জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
হজ্জ,ওমরাহ অবস্থায় হায়েজ চলে আসলে তওয়াফ ব্যাতিত ওমরাহ সমস্ত কাজ করা যাবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا نَذْكُرُ إِلَّا الْحَجَّ فَلَمَّا كُنَّا بِسَرِفَ طَمِثْتُ فَدَخَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا أَبْكِي فَقَالَ: «لَعَلَّكِ نَفِسْتِ؟» قُلْتُ: نَعَمْ قَالَ: «فَإِنَّ ذَلِكِ شَيْءٌ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ فَافْعَلِي مَا يَفْعَلُ الْحَاجُّ غَيْرَ أَنْ لَا تَطُوفِي بِالْبَيْتِ حَتَّى تَطْهُرِي»
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে (হজের উদ্দেশে) রওনা হলাম। তখন আমরা হজ্জ/হজ ছাড়া অন্য কিছুর (‘উমরার) তালবিয়াহ্ পড়তাম না। আমরা ‘সারিফ’ নামক স্থানে পৌঁছলে আমার ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেলো। এমন সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন। আমি হজ্জ/হজ করতে পারবো না বিধায় কাঁদছিলাম। (কাঁদতে দেখে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মনে হয় তোমার ঋতুস্রাব শুরু হয়েছে। আমি বললাম, হ্যাঁ! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা এমন বিষয় যা আল্লাহ তা‘আলা আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। তাই হাজীগণ যা করে তুমিও তা করতে থাকো, তবে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তুমি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ থেকে বিরত থাকো।
(বুখারী ৩০৫, মুসলিম ১২১১, আহমাদ ২৬৩৪৪.মিশকাত ২৫৭২।)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হায়েজ অবস্থায় এহরাম বাঁধা যাবে। তবে অবশ্যই ইহরামের পূর্বে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার পোষাক পরিধান করে নিবে। হায়েজ অবস্থায় যদি বাংলাদেশ থেকে উমরাহ এর জন্য রওনা হওয়া হয়, তখনো ইচ্ছা হলে নিজ বাসা থেকে ইহরাম বেধে বের হওয়া যাবে।
আরো জানুনঃ-
(০২)
হায়েজ নিফাস অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করা যাবে না।
সুতরাং হায়েজ অবস্থায় মসজিদুল হারাম ও নববীতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
উক্ত অবস্থাতে প্রবেশ করা জায়েজ হবেনা।
মসজিদুল নববিতে প্রবেশ না করে অন্য কোনো পথ দিয়ে রওজায় যাওয়ার সুযোগ হলে সেদিক দিয়ে গিয়ে রওজায় সালাম পৌঁছানো যাবে।
জাসরাহ বিনতু দিজাজাহ সূত্রে বর্ণিত।
قَالَ: حَدَّثَتْنِي جَسْرَةُ بِنْتُ دَجَاجَةَ قَالَتْ: سَمِعْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا تَقُولُ: جَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَوُجُوهُ بُيُوتِ أَصْحَابِهِ شَارِعَةٌ فِي الْمَسْجِدِ، فَقَالَ: «وَجِّهُوا هَذِهِ الْبُيُوتَ عَنِ الْمَسْجِدِ». ثُمَّ دَخَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَمْ يَصْنَعِ الْقَوْمُ شَيْئًا رَجَاءَ أَنْ تَنْزِلَ فِيهِمْ رُخْصَةٌ، فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ بَعْدُ فَقَالَ: «وَجِّهُوا هَذِهِ الْبُيُوتَ عَنِ الْمَسْجِدِ، فَإِنِّي لَا أُحِلُّ الْمَسْجِدَ لِحَائِضٍ وَلَا جُنُبٍ»
তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে দেখলেন, সহাবাদের ঘরের দরজা মসজিদের দিকে ফেরানো। (কেননা তারা মসজিদের ভিতর দিয়েই যাতায়াত করতেন)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এসব ঘরের দরজা মাসজিদ হতে অন্যদিকে ফিরিয়ে নাও। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় এসে দেখলেন, লোকেরা কিছুই করেননি, এ প্রত্যাশায় যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের ব্যাপারে কোন অনুমতি নাযিল হয় কিনা। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে তাদের আবারো বললেনঃ এসব ঘরের দরজা মাসজিদ হতে অন্যদিকে ফিরিয়ে নাও। কারণ ঋতুবতী মহিলা ও নাপাক ব্যক্তির জন্য মসজিদে যাতায়াত আমি হালাল মনে করি না।(সুনানে আবি-দাউদ-২৩২)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
সুতরাং হায়েজ অবস্থায় থাকলে আপনি পবিত্র হওয়ার আগ পর্যন্ত কাবা চত্ত্বরে যেতে পারবেননা।
(০৩)
আপনি ইহরাম বেধে থাকলে এহরামের সমস্ত নিয়ম আপনাকে মানতে হবে।
(০৪)
ইহরাম অবস্থায় চুল আচরানো যাবেনা। সাবান শ্যাম্পু ছাড়া গোসল করা যাবে। মাহরামের সামনে মাথায় কাপড় না রাখা যাবে
হযরত আয়েশা রা. থেকে বার্ণিত আছে, তিনি বলেন-
كَانَ الرُّكْبَانُ يَمُرُّونَ بِنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُحْرِمَاتٌ، فَإِذَا حَاذَوْا بِنَا سَدَلَتْ إِحْدَانَا جِلْبَابَهَا مِنْ رَأْسِهَا عَلَى وَجْهِهَا فَإِذَا جَاوَزُونَا كَشَفْنَاهُ.
ইহরাম অবস্থায় আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। লোকেরা যখন আমাদের পাশ দিয়ে যেত তখন আমরা আমাদের চাদর মাথায় সামনে ঝুলিয়ে দিতাম। আর চলে যাওয়ার পর তা সরিয়ে ফেলতাম। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৮৩৩)
★চুল আচরালে তিনটি চুল পড়ে গেলে সেক্ষেত্রে এক মুষ্ঠি খাবার বা সমপরিমাণ টাকা দান করতে হয়। তিন চুল হতে বেশি পড়ে গেলে সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা দান করতে হয়।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০৫)
আগে সব কাজ শেষ করবেন তওয়াফ ব্যাতিত।
হায়েজ ভালো হওয়ার পর তওয়াফ করবেন।
(০৬)
না,এমনটি করা যাবেনা।
এমনটি করলে সেক্ষেত্রে পুনরায় মিকাতে গিয়ে ইহরাম বেধে উমরাহ এর নিয়ত করতে হবে।
এ সংক্রান্ত জানুনঃ-
(০৭)
উমরার ইহরামের নিয়ত
اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اُرِيْدُ الْعُمْرَةَ فَيَسِّرْهَا لِىْ وَتَقَبَّلْهَا مِنِّىْ
‘হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টির জন্য উমরার নিয়ত করছি। আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে কবূল করে নিন।’ নিয়ত আরবীতে করা জরুরী নয়।
আপনি এমতাবস্থায় তওয়াফ ব্যাতিত উমরাহ এর সব কাজ শেষ করবেন।
হায়েজ থেকে ভালো হওয়ার পর ফরজ গোসল করে তওয়াফ করবেন।
আরো জানুনঃ-
(০৮)
যদি আপনি হোটেল থেকে উমরাহ এর নিয়ত করে উমরাহ করেন,সেক্ষেত্রে আপনাকে দম দিতে হবে।
(০৯)
হায়েজ অবস্থায় মসজিদে হারামের সীমানার বাইরে থেকে আপনি কাবা দেখতে পারবেন। সমস্যা নেই।
আপনি হোটেল রুমে দৈনন্দিন ইবাদত গুলি করবেন।
(১০)
এখানে কেনো সদকাহ করতে হবে? আর তার সাথে সেই চাদরের বা কি সম্পর্ক? সেটি কমেন্ট বক্সে স্পষ্ট করলে ভালো হয়।