে চাইলে একসাথে তিন তালাকও দিয়ে দিতে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (2 points)

সংক্ষিপ্ত উত্তর দিলেন, যেইটা পুরোপুরি বুঝে আসে নি। আমি আবারো প্রশ্ন করছি:

স্ত্রী শুরু থেকেই (১ম তালাকের পূর্ব থেকেই) বাবার বাড়িতে অবস্থান করছে। যেইটা জানতে চাচ্ছি:

১) দ্বিতীয় তালাক দিতে গিয়ে যদি দেরি হয়ে যায় এবং এমন একদিন দ্বিতীয় তালাক দেওয়া হয়, যেদিন স্ত্রীর মাসিকের পরবর্তী দিন শুরু হয়ে গিয়েছে, কিন্তু স্বামী নিশ্চিত হতে পারেনি স্ত্রীর তোহর অবস্থার বিষয়ে (লজ্জার কারণে বা অন্য কোনো কারণে স্ত্রীর তোহর অবস্থার বিষয়টি জানার চেষ্টা করা হয়নি), তাহলে, এই তালাকটি কার্যকর হবে কি না এবং গুনাহ হবে কি না?

২) এখন, যদি দ্বিতীয় তালাক দেওয়া হয়ে যায় (ধরে নিলাম হায়েজ শুরু হয়ে গিয়েছে, সেই অবস্থায়), তাহলে তৃতীয় তালাক কখন দেওয়া যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...